যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের পঞ্চম তলার ব্যালকনি ভেঙে পড়ে দুই প্রকৌশলীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যশোর শহরের সার্কিট হাউজপাড়ার ইকবাল মঞ্জিলে নির্মাণাধীন বিল্ডিং ফর ফিউচার লিমিটেড কোম্পানির নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে এ ঘটনা ঘটে। কোম্পানিটি জমির মালিকদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নিহতরা হলেন, ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান (৩৫), ইঞ্জিনিয়ার আজিজুল ইসলাম ও  শ্রমিক নুরু মিয়া (৪৫)।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ভবনের পঞ্চম তলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সাব কন্ট্রাক্টর কাম হেড মিস্ত্রী নুরু মিয়াকে (৪৫) কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান (৩৫) ও সাইট ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান (৩৫)। হঠাৎ ব্যালকনিটি ধসে নিচে পড়ে যায়।

বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তমাল আহমেদ বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে বাসা থেকে বের হয়ে আসি। এসে দিকে তিনজন লোক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। শুনেছি তারা তিনজনই মারা গেছেন। মূলত নির্মাণ কাজের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা দরকার সেটা না থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য পদত্যাগকারী আহ্বায়ক রাশেদ খান। তিনি বলেন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভেঙে পড়া ব্যালকনিতে খুবই চিকন রড ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদের রডের সঙ্গে ব্যালকনির রডের সংযোগও ছিল না। এটি একটি হত্যাকাণ্ড।

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি বিল্ডিং ফর ফিউচারের কোনও প্রতিনিধিকে পাওয়া যায়নি।

যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান বলেন, আমরা দুর্ঘটনার খবর শুনে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। নির্মাণসংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ত্রুটি পেলে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, নিহতদের ময়নাতদন্ত করা হবে এবং এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, নিহত ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান দিনাজপুর, ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান কুষ্টিয়া এবং সাব কন্ট্রাক্টর কাম মিস্ত্রি নুরু মিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তারা ৫ বছরের অধিক সময় ধরে এ ভবন নির্মাণের কাজ করছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত ত ন দ র ঘটন ভবন ন র ম ণ ব য লকন র রহম ন দ র ঘটন ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিদিনের খাবার

বর্ষাকাল মানে আকাশ কালো করা মেঘ, কখনও আবার ঝরঝর বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই খিচুড়ি, মজাদার খাবার খেতে মন চায়। সঙ্গে যদি থাকে ইলিশ মাছ কিংবা মাংসের কোনো পদ তাহলে তো কথাই নেই। বৃষ্টি দিনের মজার কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা খানম মুক্তা

পোলাও দিয়ে নারকেল ইলিশ   
উপকরণ: পোলাও চাল ৫০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল আধা কাপ, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ টেবিল চামচ, এলাচ ও দারচিনি ২ পিস, পানি পরিমাণ মতো, ঘি ২ টেবিল চামচ।
নারকেল ইলিশ–উপকরণ: ইলিশ মাছ ৪ পিস, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা ও রসুন বাটা ২ চা চামচ, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া আধা চা চামচ, কাঁচামরিচ ৫-৬টি, লবণ স্বাদমতো, নারকেল কোরানো আধা কাপ, সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ। বানাবেন যেভাবে: ইলিশ মাছ রিং পিস করে কেটে ধুয়ে রাখুন। কড়াইতে সয়াবিন তেল গরম হলে পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভেজে সামান্য পানি দিন। পরে আদা ও রসুন বাটা, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া, লবণ, নারকেল কোরানো দিয়ে কষিয়ে নিন। পরে কাঁচামরিচ ফালি, ইলিশ মাছ দিয়ে ঢাকনাসহ রান্না করুন ৬-৭ মিনিট। পরে নামিয়ে রান্না করা মাছ উঠিয়ে রাখুন অন্য বাটিতে। মসলা পোলাওয়ের সঙ্গে মিলিয়ে ওপরে মাছ দিয়ে ৫-৭ মিনিট দমে রান্না করুন। তৈরি হয়ে গেল পোলাও দিয়ে নারকেল ইলিশ।
প্রস্তুত প্রণালি: হাঁড়িতে সয়াবিন তেল গরম হলে এলাচ ও দারচিনি, আদা ও রসুন বাটা, পেঁয়াজ কুচি, লবণ দিয়ে ২/১ মিনিট রান্না করে পানি দিন। ফুটে উঠলে ধুয়ে রাখা চাল দিয়ে রান্না করুন। সেদ্ধ হলে তাপ কমিয়ে ঘি দিয়ে আবারও ১৫ মিনিট রান্না করুন। তৈরি হয়ে গেল সাদা পোলাও। 

বৃষ্টিবিলাসী খিচুড়ি   
উপকরণ: পোলাও চাল ১ কেজি, মুগ ডাল ৩০০ গ্রাম, মসুর ডাল ১০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, এলাচ ও দারচিনি ২-৩ পিস, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল ১ কাপ, ঘি ১/৪ কাপ, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, পানি আধা লিটার, তেজপাতা দুটি।
প্রস্তুত প্রণালি: মুগ ডাল লালচে করে ভেজে ধুয়ে ফুটন্ত পানিতে সেদ্ধ করে নিন ৫ মিনিট। এবার ভালোভাবে ধুয়ে যে হাঁড়িতে রান্না করবেন সেই হাঁড়িতে মুগ ডাল সেদ্ধ, চাল, মসুর ডাল, আদা ও রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, পেঁয়াজ কুচি, এলাচ ও দারচিনি, লবণ এবং সয়াবিন তেল দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে পানি দিন। এবার চুলার তাপ বাড়িয়ে রান্না করুন ঢাকনাসহ। ফুটে উঠলে মিডিয়াম আঁচে রান্না করুন আরও ১০-১২ মিনিট। নামানোর আগে ঘি দিয়ে নেড়ে নিন। তারপর গরম গরম খাসির মাংসের সঙ্গে পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল বৃষ্টিবিলাসী খিচুড়ি।

মাংস ভরা খিচুড়ি
উপকরণ: চাল ৫০০ গ্রাম, মুগ ডাল ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ গোল করে কাটা আধা কাপ, তেজপাতা দুটি, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ ও ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ, ভাজা মরিচ বাটা ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, ছাক বাটা ২ টেবিল চামচ, ঘি ৪ টেবিল চামচ, গরুর মাংস ভুনা আধা কেজি।
ছাক বাটা–উপকরণ: পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, তেজপাতা ৩টি, রসুন কুচি ১/৪ কাপ,  চাল ২ চামচ, সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ, আস্ত জিরা ২ চা চামচ। বানাবেন যেভাবে: কড়াইতে তেল গরম হলে পেঁয়াজ, রসুন, তেজপাতা দিয়ে সোনালি করে ভাজুন। পরে চাল ও জিরা দিয়ে সামান্য ভেজে নিন। পরে বেটে পেস্ট তৈরি করে নিন। রেডি ছাক বাটা। 
প্রস্তুত প্রণালি: মুগ ডাল ভেজে লালচে করে নিন। এবার লাল চাল ও ভাজা ডাল ধুয়ে হাঁড়িতে বেশি পানি দিয়ে রান্না করুন। ফুটে উঠলে তেজপাতা, ভাজা মরিচ বাটা, হলুদ, ধনিয়া এবং লবণ দিয়ে আবারও রান্না করুন। খিচুড়ির মতো হলে নাড়তে নাড়তে নরম করুন। এরপর গরুর মাংস ভুনা দিন। নামানোর আগে ঘি আর ছাক বাটা দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন। তারপর লবণ দেখে নামিয়ে নিন। এবার চামচে করে ঘি ও গন্ধরাজ লেবু দিয়ে পরিবেশন করুন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ