জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে কেজি দরে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে আউয়ালগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

শওকত আনোয়ার সোনামুখী ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি সরকারি বিনামূল্যের বই ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন। তদন্তে তাঁর অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

জানা গেছে, গত ২৫ মে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিগত বছরের বই ফেরত নিয়ে বিদ্যালয় চলাকালে ফেরিওয়ালা জালাল হোসেনের কাছে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। ক্রেতা ভ্যানে করে বইগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক আটকে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সমকালে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইমরান হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত চলাকালে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী ওই শিক্ষকের অপসারণের চেয়ে বিক্ষোভ করেন। বাধ্য হয়ে শিক্ষক শওকত আনোয়ার ওই কর্মকর্তার সঙ্গে বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যান। পরে তদন্তে বিষয়টি প্রমাণ হওয়াই তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

অভিভাবক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক একজন দুর্নীতিবাজ। তিনি বই বিক্রি, ভর্তিবাবদ টাকা, স্কুল উন্নয়ন ছাড়াও বিভিন্নভাবে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রাইভেট বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। তাঁর মতো দুর্নীতিবাজ শিক্ষক বদল হওয়ায় আমরা খুশি।
ইউপি সদস্য সরদার আয়নাল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক শওকত আনোয়ার হোসেনের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ায় বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে জেলায় প্রতিবেদন দেওয়া হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তাঁকে আউয়ালগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ জারি হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত সরক র তদন ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

এ বছর লতিফুর রহমান পুরস্কার পেলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন

প্রথম আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেড ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নামে চালু করা বর্ষসেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার এ বছর পেয়েছেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন।

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর পাঁচ তারকা র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সাংবাদিক শওকত হোসেনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনদের নিয়ে চলছে এই অনুষ্ঠান। সেখানে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। শওকত হোসেনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রথম আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেড ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান এবং প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।

সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সাল থেকে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নামে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এবার নিয়ে পঞ্চমবার এই পুরস্কার দেওয়া হলো। প্রথমবার এই পুরস্কার পেয়েছিলেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলাম। দ্বিতীয়বার প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, তৃতীয়বার প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়ল এবং গত বছর প্রথম আলোর উপসম্পাদক এ কে এম জাকারিয়া এ পুরস্কার পেয়েছিলেন।

এ বছর পুরস্কারজয়ী শওকত হোসেন ২০০৪ সাল থেকে প্রথম আলোতে কর্মরত। অর্থনীতিবিষয়ক স্বনামধন্য রিপোর্টার ও কলামিস্ট শওকত হোসেন এখন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথম আলোর বার্তাকক্ষের ডিজিটাল রূপান্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। এসব কারণে তিনি এবার এই পুরস্কার পেলেন। এর আগে তিনি প্রথম আলোয় বাণিজ্য সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, হেড অব রিপোর্টিংসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

শওকত হোসেন পুরস্কার পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমার ৩২ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে ২১ বছরের বেশি সময় কাটছে প্রথম আলোয়। এই লম্বা সময়ের মধ্যে আজকেই আমি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত বোধ করছি লতিফুর রহমান বর্ষসেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার পেয়ে। অনেক শ্রদ্ধা প্রয়াত চেয়ারম্যানের প্রতি, ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের পরিচালনা বোর্ডকে।’

স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র তৈরিতে লতিফুর রহমানের অবদান তুলে ধরে শওকত হোসেন বলেন, ‘আর প্রথম আলোর সম্পাদক স্বাধীন, সৎ ও সুসাংবাদিকতার চর্চা করতে প্রতিনিয়তই শিখিয়ে যাচ্ছেন। আমার ও আমাদের অনেক সৌভাগ্য যে মতি ভাইয়ের (প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান) মতো একজন সম্পাদকের নেতৃত্বে কাজ করতে পারছি।’

সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে শওকত হোসেন বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে থেকে আরও ভালো সাংবাদিকতা করে যেতে হবে, আজকের পুরস্কার আমাকে এই অনুপ্রেরণাই দিচ্ছে। স্বাধীন ও সৎ সাংবাদিকতা সহজ নয়। ধরনও প্রতিনিয়ত বদল হচ্ছে। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা সবাই এগিয়ে যাব, পুরস্কার হাতে নিয়ে এই প্রত্যয়ের কথাই জানালাম।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এ বছর লতিফুর রহমান পুরস্কার পেলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন