ফেনীতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া ২২৩টি রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী জেলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মেজবাহ উদ্দীন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এসব মামলার ১৬৬টি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের, ৩৫টি বিশেষ ক্ষমতা আইনের ও আইন লঙ্ঘন করে জমায়েত আর হামলার ঘটনায় ২২টি মামলা রয়েছে।

এর আগে গত ১৫ জুন এক চিঠিতে এসব মামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা পিপিকে অনুরোধ জানিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার সহকারী সচিব মো.

মফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই পত্রে বলা হয়েছিল, ‘সরকার ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ৪৯৪ ধারার আওতায় ফেনী জেলার এসব মামলার প্রসিকিউশন না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

জানতে চাইলে পিপি মেজবাহ উদ্দীন খান বলেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফেনী জেলা প্রশাসককে এসব মামলা প্রত্যাহারের একটি তালিকা পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে তিনি তালিকাটি পেয়েছেন। এরপর আজ পিপি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা মামলাগুলো কোন আদালতে রয়েছে, তা বাছাই শুরু করেছেন। আগামীকাল বুধবার আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মামলাগুলো প্রত্যাহারের আবেদন তাঁরা করবেন।

আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছিল বলে মনে করেন জেলা পৌর বিএনপির সদস্যসচিব মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন,‘২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪–এর গণ–অভ্যুত্থান পর্যন্ত এসব মামলা করা হয়েছিল। বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এসব মিথ্যা মামলা করা হয়। বেশির ভাগ মামলার বাদী পুলিশ আর গায়েবি জনগণ।’

শুধু রাজনীতি করার কারণে এসব মিথ্যা মামলার শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বছরের পর বছর জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা–কর্মী মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছেন, রিমান্ডে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাকি রাজনৈতিক মামলাগুলোও প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক হয় ছ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।

বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।

সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ