৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে ‘আলী’ সিনেমা। কানের স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রতিযোগিতা বিভাগে এটি বাংলাদেশের প্রথম অংশগ্রহণ। এটি পরিচালনা করেছেন আদনান আল রাজীব। সিনেমাটির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তরুণ অভিনেতা আল আমীন।

শুক্রবার উৎসবের পালে দ্য ফেস্টিভ্যাল ভবনের পাশে ক্লৌডে ডেবাসি থিয়েটারে হয় সিনেমাটির প্রদর্শনী। যেখানে সিনেমার সকল কলাকুশলী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা আল আমীনও। প্রথমবার অভিনয়, এবং প্রথম সিনেমা নিয়ে কানের মতো উৎসবে আসা। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে–

আজ কানে আপনার সিনেমা ‘আলী’ প্রদর্শিত হলো। অনুভূতিটা কেমন?
সত্যি বলতে, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি যে থিয়েটারে অস্কারজয়ী সিনেমা দেখেছি, সেখানে আমার সিনেমা চলেছে– এটি স্বপ্নের মতো। আমি কাঁপছিলাম যেন। সিনেমাটি শেষ হওয়ার পর সবাই দাঁড়িয়ে টানা দশ মিনিট অভাবনীয় করতালির মাধ্যমে যে অনুভূতি দেখালেন তা আমার জন্য সত্যিই অভূতপূর্ব দৃশ্য। এই দৃশ্য কোনোদিন ভুলব না। এখানে আলী এতটা সম্মান পাবে তা না দেখলে বিশ্বাসযোগ্য হতো না। পরে সবাই সেলফি তুললেন। কাছে এসে সবাই ভালোলাগার কথাও জানালেন। 

প্রথমবার বিশ্ব সিনেমার এমন মর্যাদাপূর্ণ আসরে আপনার অংশগ্রহণ। বিষয়টি আপনার কেমন লাগছে?
আমার মনে হচ্ছে ঘোরের মধ্যে আছি। মাঝে মধ্যে অবিশ্বাস্য লাগছিল। গতকাল যখন নিজের সিনেমা প্রদর্শিত হলো, সবাই বাহবা দিলেন তখন নিজের ওপর বহুগুণ আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। আসলে আনন্দ আর প্রাপ্তি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এখন যেমন লাগছে এ প্রতিক্রিয়াটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। 

আলী সিনেমাটা কেমন? কী গল্প বলা হয়েছে?
উপকূলীয় একটি শহরের গল্প, যেখানে গান গাইতে দেওয়া হয় না। সেখানে এক কিশোর গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উপকূল ছেড়ে শহরে যেতে চায়। এ গান গাওয়া নিয়ে রয়েছে এক রহস্য। 

সিনেমাটিতে আপনার যুক্ত হওয়ার গল্প জানতে চাই?
আমি নোয়াখালীতে থাকি। এই দ্বৈত কণ্ঠের গান গাইতে পারি আমি। এই গানের ভিডিও দেখে আলী টিমের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে আগ্রহ পাইনি। তাই ভাবছিলাম অভিনয় করব না। পরে পরিচালকের ফেসবুক প্রোফাইল চাইলে দেখি আদনান আল রাজীব। সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে গেলাম। এটিই ছিল আমার প্রথম অভিনয়। এখানেই শেষ নয়। এ সিনেমার মাধ্যমে আমার আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বেড়েছে। আমার বিশ্বাস অভিনয়ে কিছু করতে পারব। 

কানে এসে কী শিখলেন বা নতুন কী দেখলেন?
এখানে এসে বুঝেছি, গল্পটাই আসল। আপনি যদি সৎভাবে নিজের সমাজ, আপনার অভিজ্ঞতা, আপনার মানুষকে তুলে ধরতে পারেন, বিশ্ব সেটি বোঝে। ভাষা কোনো বাধা নয়। আজকের প্রদর্শনীতে ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান থেকে দর্শক এসেছিলেন, সবাই বললেন, ‘তোমার গল্প ছুঁয়ে গেছে।’ এটি আমার জীবনের বড় পাওয়া। দেশে ফিরে একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার কাজ শুরু করব। নোয়াখালীর ভাষা, মাটি, মানুষ–সব থাকবে সেখানে। আমি চাই, আমাদের গ্রামগঞ্জের ছেলেমেয়েরা সিনেমায় নিজেদের দেখুক, নিজেদের গল্প শুনুক। শুভকামনা রইলো, আল আমিন। আপনার এই যাত্রা আরও বহু তরুণকে সাহস দেবে।

ধন্যবাদ। আমি কৃতজ্ঞ সবার ভালোবাসা আর প্রেরণার জন্য। আমি চাই, এই কান শুধু আমার নয়, আমাদের সবার হোক। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব প রদর শ আপন র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় ২০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের আশা

জ্যৈষ্ঠকে বলা হয় মধুমাস। নানা রকম সুস্বাদু ফল ফলে এ মাসে। তাই, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু প্রভৃতি। কবি জসীম উদ্দীনও তার ‘মামার বাড়ি’ কবিতায় লিখেছেন, ‘ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।’ 

মধুমাসে আমের ব্যাপক ফলন হয় দেশের অন্যতম সুস্বাদু আম উৎপাদনকারী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। এ জেলার আমের কদর রয়েছে দেশ ও দেশের বাইরে। 

স্থানীয় চাষি ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় চলতি মৌসুমে ২০০ কোটির বেশি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা আছে। 

আম পাড়ার পঞ্জিকা অনুযায়ী, পহেলা জ্যৈষ্ঠ (১৫ মে) থেকে আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম পাহরণের সময় শুরু হয়েছে। সে মোতাবেক আনুষ্ঠানিকভাবে এ মৌসুমের আম পাড়া উৎসব উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক জহুরল ইসলাম। এর পরপরই চুয়াডাঙ্গার আমচাষি, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা দড়ি ও লগি নিয়ে বাগানে-বাগানে মেতে উঠেছেন আম পাড়ার উৎসবে। 

আমচাষিরা জানিয়েছেন, তীব্র গরমের কারণে এবার আমবাগানে অতিরিক্ত সেচ দিতে হয়েছে। তাতে খরচ বেশি হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যদি আমের ক্ষতি না হয়, তাহলে সবাই লাভবান হবেন।

এ বছর ২২ মে থেকে হিমসাগর, ২৮ মে থেকে ল্যাংড়া, ৫ জুন থেকে আম্রপালি (বারি আম-৩), ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ২৮ জুন থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরু হবে। 

কিছু কিছু আমচাষি বলছেন, আঁটির আম পাড়ার সময় ২০ বৈশাখ শুরু হলে সবচেয়ে ভালো হয়।

কেউ যেন অপরিপক্ব আম বাজারজাত করতে না পারেন এবং চাষি ও ব্যবসয়ীরা যেন সুষ্ঠুভাবে আম বাজারজাত করতে পারেন, সেজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম। তিনি চুয়াডাঙ্গার সুস্বাদু আম সংগ্রহের জন্য ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

চুয়াডাঙ্গায় এ বছর ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এ জেলায় প্রায় ১২ হাজার কৃষক আম চাষের সঙ্গে জড়িত। আশা করা হচ্ছে, হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিক টন হিসেবে এ বছর ৩৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে। গড়ে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দর হিসেবে এ বছর ২০৭ কোটি টাকার আম বেচা-কেনা হতে পারে। 

চুয়াডাঙ্গা মার্কেটিং অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেছেন, গত বছরের মতো চলতি বছরেও চুয়াডাঙ্গার সুস্বাদু আম বিভিন্ন জেলায় মার্কেটিং করার জন্য জেলা টু জেলা কানেকটিভিটি বাড়ানো হয়েছে, যাতে কৃষকরা তাদের আম বাজারজাত করতে পারেন।

চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোর বাগানে-বাগানে চলছে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করার প্রস্তুতি। কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা অন্যান্য বছরের তুলন বেশি লাভবান হবেন।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১০ ব্যান্ড নিয়ে প্রথমবার নজরুল কনসার্ট-অ্যালবাম
  • চাহিদার মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা জল
  • উৎসবে সাশ্রয়ী কেনাকাটায় ভরসা বিকাশ পেমেন্ট
  • ট্রফি নিয়ে উল্লাস মোহামেডানের
  • ‘জাহ্নবীকে প্রকাশ্যে অপমান করা হয়েছে’
  • সিলেটে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে শহীদ দুই ভাইয়ের কাহিনি নিয়ে মালজোড়া গানের আসর
  • চুয়াডাঙ্গায় ২০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের আশা
  • ইউক্রেনের সেনা বিতাড়নের পর প্রথমবার কুরস্কে পুতিন
  • সেলিম আল দীনকে নিয়ে ভবিষ্যতে আমার চিন্তা প্রকাশ করব : সলিমুল্লাহ খান