রূপগঞ্জে পাঁচ ঘোড়া জবাই, গরুর মাংস বলে বিক্রির চেষ্টা
Published: 1st, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে জবাইকৃত পাঁচটি ঘোড়ার মাংস জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফয়েজ মিয়া নামে এক যুবককে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) রাত ৩টার দিকে উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরের ১০ নম্বর সেক্টর থেকে ঘোড়ার মাংস জব্দ হয়।
স্থানীয়রা জানান, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ঘোড়ার মাংসকে গরুর মাংস বলে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় ও বিভিন্ন হোটেলে বিক্রির চেষ্টা করছে। পূর্বাচল শুনশান এলাকা হওয়ায় এখানেই তারা ঘোড়া জবাই করে তা গরুর মাংস হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতো।
আরো পড়ুন:
পাবনা মানসিক হাসপাতালের ৯ দালালের কারাদণ্ড
কিশোরগঞ্জে পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা
সাজা পাওয়া ফয়েজ মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার বরমপাড়া এলাকার হাফিজ মিয়ার ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত ৩টার দিকে পূর্বাচল উপ-শহরের ১০ নম্বর সেক্টর এলাকায় আনসার বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় তারা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পূর্বাচলের একটি প্লটের ভেতরে প্রবেশ করতে দেখেন। তাদের সন্দেহ হয়।
অটোরিকশাটি থামার সংকেত দিলে কয়েকজন ব্যক্তি সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে প্লটের ভেতর প্রবেশ করে আনসার সদস্যরা দেখতে পান পাঁচটি ঘোড়া জবাই করে তাদের মাংস আলাদা করা হচ্ছে।
আনসার সদস্যরা তাৎক্ষণিক জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে। ঘটনাস্থলে গেলে আনসার সসদস্যরা আটক ফয়েজ মিয়াকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে সহকারী কমিশনার ভূমি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ফয়েজ মিয়াকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
ঢাকা/অনিক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক আনস র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে তিন প্রতিষ্ঠান
দেশের বাইরে ২১ লাখ ডলার বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশের তিন প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি কোম্পানি গঠনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেবা ও বিপণনের ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা পেতেই তারা দেশের বাইরে মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে কোম্পানি গঠন করবে। কোম্পানিগুলোকে রপ্তানিকারকের সংরক্ষিত কোটা (ইআরকিউ) হিসাব থেকে বিনিয়োগ করতে হবে। সম্প্রতি গভর্নরের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ নিয়ে বাংলাদেশি ২৫ প্রতিষ্ঠান বিদেশে ৩৫টি কোম্পানি গঠনে বিনিয়োগের অনুমতি পেল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশে কোম্পানি খোলার অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোম্পানি খুলবে, যার নাম হবে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউএই লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ইআরকিউ থেকে ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ নেবে। করিম টেক্সটাইল নামের একটি কোম্পানি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ নিয়ে করিম রিসোর্সেস ইউএই গঠন করবে। এ ছাড়া সফটওয়্যার খাতের কোম্পানি ব্রেইন স্টেশন-২৩ লিমিটেড বিদেশে তিনটি কোম্পানি গঠনের অনুমোদন পেয়েছে। প্রতিটি দেশে তারা বিনিয়োগ করবে ২ লাখ ডলার করে। মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডসে কোম্পানি গঠন করবে।
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন প্রয়োজনে ‘কেস টু কেস’ ভিত্তিতে ২০১৩ সাল থেকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা ছিল না। তবে ২০২১ সালে বিদেশে মূলধন বিনিয়োগ-সংক্রান্ত একটি বিধিমালা জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিধিমালার আওতায় শুধু রপ্তানি আয় আছে, এমন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারে। অবশ্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে বাইরে বিনিয়োগের নজির রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়ন প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশ থেকে গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ পাঁচ বছরে বৈধভাবে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আর ২০২৪ সাল শেষে বাংলাদেশি কোম্পানির বিদেশে বিনিয়োগ স্থিতি কমে ৩২ কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমেছে, আগের বছর শেষে যা ৩৫ কোটি ১০ লাখ ডলার ছিল।
আরও যত বিনিয়োগ
গত মার্চে বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্টের নেপালি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। একাধিক দেশে বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশি সাতটি কোম্পানির। নতুনভাবে অনুমোদন পাওয়াদের মধ্যে স্কয়ার ফার্মা আগ থেকেই কেনিয়া ও ফিলিপাইনে বিনিয়োগ নিয়েছে। বেক্সিমকো ফার্মার সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও এস্তোনিয়ায় কোম্পানি খুলেছে। ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি রেনেটা লিমিটেডের যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে বিনিয়োগ রয়েছে।
সামিট গ্রুপের সামিট পাওয়ারের ভারতে, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট ও সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিংয়ের সিঙ্গাপুরের দুই কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে। স্টিল খাতের কোম্পানি বিএসআরএম কেনিয়া ও হংকংয়ে কোম্পানি খুলেছে। আকিজ শিপিংয়ের সিঙ্গাপুর ও আকিজ হোল্ডিংয়ের মালয়েশিয়ায় কোম্পানি খোলার অনুমোদন রয়েছে। এ ছাড়া মবিল যমুনা সিঙ্গাপুর ও মিয়ানমারে বিনিয়োগ নিয়েছিল। তবে মিয়ানমার থেকে বেশ আগেই তারা বিনিয়োগ গুটিয়ে এনেছে।
ডিবিএল গ্রুপ এস্তোনিয়ায়, এআইআইএম গ্লোবাল সংযুক্ত আরব আমিরাতে, এসিআই হেল্থ যুক্তরাষ্ট্রে, টেকআউট লিমিটেড শ্রীলঙ্কায়, এমবিএম গার্মেন্টস সিঙ্গাপুরে, প্রাণ ফুড ভারতে, এজে সুপার গার্মেন্টস সৌদি আরবে, কলম্বিয়া গার্মেন্টস হংকংয়ে, সাইফ পাওয়ারটেক সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং টাইগার আইটি নেপালে বিনিয়োগ নেওয়ার অনুমোদন পেয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা পেতে এসব দেশে বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।