ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ‘বাংলা নববর্ষ’ উদযাপন
Published: 3rd, May 2025 GMT
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে ‘বাংলা নববর্ষ-১৪৩২’ উদযাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইসলামাবাদে স্যার সৈয়দ মেমোরিয়াল সোসাইটির বৃহৎ ‘সিদ্ধ রোড কালচারাল সেন্টারে’ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হাইকমিশন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো.
অনুষ্ঠানে পাকিস্তান সরকারের ফেডারেল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব আমব্রিন জান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি হাইকমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ স্ট্রিমিং) করা হয়।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার ও কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দেড় সহস্রাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে হাইকমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, “পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতি ও মহামিলনের দিন। এ দিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে, নব অঙ্গীকারে।”
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী সাজপোশাকে সুসজ্জিত শিল্পীরা আবৃত্তি, নাচ ও গান পরিবেশন করেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্য, বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পী এবং পাকিস্তানি শিল্পীরাও এতে অংশ নেন।পাকিস্তানে সফররত বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও এতে অংশগ্রহণ করেন এবং গান পরিবেশন করেন।
বাঙালি ধারায় আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্ভাষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হরেক রকম সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন ছিল এই উৎসবের মূল আকর্ষণ। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থল আলোকসজ্জা, ব্যানার, ফেস্টুন, ঘুড়ি, ফুল এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি লোকজ শিল্পপণ্য দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়। অতিথিরা বাংলাদেশের নাচ-গান, খাবার, লোকজ শিল্পপণ্য, স্ট্যান্ডি ও ভিডিও অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠান চলাকালীন আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে পরিবেশন করা হয় ফুচকা, মাঠা, লেবুর শরবত, তরমুজ, শসা, কাঁচা আম, পিচ ও লোকাট ফল।
হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের প্রস্তুত করা খাবারের মধ্যে ছিল দুধ-লাউয়ের ফিন্নি, আচার, গাজরের হালুয়া, ডিমের হালুয়া, গোলাপ পিঠা, নকশি পিঠা, পাটি সাপটা পিঠা ও তেলের পিঠা।
এছাড়া পরিবেশন করা হয় পান্তা ভাতের সঙ্গে আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, বাদাম ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা, মসুর ডালের ভর্তা, লইট্টা শুঁটকি ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, চ্যাপা শুঁটকি ভর্তা, টমেটো ভর্তা, বরবটি ভর্তা, ধনিয়া পাতার ভর্তা ও করলার ভাজি।
অতিথিদের জন্য পরিবেশিত হয় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কাচ্চি বিরিয়ানি ও খিচুড়ি।
ঢাকা/হাসান/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন র সদস য নববর ষ পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মিশ্রণে দায়িত্ব পালনে এসএসএফের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের জনবিচ্ছিন্ন না হয়ে বরং জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মেলবন্ধনের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘প্রধান উপদেষ্টার দরবার’ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের সকল রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসএসএফ-এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ করার জন্য ধন্যবাদ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও এসএসএফ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় একটি ক্ষুদ্র বাহিনী, তবে এর কাজের গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতা অনেক বেশি। এই বাহিনী আমার নেতৃত্বে এবং তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, এসএসএফ একটি প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল বাহিনী, যারা আমার ও রাষ্ট্রপতির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিগত ১০ মাসে এসএসএফ দেশে বিদেশে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছে। আমি এসএসএফ-এর সার্বিক পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্ট। এজন্য আমি সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসএসএফ বঙ্গভবনসহ আমার বাসস্থান, কার্যালয় এবং সব ধরনের গমনাগমনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এছাড়াও ঢাকার অভ্যন্তরে এবং বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি কক্সবাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসএসএফ অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সফলভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, দেশের বাইরেও আমার রাষ্ট্রীয় সফরগুলোতে এসএসএফ বিভিন্ন দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট দেশের প্রটোকল ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করে সফরগুলো সাফল্যমণ্ডিত করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশে আসা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি ও জাতিসংঘের মহাসচিবের রাষ্ট্রীয় সফরের সামগ্রিক নিরাপত্তা এই বাহিনী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে।
বর্তমান বিশ্বে আধুনিক প্রযুক্তি ও তথ্য আদান-প্রদান খুব সহজ হওয়ার কারণে নিরাপত্তা হুমকির ধরন ও প্রকৃতি দ্রুত পরিবর্তনশীল হওয়ার কারণে শতভাগ নিরাপত্তা দেওয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসএসএফ সুষ্ঠুভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এসএসএফ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকি পর্যালোচনা করবে এবং সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। সম্প্রতি এসএসএফ যমুনার সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করেছে। এসএসএফ একইভাবে এই কার্যালয়েরও সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করবে। এসএসএফ একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে উন্নত প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি এবং উন্নত মনোবলের সন্নিবেশে দিন দিন আরো উন্নতি সাধন করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।