জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিবেচনায় নিয়ে ২৫ বছরের কৃষি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে: সচিব
Published: 5th, May 2025 GMT
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিবেচনায় নিয়ে দেশের কৃষির উন্নয়নে ২৫ বছরের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের কৃষির আধুনিকায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এ তথ্য জানিয়েছেন। আজ সোমবার বণিক বার্তা আয়োজিত রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘কৃষি, নিরাপত্তা ও প্রাণ-প্রকৃতি’ সম্মেলনে খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা শীর্ষক প্রথম অধিবেশনে অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সচিব।
ড.
কৃষিসচিব বলেন, একটা অভিযোগ আছে, আমাদের এখানে কৃষি কমিশন হয়নি। নতুনত্ব আসেনি। কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে কৃষিতে নতুনত্ব নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা ২৫ বছর মেয়াদি একটা কৃষি পরিকল্পনা করতে যাচ্ছি। আমাদের প্রতিবছর জনসংখ্যা কত বাড়ছে; সেটি হিসাব করে আমরা সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে চাই।
কৃষির স্বাস্থ্য বললে মাটির কথা বলতে হয়। আমরা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমরা মাটির উর্বরতা অনুযায়ী কোন অঞ্চলে, কোন মাটিতে কী ফসল ভালো হবে; সেটি নির্ণয় করে ওই মাটিতে উপযুক্ত ফসল চাষের দিকে আগাব।
ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, আমাদের ডেল্টাপ্ল্যানে ছয়টি হটস্পট রয়েছে। সেগুলো ধরে কীভাবে আগালে আমরা দ্রুত উন্নতি করতে পারব সেটি নিয়ে কাজ করছি। সেখানে ৯টি থিমেটিক এলাকা ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। এটিকে আরেকটু ডেভেলাপ করার পর বিস্তারিত জানানো হবে। এছাড়া আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি পশু বা বন্যপ্রাণীর খাদ্যের দিকেও। ফলে চাহিদা এবং উৎপাদনের হিসাব করে কতটুকু উৎপাদন কীভাবে বাড়াতে হবে সেই পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হবে।
সেমিনারে অধিকার ও উন্নয়ন কর্মী খুশী কবির বলেন, ভূমির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার ও উৎপাদন নিশ্চিতে কার্যকর নীতিমালা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের খুশি কবীর।
তিনি বলেন, কৃষির সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িত ভূমি। ভূমি বন্দোবস্ত, রেজিস্ট্রেশনসহ যেসব নীতিমালা আছে তার সবগুলোতেই এখনো অনেক ত্রুটি আছে। কোর্টে যেসব মামলা আছে; তার ৭০ শতাংশ ভূমিকেন্দ্রিক। ভূমির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার ও উৎপাদন নিশ্চিতে কার্যকর নীতিমালা জরুরি। শুধু মুনাফা বা বাণিজ্যের বিষয় চিন্তা না করে কীভাবে আমরা কৃষককে, প্রাণ-প্রকৃতিকে রক্ষা করে উৎপাদন করতে পারি সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে; কিন্তু প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, কৃষিতে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। টাকার অংকে সরকারের বরাদ্দ বাড়লে সেটি আনুপাতিক হারে কমে যাচ্ছে। কৃষিতে ভর্তুকিও কমে গেছে।
সম্মেলনের ‘কৃষি উৎপাদন ও প্রাণ-প্রকৃতি’ শিরেনামে দ্বিতীয় অধিবেশনে ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন, কৃষিখাতে ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও ব্যাংকগুলো তা যথাযথভাবে পালন করছে না। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষিখাতে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে ব্যাংকের ঋণব্যবস্থাকে উন্নতি করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা এ খাতে ঋণের জন্য নির্ধারণ করে রাখলেও অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংক তা মানছে না। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে কীভাবে সাধারণ কৃষক আরও বেশি সুবিধা নিতে পারে, সে বিষয়ে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিশেষায়িত ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষায়িত নিয়ম থাকতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জনস খ য আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
৫ হাজার রুপি দিয়ে শুরু, ৩৩ বছরে অক্ষয়ের পারিশ্রমিক কতটা বেড়েছে?
বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার ভারতীয় প্রভাবশালী অভিনেতাদের অন্যতম। আসল নাম রাজীব হরি ওম ভাটিয়া। রুপালি জগতে তাকে সবাই ‘অক্ষয় কুমার’ নামেই চেনেন। তবে রাজীব হরি ওম ভাটিয়া থেকে অক্ষয় কুমার হয়ে ওঠার গল্প সিনেমাকেও হার মানায়।
কারণ অক্ষয় কুমার এক সময় ঢাকার পূর্বাণী হোটেলে বাবুর্চির কাজও করেছেন। পরবর্তীতে রুপালি জগতে পা রাখেন। আজ তিনি বলিউডের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা! নাম-খ্যাতি যেমন কুড়িয়েছেন, তেমনি অঢেল অর্থের মালিকও হয়েছেন। কিন্তু অক্ষয়ের প্রথম পারিশ্রমিক কত ছিল? গত ৩৩ বছরে তার পারিশ্রমিক কত বেড়েছে, আর এখন কত টাকার মালিক অক্ষয়?
কয়েক দিন আগে পিঙ্কভিলাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অক্ষয় কুমার। এ আলাপচারিতায় অক্ষয় কুমারকে তার প্রথম পারিশ্রমিকের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। জবাবে এই অভিনেতা বলেন, “৫ হাজার ১ রুপি।”
১৯৯১ সালে মুক্তি পায় অক্ষয় অভিনীত ‘সুগন্ধা’ সিনেমা। এ সিনেমার জন্য কি এই পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন? জবাবে অক্ষয় বলেন, “না। আমার প্রথম পারিশ্রমিকের চেকটি পেয়েছিলাম ‘দীদার’ সিনেমার জন্য। প্রমোদ চক্রবর্তীজি আমাকে ৫ হাজার ১ রুপির চেক দিয়েছিলেন। আমি ৫০ হাজার রুপিতে সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম।”
দীর্ঘ ক্যারিয়ার যাত্রার কথাও স্মরণ করেছেন অক্ষয়। ‘হেরা ফেরি’ তারকা মনে করেন, কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে তার প্রতি ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন হয়েছেন। অক্ষয় কুমার বলেন, “এটি ৭০ শতাংশ ভাগ্য, ৩০ শতাংশ কঠোর পরিশ্রম।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে অক্ষয় কুমার বলেন, “আমি মনে করি, একজন মানুষ ক্যারিয়ারে যদি সফল হয় অথবা সে যাই করুক না কেন, তার ৭০ শতাংশ ভাগ্য এবং ৩০ শতাংশ কঠোর পরিশ্রম।” তবে তরুণদের চেষ্টা চালিয়ে যেতেও উৎসাহ দিয়েছেন এই অভিনেতা।
পিঙ্কভিলার তথ্য অনুসারে, অক্ষয় কুমারের প্রথম পারিশ্রমিক ছিল ৫ হাজার ১ রুপি। এখন প্রতি সিনেমার জন্য ৯০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন এই অভিনেতা।
লাইফস্টাইল এশিয়ার বরাত দিয়ে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, অক্ষয় কুমারের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৭৪২ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বেশি)। বলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি।
১৯৮৭ সালে ‘আজ’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে অক্ষয় কুমারের। এতে ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৯১ সালে ‘সুগন্ধা’ সিনেমায় প্রথম কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খিলাড়ি’ সিনেমায় অভিনয় করে সাড়া ফেলেন অক্ষয়। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৯ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত করেছে।
অক্ষয় কুমার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘হাউজফুল ৫’। চলতি মাসে মুক্তি পেয়েছে এটি। তারকাবহুল সিনেমাটি মুক্তির পর বক্স অফিসে বেশ সাড়া ফেলেছে। ফলে আলোচনায় রয়েছেন এই অভিনেতা।
অক্ষয় কুমারের হাতে বর্তমানে চারটি সিনেমার কাজ রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে— ‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’, ‘ভূত বাংলা’, ‘হেরা ফেরি থ্রি’ ও মহেশ মাঞ্জেরেকর পরিচালিত একটি বায়োপিক।
ঢাকা/শান্ত