৮০ শতাংশ নারী ক্যানসার শনাক্তকরণ পরীক্ষার বাইরে
Published: 25th, May 2025 GMT
দেশের নারীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসারে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ নারী এই দুই ধরনের ক্যানসার শনাক্ত পরীক্ষার বাইরে আছেন। নতুন গবেষণা বলছে, জরায়ুমুখের ক্যানসারের জন্য দায়ী সব ধরনের ভাইরাসকে মাথায় রেখেই টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।
আজ রোববার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচির তথ্য ও ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে পাঁচটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ৪৬ জন বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
সরকারি অর্থায়নে সারা দেশে ‘ইলেকট্রনিক ডেটা ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচি’ নামে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজিক্যাল বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুন্নেসা তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, দেশে ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারী আছেন তিন কোটি। এঁদের প্রত্যেকের জরায়ুমুখ ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার শনাক্তের পরীক্ষা হওয়া উচিত। কিন্তু ২০০৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই দুই ধরনের ক্যানসার শনাক্তের পরীক্ষা হয়েছে ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭ জনের। এর অর্থ ওই বয়সী প্রায় ৮০ শতাংশ নারী জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার শনাক্তের পরীক্ষার বাইরে আছেন। এ পর্যস্ত পরীক্ষা হওয়া ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ নারীর শরীরে ক্যানসারের পূর্বাবস্থা বা ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে।
অধ্যাপক আশরাফুন্নেসা বলেন, ক্যানসার শনাক্তে গ্রাম পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত নেটওয়ার্ক আছে। এর সঙ্গে স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবারকল্যাণ সহকারী, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি), নার্স, চিকিৎসকসহ ২৪ হাজারের বেশি প্রশিক্ষিত জনবল জড়িত। শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি নারী আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কমিউনিটি ক্লিনিকে। ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের ক্যানসার শনাক্তের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধন করা হয়। পরীক্ষা করা সব নারীর একটি করে নিবন্ধন নম্বরও দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে একাধিক উপস্থাপনায় বলা হয় নারীদের মধ্যে বেশ কয়েক ধরনের ক্যানসার দেখা যায়। এর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার সবচেয়ে বেশি। ক্যানসারবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবোকনের ২০২০ সালের পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে বলা হয়, ৬৮ হাজার ৭০০ নারী ক্যানসার রোগীর মধ্যে ১৯ শতাংশ স্তন ক্যানসারে, ১২ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যানসারে, ১১ দশমিক ১ শতাংশ খাদ্যনালির ক্যানসারে, ৭ দশমিক ৮ শতাংশ পিত্তাশয়ের ক্যানসারে, ৬ দশমিক ৭ শতাংশমুখ ও ঠোঁটের ক্যানসারে এবং ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী আরও কয়েক ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত।
চিকিৎসকেরা জানান, জরায়ুমুখ ক্যানসার পরীক্ষার সময় প্রত্যেক নারীর স্তন ক্যানসারও পরীক্ষা করা হয়। জরায়ুমুখ ক্যানসার শনাক্তে দেশে চার ধরনের পদ্ধতি প্রচলিত আছে: ভায়া, প্যাপসমেয়ার, ফ্লুইড বেজড সাইটোলজি ও এইচপিভি-ডিএনএ টেস্ট। এর মধ্যে ভায়া পরীক্ষা সারা দেশে বিনা মূল্যে করা হয়।
টিকা নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে হবে
জরায়ুমুখ ক্যানসার হয় মূলত ভাইরাস থেকে। এটি হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি নামে পরিচিত। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এ রকম ভাইরাস আছে মোট ১৪টি। এর মধ্যে এইচপিভি১৬ এবং এইচপিভি১৮ নামের ভাইরাস ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যানসারের কারণ। বাকি ১২টি ভাইরাসকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। টিকাও দেওয়া হয় এইচপিভি১৬ ও এইচপিভি১৮ এর জন্য। কিন্তু দেশে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য ভাইরাসগুলোর কারণে জরায়ুমুখ ক্যানসার বেশি হচ্ছে।
৩ হাজার ৮৫৬ জন নারীকে নিয়ে এই নতুন গবেষণাটি করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনোলজিক্যাল অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিরিন আক্তার বেগম। তিনি এইচপিভি ডিএনএ পরীক্ষাপদ্ধতি ব্যবহার করেন। তিনি জানান, এই পরীক্ষাটি ব্যয়বহুল। প্রতিটি পরীক্ষায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয়।
গবেষণা ফলাফল উপস্থাপনের সময় অধ্যাপক শিরিন আক্তার বলেন, পরীক্ষায় ১৩৮ জনের বা ৩ দশমিক ৬ শতাংশ নারীর ক্যানসারের পূর্বাবস্থা বা ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ জনের (১.
অনুষ্ঠান শেষে শিরিন আক্তার বেগম প্রথম আলোকে বলেন, এইচপিভি ডিএনএ পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এই পরীক্ষার খরচ কমানোর ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যদিকে টিকা দেওয়ার ব্যাপারেও আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শাহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সারোয়ার বারী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সায়েবা আক্তার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আবুল কালাম আজাদ, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ক ষ অন ষ ঠ ন পর ক ষ র এইচপ ভ র জন য দশম ক সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জ যুবদলের মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের উদ্যোগে মৎসপোনা অবমুক্তকরন ও বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ১০নং ওয়ার্ডস্থ চিত্তরঞ্জন পুকুরে মৎসপোনা অবমুক্তকরন ও পুকুর পাড়ে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আরমান হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ।
এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন কমল, যুগ্ম, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সজিব, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ,ওয়াদুদ ভূইয়া সাগর, মোঃ আরমান হোসেন, সাইফুল ইসলাম আপন, আশিকুর রহমান অনি, বাদশা খান, শাহীন শরীফ, ফয়েজ উল্লাহ সজল, ফয়সাল আহমেদ, আরিফ খান, হাবিবুর রহমান মাসুদ, মাহফুজুর রহমান ফয়সাল,সিদ্ধিরগঞ্জ যুবদল নেতা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু,আরাফাত রহমান মো. মিন্টু, রাশেদুল ইসলাম, সজল হোসেন, খায়রুল ইসলাম মৃদুলসহ যুবদলের নেতৃবৃন্দ।