শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখায় গুরুত্ব দিন
Published: 25th, May 2025 GMT
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দৃষ্টিনন্দন’ ভবন নির্মাণ নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। রাজধানী ঢাকায় একটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিশুদের জন্য আরও সুন্দর, নিরাপদ ও আধুনিক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে কোটি কোটি টাকার এই প্রকল্প সময়োপযোগী। কিন্তু প্রকল্পের ধীরগতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। বিষয়টি হতাশাজনক।
হাজারীবাগ বালিকা ও বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদাহরণ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় পরিকল্পনার ঘাটতি কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিদ্যালয়ের কাজ শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি একটি স্থানে স্থানান্তরের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এক কিলোমিটার দূরে পাঠানো হচ্ছে শিশুদের, যাদের বেশির ভাগই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। যাতায়াতে সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং অনেক অভিভাবক বাধ্য হচ্ছেন সন্তানদের স্কুল থেকে তুলে নিতে। পাশাপাশি বা কাছাকাছি স্কুলগুলোতে একসঙ্গে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত একেবারে অপরিণামদর্শী, তা বলতেই হয়।
শুধু হাজারীবাগ নয়, একাধিক এলাকায় একই ধরনের পরিস্থিতি। যেসব স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণ শুরু হয়েছে, সেখানে বিকল্প শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য ভাড়া করা ভবনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। একদিকে সরকারি অর্থে কোটি কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়ন, অন্যদিকে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী বিকল্পের চিন্তা না থাকা—এটি প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনার সুস্পষ্ট অভাবেরই প্রতিফলন। এর ফলে শিশুর শিক্ষার অধিকার হরণের ঘটনা ঘটছে, সেটিও প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সঙ্গে শুরু থেকে যুক্ত সবার কাছেই গুরুত্বহীন থেকে গেছে। এটি কোনোভাবেই মানা যায় না।
শিক্ষাবিদেরাও বলছেন, ভবন নির্মাণের আগে ভালো করে পরিকল্পনা গ্রহণ, এলাকা অনুযায়ী বিকল্প স্থান নির্ধারণ এবং প্রয়োজনে পৃথক বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল।
আমাদের আহ্বান, এখনো যেসব বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি, সেসব ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। অস্থায়ীভাবে ভাড়া করা ভবনে পাঠদান চালু রাখা হোক। একই এলাকায় একাধিক বিদ্যালয়ে একসঙ্গে কাজ শুরু না করে ধাপে ধাপে করা হোক, যাতে শিক্ষার প্রবাহ বিঘ্নিত না হয়।
শিশুরা যেন বিদ্যালয়ের দূরত্ব ও যাতায়াতের খরচের কারণে শিক্ষা থেকে ছিটকে না পড়ে—এই ন্যূনতম নিশ্চয়তা সরকারকে দিতেই হবে। কারণ, একটি দৃষ্টিনন্দন ভবনের চেয়ে একটি শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ প রকল প ব কল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
টুয়েলভের ঈদ আয়োজনে রাজকীয় ছোঁয়া
দেশের সকল নামকরা ব্র্যান্ডের ঈদ আয়োজনে সবসময়ই থাকে আভিজাত্যের ছোঁয়া। দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে ফ্যাশন সচেতনতার ট্রেন্ডি দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে সবাই উন্মুখ হয়ে থাকেন। ঈদুল আযহার বর্ণিল আয়োজনকে সামনে দেশের অত্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড টুয়েলভও হেঁটেছে সে পথে।
ব্র্যান্ডটির এবারের থিম- ‘ঈদে রাজকীয় ছোঁয়া, ফ্যাশনে মুগল গ্লোয়া। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার অনন্য মিশেলে টুয়েলভ এনেছে ট্র্যাডিশনাল ও ট্রেন্ডি কালেকশন, যেখানে মুঘল থিম, সফট ফ্লোরাল প্রিন্ট এবং প্যাস্টেল প্যালেট মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক রাজকীয় আধুনিকতা।
গরমের কথা মাথায় রেখে এবারের কালেকশনে ব্যবহার করা হয়েছে হালকা রংয়ের, আরামদায়ক কাপড় যেমন: কটন, ভিসকস, মসলিন মিক্সড, লিনেন-ব্লেন্ড, বিশেষ করে পুরুষদের পাঞ্জাবিতে, লাইট কটন আর জ্যাকার্ড ফ্যাব্রিককে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফ্যাশনের পাশাপাশি আরামও যেন ঈদের সাজে গুরুত্ব পায়, সেটাই তাদের মূল লক্ষ্য।
সামার ফ্রেন্ডলি কালার যেমন প্যাস্টেল, অফ-হোয়াইট, পিচ ও মিন্ট রঙ মিশিয়ে এবারের কালেকশন সাজানো হয়েছে। পোশাকের বুননে রাখা হয়েছে এয়ার টেক্সচার, যাতে এই পোশাক পরার পরও শরীর সহজে শ্বাস নিতে পারে। ডিজাইনে রয়েছে লুজ ফিট সিলুয়েট আর ফ্লোওয়ে কাট, যেন এই পোশাক পরে ঈদে স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারেন।
কাপড়ের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির স্টিচিংয়েও একটু ভিন্নতা রয়েছে। ডাবল স্টিচিং টেকসই করার জন্য ফ্ল্যাট লক সেঁলাই ব্যবহৃত হয়েছে, যাতে স্কিন-ফ্রেন্ডলি হয়। নারীদের কালেকশনে আছে জরি ও সিকুইনের হ্যান্ড ফিনিশ টাচ, যেখানে প্রয়োজন মেশিন এমব্রয়ডারি সেখানেও হাতের কাজকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পুরুষদের পাঞ্জাবিতে মিনিমাল এবং ক্লাসি পিন টাক বা জ্যাকার্ড কাটওয়ার্কের সেঁলাই।
মুলত ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ফ্যাশন সচেতন তরুণ-তরুণীদের টার্গেট করে ফ্যাশন হাউসটির পোশাক তৈরি করা হয়েছে। নারীদের কালেকশনে রয়েছে টিনেজার থেকে কর্মজীবী নারীদের উপযোগী ডিজাইন, আর পুরুষদের জন্য কলেজপড়ুয়া থেকে শুরু করে কর্পোরেট পেশাজীবীদের উপযোগী পাঞ্জাবি ও কাবলি।
এবারের ঈদের কালেকশনে নারীদের জন্য রয়েছে কুর্তি, সেলওয়ার কামিজ সেট লং গাউন, টু পিস,কুর্তি-প্যান্ট সেট। অন্যদিকে, পুরুষদের জন্য রয়েছে ক্লাসিক পাঞ্জাবি, প্রিমিয়াম পাঞ্জাবি ও কাবলি সেট। এছাড়া কম্বো কালেকশন হিসেবে রয়েছে কাপল ম্যাচিং সেট।