‘এক মিনিটের গানে-রিলে আনেক চমক আছে কিন্তু তা দীর্ঘ সময়ের হয় না’
Published: 8th, May 2025 GMT
কর্মে, মননে পুরোপুরি রাবীন্দ্রিক তিনি। পরনে ঢাকাই শাড়ি, চুলে ফুল আর কণ্ঠে জাদুকরি সুর– সব জায়গাতে রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। বলা যায়, বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে রবীন্দ্রসংগীতের প্রচার-প্রসার ও বিস্তারে তিনি অগ্রজ একজন। কথা বলায় সদাবিনয়ী ভাব, মুখে লেগে থাকা আবছা হাসির রেখা বিশ্বকবির গল্পের চরিত্রগুলোকে বার বার মনে করিয়ে দেয় যেন।
সময় এখন বড় অস্থির। দ্রুতগতির ইন্টারনেটের সঙ্গে মানুষের জীবনযাপনও হয়ে উঠেছে গতিশীল। বন্যার জীবন সেই গতিতে তাল মেলায়নি। তিনি এখনও পুরোনোপন্থি বলে দাবি করলেন।
শিল্পীর ভাষ্য, ‘আমি কর্মে, মননে পুরোনোপন্থি। এখন গতির সময়। দ্রুতগতি। সেখানে অস্থির মানুষ এক মিনিটের গান শুনে হয়তো আনন্দ পাচ্ছেন। আমার মনে হয় না এতে শিল্পীর স্থায়িত্ব তৈরি হচ্ছে। এক মিনিটের গানে, রিলে অনেক চমক আছে। মানুষ শুধু গান কেন, যে কোনো কিছুতেই চমক চাইছে। চমক দীর্ঘ সময়ের হয় না। রবীন্দ্রনাথের গান নিষ্ঠা আর ভালোবাসার বিষয়। জানি না, সবাই আমার সঙ্গে একমত হবেন কিনা। যারা রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেন তাদের আশ্রয় রবীন্দ্রনাথ– আমার জীবন দিয়ে তা উপলব্ধি করেছি।’
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা শুধু নিজ দেশে নন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ব্যাপকভাবে সমাদৃত। বাংলাদেশ ও ভারতে তাঁর বহুসংখ্যক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে ২০টি উল্লেখযোগ্য।
অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন বন্যা। সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ভারতে। রবীন্দ্রসংগীত ছাড়াও ধ্রুপদি, টপ্পা ও কীর্তনের ওপর শিক্ষা লাভ করেছেন। প্রাথমিক অবস্থায় বন্যা ‘ছায়ানট’ ও পরে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতেও তিনি গান শিখেছেন। শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সংগীতজ্ঞদের কাছ থেকে গানের তালিম নিয়েছেন। জীবনজুড়ে তিনি রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাটা নিয়ে চর্চায় থেকেছেন। রবীন্দ্রনাথকে আত্মস্থ করেছেন।
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে আত্মস্থ করার চেষ্টা সবসময়ই করে যাচ্ছি। মনে রাখতে হবে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, শিল্প প্রাসঙ্গিক না হলে সেই শিল্প মৃত। রবীন্দ্রনাথের সময়ে যে ভাবে গান গাওয়া হতো, তা আমাদের সময়ে বদলে গিয়েছিল। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রেও তা বদলাবে। আমি যে প্রক্রিয়াতে রবীন্দ্রসংগীতকে ধারণ করি না কেন গানের আত্মমগ্নতায় যেন কোনো ঘাটতি না থাকে। এই আত্মমগ্নতা থাকলেই রবীন্দ্রসংগীত আত্মস্থ করা হয়ে ওঠে।’
কর্মজীবনে বন্যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন হিসেবে কর্মরত। তিনি ‘সুরের ধারা’ নামের একটি সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কাজের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ অর্জন করেছেন।
সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কাজের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১৭ সালে ভারত সরকার তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘বঙ্গভূষণ’ পদক দিয়ে সম্মানিত করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এক কোটির অধিক নতুন সদস্য সংগ্রহে কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
এক কোটির অধিক নতুস সদস্য সংগ্রহে দুই মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী ১৫ মে থেকে শুরু হয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) প্রাথমিক সদস্য নবায়ন সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকের পর রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, “এবার শুধুমাত্র নবায়ন নয়, আমাদের কাজ শুরু হবে আগামী ১৫ মে থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত। দুই মাস এটি চলবে সেটা হচ্ছে নবায়ন এবং দলের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য দ্রুত গতিতে দেশব্যাপী আমাদের যে টার্গেট, আমরা টার্গেট করেছি প্রায় এক কোটির অধিক এবার প্রাথমিক সদস্য করব ইনশাল্লাহ।”
আরো পড়ুন:
হাসনাতের ওপর হামলায় বিএনপি নেতা আসামি, প্রতিবাদে মানববন্ধন
দল ছেড়ে ইসলামী আন্দোলনে মোস্তাফিজুর, যা বলছেন বিএনপি নেতারা
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আপনারা জানেন যে, বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী যে দুঃসময় গেছে, সেই দুঃসময় স্বাভাবিকভাবে কোনো রাজনৈতিক কার্যত্রম করা যায়নি। আপনারা দেখেছেন, প্রায় দিনের পর দিন তারা এই দলীয় কার্যালয় আক্রমণ করেছে। আমাদের দলের প্রয়োজনীয় যে জিনিসপত্র থাকে-কম্পিউটার, টাইপ টাইটার, ফ্যাক্স মেশিন ইত্যাদি তারা ভাঙচুর করেছে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার গণতন্ত্রের জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, পলিটিক্যাল পার্টিগুলো প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠান একটি সুষ্ঠু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে। সেই নিয়ম-শৃঙ্খলাকে একেবারে পর্যুদস্ত করার জন্য এবং একচ্ছত্র একদলীয় দুঃশাসনকে কায়েম রাখার জন্য তারা বিরোধীদলগুলোর ওপর মুহূর্মুহূ আক্রমণ করেছে। এই দলীয় কার্যালয় কতবার যে ভাঙচুর করেছে, তছনছ করেছে, আমাদের কম্পিউটার, দলিল, ফাইল-সব রাস্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। অনেক কিছু তারা এখান থেকে নিয়ে গেছে। সেই পরিস্থিতিতে আবার নতুন করে পুনর্গঠন করা আমাদের জন্য কঠিন ব্যাপার, সেটা আমাদের করতে হচ্ছে। আমাদের দল করতে কত লোক আগ্রহী, সেটাও আমাদের যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে, সেটি এই অভিযানের মধ্য দিয়ে জানতে পারব।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত প্রমুখ ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/এসবি