যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের ব্যালকনি ভেঙে ২ প্রকৌশলীসহ নিহত ৩
Published: 1st, July 2025 GMT
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের পঞ্চম তলার ব্যালকনি ভেঙে পড়ে দুই প্রকৌশলীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যশোর শহরের সার্কিট হাউজপাড়ার ইকবাল মঞ্জিলে নির্মাণাধীন বিল্ডিং ফর ফিউচার লিমিটেড কোম্পানির নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে এ ঘটনা ঘটে। কোম্পানিটি জমির মালিকদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন, ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান (৩৫), ইঞ্জিনিয়ার আজিজুল ইসলাম ও শ্রমিক নুরু মিয়া (৪৫)।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ভবনের পঞ্চম তলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সাব কন্ট্রাক্টর কাম হেড মিস্ত্রী নুরু মিয়াকে (৪৫) কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান (৩৫) ও সাইট ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান (৩৫)। হঠাৎ ব্যালকনিটি ধসে নিচে পড়ে যায়।
বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তমাল আহমেদ বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে বাসা থেকে বের হয়ে আসি। এসে দিকে তিনজন লোক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। শুনেছি তারা তিনজনই মারা গেছেন। মূলত নির্মাণ কাজের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা দরকার সেটা না থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য পদত্যাগকারী আহ্বায়ক রাশেদ খান। তিনি বলেন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভেঙে পড়া ব্যালকনিতে খুবই চিকন রড ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদের রডের সঙ্গে ব্যালকনির রডের সংযোগও ছিল না। এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি বিল্ডিং ফর ফিউচারের কোনও প্রতিনিধিকে পাওয়া যায়নি।
যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান বলেন, আমরা দুর্ঘটনার খবর শুনে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। নির্মাণসংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ত্রুটি পেলে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, নিহতদের ময়নাতদন্ত করা হবে এবং এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, নিহত ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান দিনাজপুর, ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান কুষ্টিয়া এবং সাব কন্ট্রাক্টর কাম মিস্ত্রি নুরু মিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তারা ৫ বছরের অধিক সময় ধরে এ ভবন নির্মাণের কাজ করছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত ত ন দ র ঘটন ভবন ন র ম ণ ব য লকন র রহম ন দ র ঘটন ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।
২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।
আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।
যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।
খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।
আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।
মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।
আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।
আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮