ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানের হামলা থেকে বাদ গেল না ক্যাফেও, গাজায় এক দিনে নিহত ৯৫
Published: 1st, July 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সাগরপাড়ের একটি ক্যাফেতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সঙ্গে হামলা করা হয়েছে বিদ্যালয়, হাসপাতাল ও খাবার বিতরণের কেন্দ্রেও। গতকাল সোমবারের এসব হামলায় অন্তত ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
শুধু গাজা নগরী ও উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে চালানো হামলাগুলোতে অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা হয় গাজা নগরীর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল–বাকা ক্যাফেটেরিয়ায়। সাগরপাড়ের এ ক্যাফেতে নিহত হয়েছেন ৩৯ জন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন মানুষ।
ক্যাফেতে হামলায় নিহত ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন সাংবাদিক ইসমাইল আবু হাতাবও। সেখানে জড়ো হওয়া নারী ও শিশুদের অনেকের প্রাণ গেছে।
শুধু গাজা নগরী ও উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে চালানো হামলাগুলোতে অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা হয় গাজা নগরীর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়ায়। সাগরপাড়ের এ ক্যাফেতে নিহত হয়েছেন ৩৯ জন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন মানুষ।একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো উড়ে এসে ক্যাফেটিতে হামলা চালায়। এতে ক্যাফে ধ্বংস হয়ে গেছে। মাটিতে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াহিয়া শরিফ আল–জাজিরাকে বলেন, ‘সেখানে আমরা মানুষদের ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পেয়েছি। এ জায়গা কোনো কিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। না রাজনীতির সঙ্গে, না সামরিকভাবে। তখন ক্যাফেটি জন্মদিনের এক আয়োজনে শিশুসহ সাধারণ মানুষে ভরা ছিল।’
আরও পড়ুনগাজার শিশুদের এসব ছবি হৃদয় ভেঙে দেয়২৯ জুন ২০২৫আল–জাজিরার হানি মাহমুদ গাজা নগরী থেকে বলেন, পূর্বসতর্কতা ছাড়াই ক্যাফেটিতে হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৭২ জন নিহত২১ ঘণ্টা আগেএকই দিন গাজা নগরীর ইয়াফা বিদ্যালয়েও হামলা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে শত শত ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলার আগে বিদ্যালয়টি থেকে পালিয়ে যাওয়া হামাদা আবু জারাদেহ আল–জাজিরাকে জানান, উদ্বাস্তুদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত বিদ্যালয়টি খালি করতে মাত্র পাঁচ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল।
গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর–এল–বালাহ এলাকায় আল–আকসা হাসপাতাল প্রাঙ্গণেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এখানেও হাজারো উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনগাজায় অনাহারে ৪ বছরের শিশুর মৃত্যু, তীব্র অপুষ্টিতে ৭০ হাজারের বেশি২৫ মে ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত২৮ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ন ন হত ন আরও
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।