সরকারি বই বিক্রি করা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 1st, July 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে কেজি দরে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে আউয়ালগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
শওকত আনোয়ার সোনামুখী ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি সরকারি বিনামূল্যের বই ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন। তদন্তে তাঁর অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জানা গেছে, গত ২৫ মে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিগত বছরের বই ফেরত নিয়ে বিদ্যালয় চলাকালে ফেরিওয়ালা জালাল হোসেনের কাছে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। ক্রেতা ভ্যানে করে বইগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক আটকে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সমকালে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইমরান হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত চলাকালে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী ওই শিক্ষকের অপসারণের চেয়ে বিক্ষোভ করেন। বাধ্য হয়ে শিক্ষক শওকত আনোয়ার ওই কর্মকর্তার সঙ্গে বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যান। পরে তদন্তে বিষয়টি প্রমাণ হওয়াই তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
অভিভাবক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক একজন দুর্নীতিবাজ। তিনি বই বিক্রি, ভর্তিবাবদ টাকা, স্কুল উন্নয়ন ছাড়াও বিভিন্নভাবে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রাইভেট বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। তাঁর মতো দুর্নীতিবাজ শিক্ষক বদল হওয়ায় আমরা খুশি।
ইউপি সদস্য সরদার আয়নাল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক শওকত আনোয়ার হোসেনের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ায় বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে জেলায় প্রতিবেদন দেওয়া হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তাঁকে আউয়ালগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ জারি হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত সরক র তদন ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসায়ী শওকত আলী চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. শওকত আলী চৌধুরীসহ তাঁর পরিবারের চার সদস্যের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। শওকত আলী চৌধুরী চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একজন ও ফিনলে বাজার লিমিটেডের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গতকাল সোমবার এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে তাদের হিসাবে সব ধরনের লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো ক্রেডিট কার্ড থাকলে তা–ও বন্ধ হয়ে যাবে।
শওকত আলী চৌধুরীসহ আরও যাঁদের হিসাব স্থগিত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন শওকত আলী চৌধুরীর স্ত্রী তাসমিয়া আম্বারীন, তিনি ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান। হিসাব স্থগিতের তালিকায় থাকা অপর দুজন হলেন তাঁর মেয়ে জারা নামরীন ও জারান আলী চৌধুরী। এর মধ্যে জারা নামরীন ইস্টার্ন ব্যাংকের পরিচালক।
ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, তাঁদের নামে ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের (লিমিটেড কোম্পানিসহ) নামে কোনো ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেসব হিসাবের লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করা থাকবে। এসব হিসাবের যাবতীয় দলিল (হিসাব খোলার ফরম, টিপি, কেওয়াইসি) ২ জুলাইয়ের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আর্থিক অপরাধের তদন্তের অংশ হিসাবে এক মাসের জন্য এসব ব্যক্তি ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনে হিসাবগুলো স্থগিত করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটার পর থেকে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার শওকত আলী চৌধুরীসহ পরিবারের সদস্যদের হিসাব জব্দ করা হয়েছে। তিনি বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান।