চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের দেওয়া হলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
Published: 26th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে দেওয়া হলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ‘দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও আন্দোলন’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এই হুঁশিয়ারি দেন। রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মানিক মিয়া হলে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে দেশ বাঁচাতে গিয়ে সবাই গণতন্ত্রের প্রশ্নে একমত। আমরা চাই ড.
অন্তর্বর্তী সরকার নয়, নির্বাচিত সরকার মিয়ানমারে করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘সবকিছু করার ম্যান্ডেট অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। তাদের কাজ হলো (জুলাই-আগস্টের) গণহত্যার বিচার করা, আহতদের সুচিকিৎসা দেওয়া, হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন দেওয়া। বন্দর ইজারা দেওয়া, এনবিআর ভাঙা তাদের কাজ নয়।’ দ্রুত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণারও দাবি জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সরকার প্রয়োজন হলে দেশের মেধাবী কর্মকর্তা দিয়ে বন্দর পরিচালনা করতে পারে।’ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপেরও (পথনকশা) দাবি করেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান ও দেশ বাঁচাও, বন্দর বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহাদাৎ হোসেন সেলিম বলেন, বন্দর নিয়ে দেশের নিরাপত্তা ও জাতির স্বার্থ দেখতে হবে। বন্দরের শুল্কের (ট্যারিফ) বিভিন্ন ভাগ আছে। বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে সেই দায়িত্ব দিলে তারা নিজেদের মতো শুল্ক নির্ধারণ করবে। নতুনভাবে এখানে একটা টাকাও বিনিয়োগের সুযোগ নেই। কারণ, চট্টগ্রাম বন্দর এমনিতেই আয়বর্ধক প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে আহ্বান জানান আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি সরকারকে বন্দরের বিষয়ে গণশুনানি করারও পরামর্শ দেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘ভবিষ্যতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সরকার চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে ফেরত না এলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।’
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, আমজনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের মঙ্গলের জন্যই দেশকে দ্রুত নির্বাচনের ট্র্যাকে ওঠাতে হবে: ফখরুল
দেশের মঙ্গলের জন্যই দেশকে দ্রুত নির্বাচনের ট্র্যাকে ওঠাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস ও অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদকে দেখতে যান মির্জা ফখরুল। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে একটি মহলের বিরোধিতা নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি যদি কেউ থাকে, সেটা হচ্ছে বিএনপি এবং সবচেয়ে বেশি লড়াই যদি করে গণতন্ত্রের জন্য, সেটা বিএনপি। বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বিএনপি নিয়ে এসেছে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং পরবর্তীকালে সংসদীয় গণতন্ত্র। দেশটাকে সবাই মিলে বাঁচাতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে, দেশকে সঠিক ট্র্যাকে ওঠানো এবং যত দ্রুত সেটাকে ওঠানো যাবে, ততই মঙ্গল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যাঁরা মনে করেন যে নির্বাচন প্রয়োজন নেই, আমার মনে হয় তাঁরা আবার চিন্তা করবেন। নির্বাচন প্রয়োজন জনগণের জন্য। একটা নির্বাচিত সরকার দরকার, যে সরকারের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক থাকবে। সে কারণেই আমরা বলছি যে সংস্কারগুলো, সেই সংস্কারে আমরা অংশ নিচ্ছি। প্রত্যেকটি সংস্কারের দাবি আমরাই তুলেছি। সুতরাং সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো সাংঘর্ষিকতা নেই…দুটি একসঙ্গে চলবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন-হত্যা-গুম-খুনের সবচেয়ে বড় ভিকটিম আমাদের দল বিএনপি। আমার নিজেরও ১১২টা মামলা এবং ১৩ বার জেলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আমরা সব সময় মনে করি, যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদের পক্ষে থাকবে, যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করবে…বিশেষ করে আওয়ামী লীগ কাজ করেছে, তাদের প্রতিটি ব্যক্তির শাস্তি হওয়া প্রয়োজন…তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত এবং শাস্তি হওয়া উচিত।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা, তিনি এককভাবে, আমি মনে করি দ্য রেসপন্সিবল ফর দ্য কিলিং অব দ্য থাউজেন্ডস অব পিপল। তাঁর বিচার শুরু হয়েছে। আমরা আশাবাদী তাঁর এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা গণহত্যার সঙ্গে এবং এই ফ্যাসিস্ট আক্রমণের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের প্রত্যেকেরই বিচার হবে। এবং সেই হিসেবে দল যদি আইনের আওতায় নিয়ে এসে, দলও যদি দেখা যায়, দলগত হিসেবে তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’