সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা (তালিকা)
Published: 23rd, September 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, ছেলে ও ভাতিজার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি রেকর্ড হয় আদালতের নির্দেশে।
জানা যায়, গত বছর ১৯ জুলাই দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় আন্দোলন চলাকালে গুলি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত মো.
পুলিশ জানায়, মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৫৯ জনের। পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০ থেকে ৬০ জনকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন,:
১। এ কে এম শামীম ওসমান, (সাবেক সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ-৪)
২। শাহ নিজাম (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামীলীগ),
৩। আজমেরী ওসমান (শামীম ওসমানের ভাতিজা),
৪। অয়ন ওসমান (শামীম ওসমানের ছেলে),
৫। জাকির হোসেন চেয়ারম্যান (আওয়ামীলীগ নেতা, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা),
৬। বিল্লাল হোসেন (ডিক্রিরচর, নারায়ণগঞ্জ সদর),
৭। তাওলাদ হোসেন (নারায়ণগঞ্জ সদর),
৮। রিফাত (নবীগঞ্জ, টি হোসেন রোড, বন্দর),
৯। আমির হোসেন (নবীগঞ্জ, টি হোসেন রোড, বন্দর),
১০। মো: জুলহাস (যুবলীগ, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১১। গোলাম হোসেন (নবীগঞ্জ, টি হোসেন রোড, বন্দর),
১২। অনিক (ছাত্রলীগ ক্যাডার, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১৩। ইমতিয়াজ আহমেদ (ফুলবাগ, ফতুল্লা),
১৪। আলমগীর কবির (দেওভোগ, নাগবাড়ি),
১৫। মো: বাবুল (যুবলীগ আর্মস ক্যাডার, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১৬। শরিফ হাজী (৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, গোপচর, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
১৭। মো: শরিফ হোসেন (যুবলীগ ক্যাডার, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আইলপাড়া),
১৮। সামসুদ্দিন (ফুলবাড়, ফতুল্লা),
১৯। মিসেস সাগরিকা (মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী, কোতালের বাগ, ফতুল্লা),
২০। ফিরোজ মেম্বার (গোপচর, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
২১। নেকবর বেপারি (মুক্তারকান্দি, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
২২। শাহিন রাজু মেম্বার (মুক্তারকান্দি, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
২৩। মো: অহিদ উল্লাহ (আওয়ামীলীগ নেতা, কোতালেরবাগ, ফতুল্লা),
২৪। আবু আলিক মাসুম (কদমতলী দক্ষিনপাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৫। মো: হোসেন (ফাজেলপুর, এনায়েতনগর, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৬। মো: জীবন (কদমতলী নয়াপাড়া, ৭নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৭। নাদিমুল ইসলাম নয়ন (ভাঙ্গারীপুল, বারিপাড়া, ৮নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৮। নাদিম (স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা, আদমজী বিহারী কলোনী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
২৯। জমির বার্বচি (যুবলীগ ক্যাডার. আদমজী বিহারী কলোনী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৩০। রমজান (আওয়ামীলীগ নেতা, আদমজী বিহারী কলোনী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৩১। হীরা (ফুলবাগ, ফতুল্লা),
৩২। জাকির মেম্বার (যুবলীগ নেতা, আলিরটেক, নারায়ণগঞ্জ সদর),
৩৩। মো: সোহেল (স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা, ১নং বাবুরাইল, ফতুল্লা),
৩৪। মো: উজ্জল (যুবলীগ নেতা, ১নং বাবুরাইল, ফতুল্লা),
৩৫। শায়লা বেগম (যুব মহিলালীগ নেত্রী, আইলপাড়া, ৬নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৩৬। সজিব (ছাত্রলীগ নেতা, কোতালেরবাগ, ফতুল্লা),
৩৭। মো: নুরুজ্জামান (আওয়ামীলীগের অর্থ যোগানদাতা, ৬৩ পশ্চিম রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ি),
৩৮। মো: আল আমিন (ফুলবাগ, ফতুল্লা),
৩৯। মেহেদী হাসান সম্রাট (আদমজী, ৬নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪০। মো: শহিদুল্লাহ বাপ্পি (ছাত্রলীগের আর্মস ক্যাডার, আইলপাড়া দক্ষিন মোজারবাড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪১। দুলাল হোসেন ওরফে লালন (যুবলীগের আর্মস ক্যাডার, আইলপাড়া দক্ষিন মোজারবাড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪২। মো: সেলিম (যুবলীগ ক্যাডার, আইলপাড়া দক্ষিন মোজারবাড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৪৩। পবিত্র চন্দ্র মন্ডল (নাওরা, ১নং ওয়ার্ড, কায়েতপাড়া, রুপগঞ্জ),
৪৪। জামাল (বারপাড়া, বন্দর),
৪৫। সায়েম (রাজবাড়ি, সমাজকল্যান, বন্দর),
৪৬। আল আমিন (বন্দর কলোনী, বন্দর),
৪৭। মাজেদুল ইসলাম মামুন রিদয় (বন্দর, নারায়ণগঞ্জ),
৪৮। খোন ভেন্ডার (কায়তাখালি, নবীগঞ্জ, বন্দর),
৪৯। অজিত সরকার (নাওরা, ১নং ওয়ার্ড, কায়েতপাড়া, রুপগঞ্জ),
৫০। সুচিত্র সরকার (নাওরা, ১নং ওয়ার্ড, কায়েতপাড়া, রুপগঞ্জ),
৫১। হাজি সফিউল্লাহ (৮নং ওয়ার্ড, বন্দর),
৫২। হাজেরা আক্তার মুক্তা (যুব মহিলালীগ সম্পাদক,দেলপাড়া, আদর্শনগর, ফতুল্লা),
৫৩। একরামুল ইসলাম (আওয়ামীলীগ নেতা, পাচানি পিরোজপুর, সোনারগাঁও),
৫৪। নাদের মিয়া (ষোল্লাপাড়া,বড়নগর, সোনারগাঁও),
৫৫। ছয়পুর রহমান (রসুলপুর, কুড়িগ্রাম সদর),
৫৬। মো: মানিক (কোতালেরবাগ, ফতুল্লা),
৫৭। আব্দুস সালাম সাজ্জাদ (৩নং ওয়ার্ড, নিমাইকাশারী, সিদ্ধিরগঞ্জ),
৫৮। ফারুক প্রধান (২৭ নং ওয়ার্ড, বন্দর),
৫৯। মনির হোসেন (ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকলীগ, ২৭নং ওয়ার্ড, বন্দর),
এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনূর আলম জানান, আদালতের নির্দেশে এই হত্যা চেষ্টার মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। বাদী জিদান হোসেন গত বছরের জুলাই আন্দোলনে আহত হয়েছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ সদর আওয় ম ল গ ন ত স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন য বল গ
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে পূজা ফ্রন্টের নেতারা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নেতারা। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নিয়ে তারা এ পরিদর্শনে আসেন।
এসময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা তাদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। নেতারা তাদের সমস্ত অভিযোগ অত্যান্ত মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আশ^াস দেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর আমরা অনুরোধ করতে করতে অবশেষে গেট খুলে আমাদের পূজার করতে দেয়। পূজা শেষ গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। আমরা আর এসে ধূপ-ধোয়া কিছুই করতে পারি না। এভাবেই থাকে। এ মন্দিরের জায়গাটাও আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে না। তারা বলে জায়গা বুঝি দেবে কিন্তু আর দেয় না।
তারা বলে, ডিসি এসপি সহ সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দিক। আমরা আমাদের মত যাতে কোন বাধা বিঘ্ন ছাড়াই পূজা-অর্চনা করতে পারি।
সব কথা শুনে পরিদর্শনে আসা মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে আজ আমরা এখানে এসেছি। আমরা সব সময় জেনেছি যে, এটা আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ। আমরা ঈদে যেমন আনন্দ করি, তেমনি পূজার মধ্যেও মুসলিম ভাইয়েরা আমাদের সহযোগীতা করে। কিন্তু এখানে এসে কিছুটা ভিন্নতা লাগলো।
শুনলাম প্রতিবছরই নাকি এখানে পূজা নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এটা ঠিক নয়। বাংলাদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যে এটা কোনভাবেই শোভা পায় না। আমরা পূজা নিয়ে আর কোন যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই সকলের সহযোগীতায় এখানে একটি উৎসমুখর পরিবেশে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হোক।
আমি এ জন্য নীট কনর্সানের কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে জয়নাল ও জাহাঙ্গীর ভাইকে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার আহ্বান জানাবো। তারা যেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্দির নিয়ে যে জটিলতা রয়েছে তার সমাধান করে এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে শান্তি ছড়িয়ে দেয়।
জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত দাস বলেন, আসলে এখানে যা দেখলাম, যা শুনলাম তা আমাদের কল্পনার মধ্যেও ছিলো না। সত্যিই প্রায় ৮৩ বছরের ঐহিত্যবাহী একটি মন্দিরকে এভাবে অবহেলিত দেখতে পেয়ে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। ভাবছি, এটাই কি আমাদের নতুন স্বাধীনতা! যেখানে হিন্দু সম্প্রদায় এখনও তাদের পূজা-অর্চনা করতে গিয়ে বাধা-বিঘ্নের শিকার হচ্ছে।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে হলে এটা মেনে নিতাম। কিন্তু ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা আনলো প্রকৃত অর্থে সেই স্বাধীনতা কি সর্বক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে? যদি হয়ে থাকে, তাহলে আজও কেন এমন দৃশ্য দেখতে হচ্ছে, আজও কেন পূজা করার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের চোঁখের কোণে জল জ¦লমল করবে? প্রশাসনের কাছে আমরা এর উত্তর চাই।
তিনি বলেন, লক্ষীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপটি শুধু সিদ্ধিরগঞ্জেরই নয়, এটা গোটা নারায়ণগঞ্জের একটি ঐতিহ্য। এর সাথে মিশে আছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ৮৩ বছরের স্মৃতি। তাই জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার জন্য।
সকল বাধা বিপত্তির শিকর উপড়ে ফেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা যাতে তার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাসহ সকল পূজা বাধাহীনভাবে করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট অনুরোধ করছি।
পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে। তাই আমি আমার বিএনপি ভাইদেরও এ সমস্যা সমাধানে পাশে থাকার অনুরোধ করছি।
স্থানীয় ১০ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: জামাল উদ্দিন প্রধান বলেন, আমরাও চাই এ সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হোক। এ মন্দির নিয়ে প্রতিবছরই যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় সেই দ্বন্দ্বের সমাধান জরুরী। এক পক্ষ বলছে, তাদের জায়গা দ্রুত বুঝিয়ে দেয়া হবে। অন্যপক্ষ বলছে, এখনও জায়গা বুঝে পাচ্ছি না। তাই বলছি, পূজাটা শেষ হোক এরপর সবাই বসে এর স্থায়ী সমাধানের বন্দবস্ত করার ব্যবস্থা করা হোক। যাতে এটা নিয়ে প্রতিবছর আর কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, লক্ষীনারায়ণ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিন্টু চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক বকুল বিশ^াস, সহ সভাপতি বিদ্যুৎ দে, সৌরভ বারৈই, উপদেষ্টা বাবু লাল, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম শফিক, ১০নং যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: মঞ্জুর হোসেন, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক দীপ্তি গাজী, সাহাবুদ্দিন, শেকান্তর, হারুন, নাজমুল, শাহীন, সজল প্রমূখ।