ঢাকায় এক বর্ণিল পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের (বিডিএফ) ডায়ালজিক-২০২৫ এর স্কুল-কলেজ অধ্যায়। দুই দিনব্যাপী এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দেশের ৪০টি স্কুল ও কলেজের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিকরা। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিএফ-এর সভাপতি প্লাবন গঙ্গোপাধ্যায়, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড.

মনিরুজ্জামান, এবং বিডিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক জিহাদ আল মেহেদী। 

এ বছরের প্রতিযোগিতায় একাধিক ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা প্রদান করা হয়েছে। ওপেন ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ এবং রানার্সআপ হয়েছে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ। স্কুল ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ হয়েছে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। 

বিতর্কের বিকেন্দ্রীকরণ এবং নতুন কণ্ঠস্বরকে এগিয়ে নিতে বিডিএফ-এর অন্তর্ভুক্তিমূলক লক্ষ্যের বাস্তবায়নে এবছরের ডায়ালজিকে নবিশ ক্যাটাগরিতে বিশেষ আয়োজন করা হয়। নবিশ ক্যাটাগরিটি নতুন ও উদীয়মান দলগুলোকে জাতীয় পর্যায়ে মেধা প্রদর্শনের সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে চালু করা হয় — যেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরিদপুর জিলা স্কুল। এ ক্যাটাগরিতে টুর্নামেন্টের শ্রেষ্ঠবক্তা হন সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের মুশফিকুর রহমান সিফাত।

অনুষ্ঠানে প্লাবন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ডায়ালজিক কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি একটি আন্দোলন। এটি এমন এক ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথ যেখানে তরুণরা কঠিন প্রশ্ন এড়িয়ে যায় না, বরং সম্মান, সাহস ও চিন্তার মাধ্যমে উত্তর দেয় এবং নাগরিক দায়িত্ববোধকে নতুনভাবে আবিষ্কার করে। আমাদের লক্ষ্য শুধু দক্ষ বিতার্কিক তৈরি করা নয়, বরং ভালো মানুষ ও সচেতন নাগরিক গড়ে তোলা।’

প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে তরুণদের মধ্যে যে বৌদ্ধিক শৃঙ্খলা দেখা গেছে তা অনন্য। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমে আরও বিনিয়োগ করতে হবে যাতে তরুণদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠে।’

জিহাদ আল মেহেদী বলেন, ‘তরুণদের নেতৃত্বে পরিচালিত উদ্যোগ হিসেবে ডায়ালজিক প্রমাণ করছে যে বিতর্ক কেবল প্রতিযোগিতা নয়, এটি একটি নাগরিক আন্দোলন।’

এক্সপ্রেস ইভেন্টস-এর নির্বাহী পরিচালক উৎপল কর্মকার বলেন, ‘তরুণদের এই মঞ্চ দেওয়া হলে তারা শুধু কথা বলে না- তারা নেতৃত্ব দেয়। এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব তর ক অন ষ ঠ ন ব ড এফ

এছাড়াও পড়ুন:

কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাদ্দাম মালকে লিগ্যাল নোটিশ

আঞ্চলিক ভাষায় কনটেন্ট তৈরি করে দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা পাওয়া কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাদ্দাম মালকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সহসম্পাদক রবিউল আউয়াল অন্তর নামের এক নেতার পক্ষে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আইনজীবী জেড এম কাওসার বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ লিগ্যাল নোটিশ দেন।

জানা যায়, সম্প্রতি সাদ্দাম মাল অভিনীত ‘রেষা রেষি’ নামের একটি নাটকে ২ মিনিটের একটি খণ্ডচিত্রের মাধ্যমে তার চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাকে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই নোটিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, নোটিশদাতা দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড ও আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রজপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তদের হাতে তিনি অপহৃত হন। এই ঘটনা নিয়ে কলাপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অপহরণের ঘটনার পর কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কিছু দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রবিউল আউয়াল অন্তর একাধিক মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়া ‘রেষা রেষি’ নামক একটি নাটকে ২ মিনিটের একটি খণ্ডচিত্রের মাধ্যমে তার চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে নাট্যাংশটিকে ‘আপত্তিকর’ উল্লেখ করে বলা হয়। এ কারণে নোটিশ দাতার মানহানিসহ ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে ক্ষতি হয়েছে। অভিযোগপত্রে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব না পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এই নোটিশে কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়া নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের কথা উল্লেখ করা হলেও সেটি কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়ায় প্রচারিত হয়নি বলে জানান চ্যানেলটির পরিচালক শুভ কবির। তিনি জানান, ‘সাদ্দাম মাল কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়ার কেউ নয়, এছাড়াও যে নাটকটি ঘিরে অভিযোগ উঠেছে সে নাটকটি আমাদের কুয়াকাটা মাল্টিমিডিয়ায় প্রচার হয়নি। অভিযোগকারী রবিউল আউয়াল অন্তরকে বিষয়টি তারা জানিয়েছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানাতে চাইলে কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাদ্দাম মাল জানান, তারা কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে টার্গেট করে গল্প তৈরি করেন না। নাটকের গল্প হয় কাল্পনিক, কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য কাউকে ইস্যু করে কিছু করেন না। তাদের অভিনয়গুলো যদি কারো জীবনের সঙ্গে মিলে যায়, কেউ যদি মনে করে সে অপরাধী তাহলে তারতো ভালো হয়ে যাওয়া উচিত। নাটকে সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরা হয়।

তিনি আরও জানান, তাদের গল্পের মাধ্যমে সমাজের স্থিতিশীলতা যাতে বজায় থাকে সে চেষ্টা সবসময়ই করেন এবং সুস্থ বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী ছাত্রঅধিকারের নেতা রবিউল আউয়াল অন্তর বলেন, ‘ওই ভিডিও ক্লিপে আমার অথবা কোনো স্থান বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ নেই। তবে আমি গুম হয়েছিলাম সেটার তদন্ত চলমান কিন্তু তারা নাটকে বলেছে আমি আত্মগোপন ছিলাম।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ