চার মিনিটে ১৫ লাখ টাকার মালামালসহ পাঁচ লাখ টাকা লুট
Published: 5th, May 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ডিস্ট্রিবিউটরের গোডাউনে লুটের ঘটনা ঘটেছে। মাত্র চার মিনিটের ওই ঘটনায় ১৫ লাখ টাকার মালামালসহ নগদ ৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
রবিবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে ২টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত লুটের এই ঘটনা ঘটে উপজেলার সদর ইউনিয়নের শরিফবাগ বাজারে ডিস্ট্রিবিউটর মুহাম্মদ নাসিমের গোডাউনে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, রাত ২টা ১০ মিনিটে পিক-আপ নিয়ে ১০ জনের একদল দুর্বৃত্ত গোডাউনের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। দ্রুত হাতে তারা মালামাল বের করে পিক-আপে তুলে নেয়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ঘটনা বুঝতে পেরে ধাওয়া দিলে ২টা ১৪ মিনিটে তারা পিক-আপসহ পালিয়ে যায়।
ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২টা ১০ মিনিটে একটি পিক-আপ ভ্যান এসে থামে ওই গোডাউনের সামনে। এরপর গাড়ি থেকে প্রথমে লাল শার্ট ও লুঙ্গি পরিহিত একজন ও পরে আরেকজন নামেন। ২টা ১০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের দিকে দেখা যায়, অন্তত ৬-৭ জন দুর্বৃত্ত গোডাউনের তালা ভাঙছেন। এরপর তারা গোডাউন থেকে একের পর এক কার্টুন বের করতে থাকেন তারা।
প্রায় এক মিনিট পর লাইট হাতে একজন, পরে আরেকজন নিরাপত্তারক্ষীকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। ২টা ১৪ মিনিটে এলাকাবাসী ওই পিক-আপের দিকে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়। এ সময় পিক-আপে বিভিন্ন বয়সের অন্তত নয়জন দুর্বৃত্তকে উঠতে দেখা যায়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মুহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘‘আমাকে এলাকার এক বন্ধু ফোন করে বলে, তোমার গোডাউনে মাল চুরি হইছে। ফোন পেয়ে এসে দেখি ৩০ পিস মাল নিয়ে গেছে। যার মূল্য ১৫ লাখ টাকার বেশি। ক্যাশে ছিল ৫ লাখ ৩২ হাজার ৯৩২ টাকা। তাদের শনাক্ত করতে পারিনি।’’
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো.
ডাকাতি-চুরি যেন থামছেই না
গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের আমছিমুর এলাকায় গেদু মিয়া নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তালা ভেঙে ঢুকে অন্তত ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া ২৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের বাথুলি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ওপর ট্রাক থামিয়ে চালক-হেল্পারকে আটক করে ৩০ লাখ টাকার পামওয়েল তেলসহ ট্রাক লুটের ঘটনা ঘটেছে।
আগের দিন ২৭ এপ্রিল রাতে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই উত্তর পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে মফিজ উদ্দিন (৭৫) নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অন্তত ১ লাখ নগদ টাকাসহ ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এছাড়া গত ৩১ মার্চ নৈশ প্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকওয়া ফুড প্রোডাক্ট নামে একটি কারখানায় ডাকাতির ঘটনায় মালামাল ও নগদ টাকাসহ ১৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র লুট করে ডাকাতরা।
মো. শাহীনুর কবির বলেন, ‘‘যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়। তেলসহ ট্রাক লুটের ঘটনায় ট্রাকটি উদ্ধার হয়েছে। আসামি ধরার চেষ্টা চলছে। ফুডের ঘটনায় মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। একটা ঘটনা যখন ঘটে, সেটি তুলে ধরা হয়, কিন্তু উদ্ধার হলে সেটা সেভাবে সামনে আসে না।’’
সাব্বির//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৫ ল খ ট ক র ল ট র ঘটন ১০ ম ন ট প ক আপ ব যবস ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে যুবলীগ নেতার দোকান
শত বছরের সরকারি পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করে খাসজমি করা হয়। সেই জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন প্রভাবশালী আ. হালিম। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে বন্দোবস্ত বাতিল করে প্রশাসন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই জমি ফের দখলে নিয়ে ২১টি দোকান নির্মাণ করেছেন হালিমের ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু।
দখল-বাণিজ্যের এ চিত্র দেখা গেছে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে। দখলে জড়িত মাসুদ রানা নান্টু স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ক্ষমতার দাপটে তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না।
খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার অক্ষয় ভট্টাচার্য্য গ্রামবাসীর সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে ৫৩ শতাংশ জমির ওপর পুকুরটি খনন করেন। দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিনের গড়ে তোলা সৈয়দপুর ট্রাস্টের আওতায় আসে জমিটি। বর্তমানে জমিটি ট্রাস্টের নামে রেকর্ড আছে। ১৯৬৬ সালে প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের সহায়তায় জালিয়াতি করে পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করেন আবদুল হালিম। এরপর ৯৯ বছরে জন্য বন্দোবস্ত নেন। ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর প্রশাসনের তদন্তে জালিয়াতি ধরা পড়ে। এরপর তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শান্তি মনি চাকমা অবৈধ ওই দখলদারের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করলে ওই জমি দখলে নেন আবদুল হালিমের ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু। এরপর পুকুরের জায়গা ভরাট করে চারপাশে ২১টি পাকা দোকান নির্মাণ করেন। দোকানগুলো মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছেন। ৩টি দোকানের পজেশন বিক্রি করেছেন। এভাবে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরকারি পুকুরটির রক্ষায় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কয়েকজন ভাড়াটিয়া বলেন, দোকান ভাড়া নেওয়ার সময় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন নান্টু। প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয় তাঁকে। ৩টি ঘর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকায় পজেশনও বিক্রি করে দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা অধীর কুমার ও আমিন আলী জানান, আগে এ পুকুরের পানি খাওয়া জন্য ব্যবহার করা হতো। এখনও অনেক মানুষ গোসল করেন। সরকারি পুকুর ভরাট করে দোকান করে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। এতে সরকারের কোনো লাভ হচ্ছে না। জনস্বার্থে পুকুরটি দখলমুক্ত করা দরকার।
এ বিষয়ে কথা বলতে সদর ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য মাসুদ রানা নান্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর দাবি, ১৯৬৬ সালে তাঁর বাবা আ. হালিম জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জমিটি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন। এ কারণে তারা ৬ ভাইবোন মিলে পুকুরের পাড় ঘেঁষে কিছু পাকা ঘর করে ভাড়া দিয়েছেন। কোনো পজেশন বিক্রি করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, কিছু আইনি জটিলতায় পুকুরটি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নাছিমুল হক জানান, সরকারি পুকুর জনগণের সম্পত্তি। দ্রুত পুকুরটি দখলমুক্ত করা প্রয়োজন।
ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, পুকুরটি সৈয়দপুর ট্রাস্টের নামে রয়েছে। সরকারি সম্পদ উদ্ধার করা হবে। অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।