আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট সার্টিফিকেট, লাইসেন্স, পারমিট অনলাইনে ইস্যু করা মঙ্গলবার (১ জুলাই) থেকে বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১ জুলাই হতে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য চালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে ১৯টি সংস্থার সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যু করা বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে এসব বিষয় কার্যকর হবে। বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ড মূলত একটি অনলাইন প্লাটফর্ম, যা ব্যবহার করে একজন আমদানিকারক-রপ্তানিকারক পণ্য খালাসের জন্য প্রযোজ্য সব ধরনের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের জন্য অনলাইনে আবেদন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন।

এনবিআর জানায়, এসব সাটিফিকেট, লাইসেন্স পারমিট (সিএলপি) গ্রহণের আগে বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএ) ব্যবহার করে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ড সিস্টেমে (bswnbr.

gov.bd) নিবন্ধন করতে হবে। এই সিস্টেম ব্যবহারের ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে যে সকল সুবিধা পওয়া যাবে সেগুলো হলো: একটি কমন প্লাটফর্মে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সার্টিফিকেট, লাইসেন্স এবং পারমিট সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার মাধ্যমে যুগপৎভাবে অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে। সরকারি কাজে ব্যক্তিগত যোগযোগ (হিউম্যান ইন্টারেকশন) না থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে। দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

এনবিআর আরো জানায়, বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ড ব্যবহার করে ইতোমধ্যে ৩ লাখ ৮৯ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি)  স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে এক ঘণ্টার কম সময়ে ৮৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ, এক দিনের কম সময়ে ৯৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় ইস্যু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যুকারী ১৯টি সংস্থার (ডিজিডিএ, ইপিবি, ডিওইএক্স, বিএনএসিডব্লিউসি, বেজা, বেপজা, ডিওই, বিএসটিআই, বায়রা, বিএইসি, ক্যাব, বিআরটিসি, ডিওএফ, ডিএলএস, ডিকিউডব্লিউ, বিডা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, সিসিআই অ্যান্ড ই) ক্ষেত্রে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

নাজমুল/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ স ঙ গ ল উইন ড স স ট ম ব যবহ র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।

বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।

সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ