ব্যাপক দর পতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। গতকাল বুধবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯৩ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৮১টিই দর হারিয়েছে। এতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৪৯ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ হারিয়ে ৪৮০২ পয়েন্টে নেমেছে। হার বিবেচনায়
গতকালের পতন ২০১৩ সালের ২৩ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতেও দর পতন হয়েছে।
দর পতনের পেছনে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রভাব থাকতে পারে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ। গতকাল পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও বড় দর পতন হয়েছে। ভারতের শেয়ারবাজারে শুরুর দিকে পতন হলেও শেষ পর্যন্ত সূচক সামান্য বেড়েছে। বিশ্বের অন্য কোনো শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। নানা কারণে আস্থাহীনতায় ক্রমাগত দর পতনের ধারায় ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশের বাজার।
দেশের শেয়ারবাজারে খারাপ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা ড.
গতকাল দিনের লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুই হয় দর পতনে। প্রথম ১৫ মিনিটেই প্রায় সব শেয়ার দর হারায়। মাত্র ৫ মিনিটে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫০ পয়েন্ট হারায়। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় সবার মধ্যে। এর ১৩ মিনিট পর আরও প্রায় ৪৪ পয়েন্টসহ ৯৪ পয়েন্ট হারায়। এরপর সামান্য ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত প্রায় সব শেয়ারের দর পতনে ডিএসইএক্স ১৪৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮০২ পয়েন্টে নামে। সূচকের অবস্থান ২০২০ সালের ২৫ আগস্টের পর সর্বনিম্ন।
ব্রোকারেজ হাউস প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, গতকালের লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের বাইরে অন্য কোনো নেতিবাচক খবর ছিল না। তাই সবাই এটিকে দর পতনের কারণ বলে মনে করছেন। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যাখ্যাও নেই।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপক প্রভাব বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে পড়েছিল। তবে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধাবস্থার প্রভাব ওই যুদ্ধের মতো নয়। তাঁর মতে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা রয়েছে, যা বড় আকারে প্রতিফলিত হয়েছে।
অল্প বিক্রিতেই বড় পতন
গতকালের লেনদেনের শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটে প্রায় ৯০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। এর মধ্যে বিচ হ্যাচারি নামে একটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের পরিমাণই ছিল প্রায় ১৫ কোটি টাকার। এ শেয়ারের দর পতনে সূচকে তেমন কোনো প্রভাবই ছিল না। সূচকে বড় প্রভাব ছিল ইসলামী ব্যাংক, ওয়ালটন, বিএটি
বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, গ্রামীণফোনসহ বৃহৎ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের দর পতন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র র শ য় রব জ র র ল নদ ন দর পতন র পতন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন
ব্যাপক দরপতন চলছে দেশের শেয়ারবাজারে। আজ বুধবার দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া প্রায় সব শেয়ারকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
এতে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১১৭ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়। সূচক পতনের হার ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
দুপুর সাড়ে ১২টায় ১২৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ হারিয়ে ৪৮২৩ পয়েন্ট পর্যন্ত নামতে দেখা গেছে। পতনের হার বিবেচনায় ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির পর এটাই সর্বোচ্চ দর পতন। ওই দিন সূচক হারিয়েছিল ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
ব্যাপক দরপতনে আতঙ্ক বিরাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। গত কয়েক বছর ধরেই শেয়ারবাজারে মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে। তবে আজকের পতনের ভালো ব্যাখ্যা মিলছে না।
পেহেলগাম হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় প্রতিশোধ হিসেবে ভারত ‘অপারেশন সিন্ধুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালিয়েছে। এর পর পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের বেশ ক্ষয়ক্ষতি খবর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনার কারণে এমন পতন হতে পারে।
লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দুপুর ১টা পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৯৩টির কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে।
এর মধ্যে ৩৭৭টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। এ সময় সামান্য দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল মাত্র ৮ শেয়ার।
দিনের লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টায় ৩৬৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হতে দেখা যায়।
প্রায় সব শেয়ারের দর পতনে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স এ সময় ১১৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময়ের সূচক পতনের হার ছিল ২ দশমিক ৩০ শতাংশ।
আজ সকাল ১০টায় দিনের লেনদেন শুরু হয় পতনে। প্রথম ১৮ মিনিটে ডিএসইএক্স প্রায় ৯৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮৫৭ পয়েন্টে নেমেছিল।
ভারত-পাকিস্তানের শেয়ারবাজার
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরুর ফলে উভয় দেশের শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, যা এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও প্রভাব ফেলেছে।
ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ এর কেএসই-১০০ সূচক বুধবার সকালে ৬৫০০ পয়েন্ট বা ৫.৫ শতাংশ পতন হয়। এটি ২০২৩ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় একদিনের পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এদিকে ভারতের শেয়ারবাজারে প্রথমদিকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও, বাজার দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরে পায়। বুধবার সকালে সেনসেক্স সূচক ৬৯২ পয়েন্ট হ্রাস পেলেও পরে তা ২০০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে ৮০,৮৪৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। নিফটি ৫০ সূচকও প্রাথমিক পতনের পর ২৪,৪৩৮ পয়েন্টে পৌঁছাতে দেখা গেছে।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রভাব এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও দেখা গেছে। সিঙ্গাপুরের এসজিএক্স নিফটি সূচক বুধবার সকালে ১ দশমিক ২০ শতাংশ হ্রাস পেলেও পরে তা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হ্রাসে সীমাবদ্ধ থাকে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্ক মনোভাবের প্রতিফলন।