নির্বাচন কমিশনকে হুমকি দিতে ঘেরাও কর্মসূচি: নজরুল ইসলাম খান
Published: 21st, May 2025 GMT
ইশরাক হোসেন প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, “নির্বাচনী ট্রাইবুনাল রায় দেওয়ার পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যিনি মেয়র পদে দায়িত্ব পেয়েছেন তাকে প্রশাসনিক ক্ষমতায় দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যে নির্বাচন কমিশনকে এই সরকার নিয়োগ দিয়েছে, সেই নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করলেও তাদের হুমকি দেওয়ার জন্য ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি ভালো লক্ষণ না।”
তিনি বলেন, “দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসাবে আমরা বিভিন্ন সময় অন্তবর্তী সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেছি। আমরা আমাদের মতামত ব্যক্ত করেছি। কিন্তু, অনেক কথাই কার্যকর হচ্ছে না।”
বুধবার (২১ মে) দুপুর ২টায় ময়মনসিংহ নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে বিভাগীয় বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ফের আসিফ মাহমুদ-মাজফুজ আলমের পদত্যাগ চাইলেন ইশরাক
বিএনপি নেতার অডিও ভাইরাল
‘১৭ বছর খাইনি, এখন খাব’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা যারা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ছিলাম, তারা সবাই মিলে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দায়িত্ব দিয়েছি। বিগত সাড়ে ৯ মাসে ধরে তারা দায়িত্বে আছে। এখনো আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সাফল্য বা ব্যর্থতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলিনি। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারে থেকে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ভালো লক্ষণ নয়। এটা আমাদের ভালো লাগে না।”
ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে আসতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি যখন সংস্কারের কথা বলেছে, তখন বাংলাদেশের কোনো দল সংস্কারের প্রস্তাব করেনি। তখন অনেক দলের জন্মও হয়নি। কিন্তু, তারা এখন আলোচনা করে বিএনপি সংস্কারের পক্ষে না। তাদের জানতে হবে, বিএনপির জন্ম হয়েছে রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য।”
“বর্তমান অন্তবর্তী সরকার যতগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছে তার সব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফায় আছে। আগামী দিনে বিএনপি জনগণের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্ব পেলে এসব সংস্কার করবে। বিএনপি থেকে বলা হয়েছে, আমাদের থেকে ভালো কোনো প্রস্তাব কেউ করলে বিএনপি তা সাদরে গ্রহণ করবে”, যোগ করেন তিনি।
সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে দেশের লাখ লাখ মানুষ জেল-জুলুম সহ্য করে যে ক্ষেত্রে প্রস্তুত করেছিল, সেই ক্ষেত্রে জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও এখনো আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য পূরণে হয়নি। আংশিক দাবি আদায় হয়েছে। এখন প্রয়োজন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। যেখানে আইন প্রণয়ন করে সংস্কার করা যায়। স্থানীয় সরকার গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার মাধ্যম হতে পারে না। আমরা বলেছি- ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়া হোক। নির্বাচন কমিশন বলছে- জুনের মধ্যে তারা প্রস্তুত। বিএনপির ৩১ দফায় রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের কথা বলা হয়েছে।”
বিএনপির কর্মী হিসাবে গর্ববোধ করার অনেক কিছু আছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বিএনপির কর্মী হিসাবে গর্ব করার অনেক কিছু আছে। বিচার বিভাগ স্বাধীন করেছে বিএনপি। মিডিয়ার স্বাধীনতা অবাধ করেছে। রুদ্ধ অর্থনীতিকে মুক্ত অর্থনীতিতে পরিণত করেছে বিএনপি। খাদ্য উৎপাদনের সূচনা, পোষাক ও রেমিটেন্সের সূচনা বিএনপির হাত ধরে। পল্লীবিদ্যুৎ, সমুদ্রে মাছ আহরণ, নারী শিক্ষা, উপবৃত্তি, শিক্ষার জন্য খাদ্য, সমবায় প্রতিষ্ঠা, গ্রাম সরকার গঠন সব করেছে বিএনপি।”
তিনি বলেন, “দেশের প্রতি জেলা, মহানগর এবং প্রতিটি গ্রামে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। নতুন সদস্য বুঝেশুনে করতে হবে। জানতে হবে- তারা বিএনপির নীতি আদর্শ বিশ্বাস করে কী-না। যিনি নতুন সদস্য হতে চান- তিনি কী বিপদে পড়ে এসেছেন, না-কী ক্ষমতার লোভে আসছেন তাও বিবেচনায় নিতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন সদস্য করার আগে পুরাতনদের মতামত নিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো.
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন এবং আবু ওয়াহাব আকন্দের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধক্ষ মো. রাশিদুজ্জামান মিল্লাত। আরো বক্তব্য রাখেন- ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম এনায়েত উল্লাহ কালাম, সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলমসহ নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর এবং শেরপুর জেলা বিএনপির নেতারা।
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ নজর ল ইসল ম খ ন ব এনপ র স সদস য স র সদস য প রস ত আম দ র কম ট র সরক র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
সার্চ দুনিয়ার নতুন দিগন্ত জিইও: দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কী প্
ইন্টারনেট সার্চ দুনিয়ায় চলছে নীরব এক বিপ্লব। তথ্য খোঁজার ধরন বদলে যাচ্ছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত। আগে যেখানে গুগলে উচ্চ র্যাংকিং মানেই ছিল সাফল্য, এখন সেই জায়গা নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-নির্ভর সার্চ টুল।
সার্চ জগতের নতুন চ্যালেঞ্জ
চ্যাটজিপিটি, গুগল জেমিনি, মাইক্রোসফট কপিলট কিংবা পারপ্লেক্সিটি এআই-এগুলো আর শুধু সার্চ ইঞ্জিন নয়, বরং উত্তর তৈরিকারক ইঞ্জিন। ব্যবহারকারী এখন শুধু ‘লিংক’ নয়, বরং সরাসরি উত্তর পেতে চায়। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই এসেছে নতুন এক কৌশল- জিইও বা জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
জিইও কী?
জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আপনার ওয়েবসাইট ও কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো হয় যাতে এআই-চালিত সার্চ ইঞ্জিন সহজেই আপনার তথ্য চিনতে, বুঝতে এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে সেটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
আগে ব্র্যান্ডগুলোর ফোকাস ছিল গুগলের প্রথম পাতায় জায়গা করে নেওয়া। কিন্তু এখন গুরুত্ব পাচ্ছে- চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি-এর উত্তরে আপনার ব্র্যান্ডের নাম আসছে কি না!
এসইও বনাম জিইও: সার্চ দুনিয়ার নতুন যুগের পালাবদল
অনেকেই এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এবং জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এক মনে করেন, কিন্তু এদের মধ্যে মূলত লক্ষ্য ও কৌশল ভিন্ন। এসইও হচ্ছে পুরোনো পদ্ধতি, অন্যদিকে জিইও হচ্ছে নতুন পদ্ধতি।
* মূল লক্ষ্য
এসইও: সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক বাড়ানো
জিইও: এআই সার্চের উত্তরে দৃশ্যমান হওয়া
* কাজের ধরন
এসইও: কিওয়ার্ড ও ব্যাকলিংক ভিত্তিক
জিইও: কনটেক্সট, প্রাসঙ্গিকতা ও ব্র্যান্ড অথরিটি নির্ভর
* ফলাফল
এসইও: ক্লিক ও ট্রাফিক বৃদ্ধি
জিইও: ব্র্যান্ড উল্লেখ ও আস্থা বৃদ্ধি
* প্ল্যাটফর্ম
এসইও: গুগল, বিং ইত্যাদি সার্চ ইঞ্জিন
জিইও: চ্যাটজিপিটি, জেমিনি, পারপ্লেক্সিটি, এসজিই ইত্যাদি এআই সার্চ
এসইও এখনও গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ভবিষ্যতের সার্চ ইকোসিস্টেমে জিইও সমান অপরিহার্য হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশি ব্যবসার জন্য জিইও-এর গুরুত্ব
বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিক্ষা, ট্রাভেল, স্বাস্থ্যসেবা, ই-কমার্স, রিয়েল এস্টেট- প্রায় প্রতিটি খাতেই ব্যবসা অনলাইনে আরো দৃশ্যমান হতে চাচ্ছে। কিন্তু বদলেছে মানুষের সার্চ করার ধরন। এখন তারা শুধু গুগলে সার্চ করেই সন্তুষ্ট থাকছে না, তারা এআই-চালিত সার্চ টুলগুলো যেমন চ্যাটজিপিটি, জেমিনি বা পারপ্লেক্সিটি-এর মাধ্যমে সরাসরি উত্তর খুঁজছে।
গার্টনারের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে প্রচলিত সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ ভলিউম প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যাবে- কারণ ব্যবহারকারীরা দ্রুতই এআই-চালিত সার্চ ও চ্যাটবটের দিকে ঝুঁকছে। (তথ্যসূত্র: Gartner, “Search Engine Volume Will Drop 25% by 2026, Due to AI Chatbots and Other Virtual Agents)
তবে এই পরিবর্তনের প্রভাব ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন, কেউ চ্যাটজিপিটি-তে লিখল, ‘ঢাকায় সেরা অ্যাকাউন্টিং ফার্ম কোনটি?’ যদি আপনার কোম্পানির নাম বা কনটেন্ট এআই-এর তৈরি উত্তরে না আসে, তাহলে সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট ও ব্যবসার সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে।
মূলত এখানেই জিইও-এর গুরুত্ব উঠে আসে। জিইও ব্যবহার করে কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো যায় যাতে এআই সার্চ সিস্টেম আপনার ব্র্যান্ডকে সহজেই চিনতে পারে, বুঝতে পারে এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যবসা যদি এআই-এর দুনিয়ায় দৃশ্যমান থাকতে চায়, জিইও’র সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এখন আর বিকল্প নয়- এটি একান্ত প্রয়োজন।
জিইও’র জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (জিইও) কোনো একদিনে শেখার মতো বিষয় না- এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যেখানে ব্যবসাগুলোকে নিজেদের কনটেন্ট, উপস্থিতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা এআই-বান্ধব করে গড়ে তুলতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে দেখা যাক, কীভাবে আপনি জিইও’র পথে প্রস্তুত হতে পারবেন।
১. অনলাইন উপস্থিতি যাচাই করুন
জিইও’র প্রথম ধাপ হলো আপনার ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের বর্তমান অনলাইন উপস্থিতি যাচাই করা। চ্যাটজিপিটি বা পারপ্লেক্সিটি-এর মতো এআই-চালিত সার্চ টুলে সার্চ দিন ‘বাংলাদেশে সেরা (আপনার ইন্ডাস্ট্রি)-এর কোম্পানিগুলো কোনগুলো?’
যদি সার্চের উত্তরে আপনার নাম না আসে, বোঝা যাবে যে আপনার এআই-দৃশ্যমানতা এখনও সীমিত। এই ক্ষেত্রে আপনাকে জিইও অনুযায়ী কনটেন্ট ও অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে কাজ শুরু করতে হবে।
২. বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করুন
জেনারেটিভ এআই সার্চ সিস্টেম সেই উৎসকেই অগ্রাধিকার দেয়, যা নির্ভরযোগ্য ও যাচাইযোগ্য। তাই আপনার ওয়েবসাইটে ব্র্যান্ড, টিম, যোগাযোগ ও রিভিউসহ সব তথ্য সম্পূর্ণ ও স্বচ্ছ রাখুন।
গুগল বিজনেস প্রোফাইল নিয়মিত আপডেট করুন- ঠিকানা, সময়, পোস্ট ও রিভিউসহ।
বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম ও ব্লগে ব্র্যান্ডের উল্লেখ বাড়ান।
E-E-A-T (Experience, Expertise, Authoritativeness, Trustworthiness) বজায় রাখুন।
এভাবেই এআই ও ব্যবহারকারীর কাছে আপনার ব্র্যান্ড একটি বিশ্বাসযোগ্য সোর্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে- যা জিইও সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
৩. কনভারসেশনাল কনটেন্ট লিখুন
এআই সার্চ এখন ব্যবহারকারীর প্রশ্নভিত্তিক অনুসন্ধানকে গুরুত্ব দেয়। তাই আপনার কনটেন্ট তৈরি করুন এমনভাবে যেন এটি প্রাকৃতিক প্রশ্ন ও কথোপকথনের মতো শোনায়। উদাহরণ: ‘Where can I find a trusted IELTS coaching center in Dhaka?’ ‘Where can I apply for a blue-collar job?’ এ ধরনের কনটেন্ট এআই-এর চোখে আরো সহজে বোঝার মতো হয় এবং ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর হিসেবে উল্লেখযোগ্য।
৪. বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকুন
এআই শুধু ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে না। এটি ফেসবুক, ইউটিউব, লিংকডইন, কোরা এবং অন্যান্য সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। তাই বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করা জিইও-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫. এসইও এবং জিইও একসাথে ব্যবহার করুন
ডিজিটাল দুনিয়ায় এখন শুধু সার্চ র্যাংকই যথেষ্ট নয়। এসইও যেমন গুগল সার্চে আপনার কনটেন্টকে শীর্ষে নিয়ে আসে, তেমনি নতুন যুগের জিইও (জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) আপনার ব্র্যান্ডকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সার্চে আরো দৃশ্যমান করে তোলে।
এসইও মূলত গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের অবস্থান উন্নত করে, আর জিইও শেখায়- কীভাবে এআই মডেলগুলো আপনার ব্র্যান্ডকে চিনবে, উল্লেখ করবে এবং বিশ্বাস করবে।
দুটি কৌশল একসাথে প্রয়োগ করলে অনলাইন উপস্থিতি অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। একদিকে সার্চে দৃশ্যমানতা বাড়ে, অন্যদিকে এআই-নির্ভর প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আপনার ব্র্যান্ডের নাম উঠে আসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
ভবিষ্যতের সার্চ জগতে টিকে থাকতে হলে এখনই সময়- এসইও এবং জিইও-কে একসাথে কাজে লাগানোর।
বাংলাদেশের ব্যবসার জন্য জিইও’র নতুন সম্ভাবনা
জিইও বাংলাদেশের ব্যবসাগুলোর জন্য হতে পারে এক গেম চেঞ্জার। আগে যেখানে অনলাইন দৃশ্যমানতা মানেই ছিল গুগলে র্যাংক করা, এখন সেটি ধীরে ধীরে স্থান ছেড়ে দিচ্ছে এআই সার্চ ভিজিবিলিটি–কে।
আজ যদি কোনো ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি-তে জিজ্ঞেস করে-
‘বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য অনলাইন বই বিক্রির সাইট কোনটা?’
অথবা, ‘ঢাকায় সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি কারা?’
যদি আপনার ব্র্যান্ডের নাম সেই উত্তরে উঠে আসে, সেটিই হবে প্রকৃত দৃশ্যমানতা- শুধু ক্লিক নয়, বরং আস্থা, প্রভাব ও ব্র্যান্ড অথরিটি–এর প্রতিফলন।
বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন শত শত নতুন অনলাইন ব্যবসা শুরু হচ্ছে- ই–কমার্স, এডুকেশন, হেলথটেক, রিয়েল এস্টেট, ফাইন্যান্স, এমনকি ছোট স্টার্টআপরাও দ্রুত ডিজিটাল হচ্ছে। কিন্তু একইসঙ্গে প্রতিযোগিতাও বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণে।
এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু এসইও নয়, জিইও–কেন্দ্রিক কৌশলও অপরিহার্য।
জিইও’র ভবিষ্যৎ
খুব শিগগিরই এআই সার্চ টেক্সটের বাইরে গিয়ে ভয়েস, ভিডিও ও ইমেজ কনটেন্ট থেকেও উত্তর তৈরি করবে। তখন জিইও কেবল ওয়েবসাইট নয়, বরং ভিডিও, পডকাস্ট, সোশ্যাল প্রোফাইল, নিউজ রিপোর্ট- সবকিছুর মধ্যেই প্রভাব ফেলবে।
তাই এখন থেকেই যারা জিইও-কেন্দ্রিক কৌশল গ্রহণ করবে, ভবিষ্যতের সার্চ রেভোলিউশনে নেতৃত্ব দেবে তারাই।
উপসংহার
জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (জিইও) শুধু নতুন ট্রেন্ড নয়- এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের পরবর্তী অধ্যায়।
এসইও যেমন আপনাকে সার্চ রেজাল্টে নিয়ে যায়, জিইও তেমনি আপনাকে নিয়ে যাবে এআই–এর উত্তরে।
‘ভবিষ্যতের সার্চে র্যাংক নয়, ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতাই হবে সাফল্যের আসল মাপকাঠি।’
লেখক: হেড অব ওয়েব অ্যানালাইসিস অ্যান্ড এসইও ডিরেক্টর, ইন্টেলেক আইটি এলএলসি (ইউএসএ অ্যান্ড বাংলাদেশ)
ঢাকা/ফিরোজ