নেত্রকোনায় অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে এক গৃহবধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগে দলীয় পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত হওয়া পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় সালমানকে প্রধান আসামি করে তাঁর অন্তত আটজন সহযোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০ জনকে। মামলার পর সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার অন্য আসামি হলেন উৎস হোসেন, অপু মিয়া, নীরব মিয়া, সুব্রত দাস, পিয়াস মিয়া, রিজন মিয়া ও জীবন চন্দ্র। তাঁদের সবার বয়স ২৩ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূর বাবার বাড়ি পূর্বধলা উপজেলায়। তিনি স্বামীসহ ঢাকায় থাকেন। কয়েক দিন আগে তিনি বাবার বাড়ি গিয়েছিলেন। তাঁর চাচা ঢাকায় অ্যাম্বুলেন্স চালান। গত মঙ্গলবার তাঁর চাচা সেখান থেকে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে পূর্বধলায় আসেন। পরে রোগীকে রেখে তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে রাতে ওই নারীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলার বিরিশিরি-শ্যামগঞ্জ সড়কের জালশুকা এলাকায় পৌঁছালে সালমান রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক তাঁদের থামান। পরে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে ওই নারীকে শ্লীলতাহানি করা হয়। এ সময় বাধা দিলে ওই নারী ও তাঁর চাচাকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় সালমানকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় কমিটির পদ থেকে বহিষ্কার করে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথম আলোতে ‘নেত্রকোনায় গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ ঘটনায় মামলার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে সালমানের পাঁচ সহযোগী মেহেদী হাসান, রেদুয়ান আহম্মদ, রাকিব হাসান, গৌরব কানু ও ফরহাদ করিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, মামলার সন্দিগ্ধ পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সালমানসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ হবধ র প র বধল ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ

চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।

এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”

এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।

অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ