কালনা-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কের প্রায় ৭০ কিলোমিটার অংশ প্রশস্ত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পদ্মা ও মধুমতি সেতু চালুর পর এ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে পার হওয়ার পর কালনা-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ৭০ কিলোমিটার অংশ খুবই সরু। ফলে, এ অংশে প্রতিদিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক লোক। 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) নড়াইলের তুলারামপুর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা ও মধুমতি সেতু চালুর পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত (আড়াই বছর) কালনা-নড়াইল-বেনাপোল মহাসড়কে ৬৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত এবং ৯৯ জন আহত হয়েছেন। মহাসড়কের ৭০ কিলোমিটার অংশে অপ্রশস্ততা এবং গাড়ির বেপরোয়া গতি ও ছোট ছোট যানবাহনের চলাচল এসব দুর্ঘটনার কারণ।

এ মহাসড়কে চলাচলকারী লিটন পরিবহনের বাসচালক লাল মিয়া ও লাভলু শেখসহ একাধিক চালক বলেছেন, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে কালনা-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্ত কম হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

আরো পড়ুন:

রংপুরে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

মাসুদ রুমী সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ

তুলারামপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা রোধে কালনা-নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। 

২০২২ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা-মাওয়া-কালনা-নড়াইল-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কের কালনা এলাকায় মধুমতি নদীতে দেশের প্রথম ছয় লেন সেতু উদ্বোধন করা হয়। এর পর থেকেই ঢাকা, যশোর, বেনাপোল, কলকাতা, সাতক্ষীরা, খুলনা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যাহবাহন পদ্মা ও মধুমতি সেতু দিয়ে নড়াইল রুটে চলাচল করছে। ফলে, যানবাহনগুলো ক্রসিং কিংবা ওভারটেকিং করার সময় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নড়াইল হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেন করার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। মধুমতি সেতুর নড়াইল প্রান্ত থেকে যশোর পর্যন্ত দুই পাশে ১২ ফুট প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন ন হত প রশস ত দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।

বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।

সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ