গাজীপু‌রে টঙ্গীতে পুলিশের লুট হওয়া একটি সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ফেরদৌসি আক্তার (১৭) নামের এক কিশোরী আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ জ‌সিম উ‌দ্দিন না‌মে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে টঙ্গীর ব্যাংকের মাঠ বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গে‌ছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বিস্ফোরিত সাউন্ড গ্রেনেডটি থানা থেকে লুট হয়েছিল।

পু‌লিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে টঙ্গীর ব্যাংকের মাঠ বস্তির খালি জায়গায় হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। এতে ফেরদৌসি আক্তারের দুই পায়ের নিচের অংশ পুড়ে যায়। এলাকাবাসী দ্রুত তা‌কে হাসপাতালে নিয়ে যান। সংবাদ পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত সাউন্ড গ্রেনেডের খোসা উদ্ধার করে। সাউন্ড গ্রেনেড রাখার দায়ে পুলিশ জসিম উদ্দিনকে আটক করে। জসিম মাদকাসক্ত এবং ছিনতাইকারী বলে জানায় পুলিশ।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিস্ফোরিত সাউন্ড গ্রেনেডের গায়ে লেখা থেকে বুঝা যায় এটি পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড। সম্ভবত এটি থানা থেকে লুট হওয়া সাউন্ড গ্রেনেড। এই বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া নেওয়া হ‌বে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে সাইনবোর্ডে লুকানো ছিল দুটি অস্ত্র, উদ্ধার করল র‍্যাব

চট্টগ্রামের রাউজান থেকে আবারও দুটি পাইপগান উদ্ধার করেছে র‌্যাব। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকা থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার হয়। র‌্যাব জানায়, ওই এলাকার একটি মসজিদের সাইনবোর্ডের আড়ালে অস্ত্র দুটি লুকানো ছিল।

তবে এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত কিংবা আটক করতে পারেনি র‌্যাব। রাতেই অস্ত্র দুটি উদ্ধার করে রাউজান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। জানতে চাইলে র‌্যাবের (চট্টগ্রাম–৭) এএসপি সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাউজানে দেড় মাস ধরে অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান চলমান। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযানে গিয়ে অস্ত্র দুটি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাউজানে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান। গতকাল দুটি পাইপগান উদ্ধার করে থানায় জমা দিয়েছে র‍্যাব। তদন্ত করে অস্ত্রগুলো কারা লুকিয়ে রেখেছিল, সেটি বের করে মামলা করা হবে।

বারবার অস্ত্র উদ্ধার, থামছে না অপরাধ

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে ১৬ মাসে সহিংসতায় রাউজানে মোট ১৮টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২টি হত্যাকাণ্ডই রাজনৈতিক সহিংসতায় হয়েছে। এর বাইরে হামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে শতাধিকবার। এতে অন্তত ১০০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। পুলিশ জানায়, বেশির ভাগ ঘটনা বিএনপির দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে।

এসব ঘটনা রোধে বিভিন্ন সময় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ২৩ নভেম্বর রাতে উপজেলার পৌর এলাকার সুলতানপুর সরকারপাড়া এলাকা থেকে পিস্তলের পাঁচটি গুলিসহ একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০ নভেম্বর মধ্যরাতে ১৭টি চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশের অভিযানে দেশি–বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র–গুলিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে র‌্যাবের একটি দল রাউজান সদর ও কদলপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে। এর আগের দিন ১৯ নভেম্বর রাতে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকায় অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি একনলা বন্দুক ও পাঁচটি গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

১৭ নভেম্বর একই ইউনিয়নের পলোয়ানপাড়া গ্রামে পুকুর সেচে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি এলজি, একটি রাইফেল ও ১১টি গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৭ নভেম্বর একই ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বাজারসংলগ্ন আরেকটি পুকুর সেচে একটি চায়নিজ রাইফেল, একটি শটগান ও সাতটি গুলি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া এসব অস্ত্র ও গুলি গত বছরের ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হয়েছিল। একই দিন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জানালীহাট এলাকায় একটি গরুর খামারে অভিযান চালিয়ে একটি এলজি ও চারটি শটগান উদ্ধার করা হয়।

গত ৩০ অক্টোবর নোয়াপাড়া ইউনিয়নে বিএনপির এক কর্মীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বন্দুকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে র‍্যাব। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে ১১টি বন্দুক, ২৭টি দেশি ধারালো অস্ত্র, ৮টি ক্রিকেট স্টাম্প ও ১৫টি কার্তুজ রয়েছে। বিএনপির ওই কর্মীর নাম মুহাম্মদ কামাল (৫০)। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ