বিশ্বের শুধু এক জায়গায় আছে ড্রাগনস ব্লাড ট্রি
Published: 25th, May 2025 GMT
একটি গাছ, যার রক্ত লাল। মাথা দেখতে অনেকটা ছাতার মতো, গঠন যেন কোনো গ্রহান্তরের জীবের মতো। এই প্রজাতির গাছের নাম ‘ড্রাগনস ব্লাড ট্রি’। দেখে মনে হয় যেন রূপকথার পাতা থেকে নেমে আসা কোনো চরিত্র। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ প্রজাতির গাছ এখন টিকে থাকার কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছে। ফুরিয়ে আসছে তার শ্বাস নেওয়ার সুযোগ।
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, আগ্রাসী পশুপালন আর দশকজুড়ে চলমান যুদ্ধ এই প্রজাতির গাছকে বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছে। এই বিলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিতে পড়েছে একটি গোটা দ্বীপের বাস্তুতন্ত্র, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি। তবে ধূলিঝড় আর যুদ্ধের দেশ ইয়েমেনের সোকোত্রা দ্বীপে গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখতে জীবনপণ লড়াই করছেন একদল মানুষ।
আরব সাগরের ওপর দিয়ে ধেয়ে আসা ধুলাময় বাতাসে উঁচু মালভূমিতে নিজের গোড়ালির চেয়ে নিচু এক চারাকে আগলে রেখেছেন সিনা কায়বানি। তিনি ও তাঁর পরিবার একটি নার্সারি পরিচালনার মাধ্যমে বিপন্ন এই প্রজাতির গাছ রক্ষায় একটানা লড়াই করে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য এসব গাছের মরে যাওয়া নিজের সন্তানকে হারানোর মতো।’
একসময় সোকোত্রা দ্বীপজুড়ে মাশরুমের মতো ছায়া দেওয়া মাথা আর কাঠের ভেতরে বইতে থাকা রক্তলাল রসের জন্য বিখ্যাত এই প্রজাতির গাছ ছড়িয়ে ছিল।
হর্ন অব আফ্রিকা থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সোকোত্রাকে গ্যালাপাগোস দ্বীপের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এটা এক নিঃসঙ্গ অথচ মোহময় দ্বীপ। এখানে ৮২৫ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। যার এক-তৃতীয়াংশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এর জীববৈচিত্র্য এতটাই বিস্ময়কর যে ২০০৮ সালে ইউনেসকো একে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের মর্যাদা দিয়েছিল। পাথর ভেদ করে উঠে আসা ‘বোতল গাছের’ ফুলে ওঠা কাণ্ড যেন শিল্পীর হাতে গড়া ভাস্কর্য। আরও আছে ফ্র্যাঙ্কিনসেন্স গাছ, যাদের প্যাঁচানো ডালপালা আকাশের দিকে এমনভাবে উঠে যায় যে দেখলে মনে হয়, প্রার্থনায় মেলে ধরা দুটি হাত।
তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানুষের কল্পনাকে সবচেয়ে বেশি আলোড়িত করে ‘ড্রাগনস ব্লাড ট্রি’। এটা যেন এক অপার্থিব গাছ। ড.
সোকোত্রা দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য স্থানীয় গাইড রাখা বাধ্যতামূলক এবং দ্বীপের বাসিন্দাদের পরিচালিত ক্যাম্পে থাকার নিয়মও রয়েছে। অর্থনৈতিক সুবিধা থেকে স্থানীয়রা যেন বঞ্চিত না হন, সে কারণেই এ ব্যবস্থা। কিন্তু এই প্রজাতির গাছ যদি হারিয়ে যায়, তাহলে দ্বীপবাসীর জীবিকার একমাত্র ভরসাটিও হারিয়ে যাবে। এ কারণে গাছগুলো শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয়, এরা সোকোত্রার আত্মা।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘মাতৃমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ এক্লাম্পসিয়া’
মাতৃমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ এক্লাম্পসিয়া। তাই এ বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন। এ রোগ প্রতিরোধে সব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখতে হবে।
শনিবার (২৪ মে) সোহরাওয়ার্দি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশ্ব প্রি-এক্লাম্পসিয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
হাসপাতালের অবস ও গাইনি বিভাগের ফিটোমেটারনাল মেডিসিন ইউনিটের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। এ উপলক্ষে সেমিনার, সভা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘প্রি-এক্লাম্পসিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন, জানুন’।
বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ফারজানা সোহাইলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, সোহরাওয়ার্দি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাকি মোহাম্মদ জাকিউল আলম।
অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন, অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি ফারহানা দেওয়ান, জেস্টোসিস সোসাইটির (যারা গর্ভকালে হাইপারটেনশন নিয়ে কাজ করেন) সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম, ওজিএসবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সালমা রউফ প্রমুখ।
প্রি-এক্লাম্পসিয়া গর্ভবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যার মারাত্মক প্রতিক্রিয়া, যা চিকিৎসার অবহেলায় মা ও শিশুর জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটা মাতৃমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ঢাকা/মেহেদী