নীরবতা কি কখনও গর্জন করতে পারে? দেহভাষা কি হয়ে উঠতে পারে প্রতিবাদের অস্ত্র? এমন প্রশ্ন তুলে ধরে আজ সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রমী নাট্যপ্রযোজনা ‘দ্রোহের রক্ত কদম’। ‘মনসুন রেভল্যুশন স্পিরিট’-এক সময়োপযোগী ভাবনার বীজ নিয়ে নাটকটি মঞ্চে আনছে চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন ‘এথেরা: অব্যক্ত প্রতিধ্বনি’। শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইরা আহমেদ। সহকারী নির্দেশক হিসেবে যুক্ত আছেন বিশ্বনাথ ভৌমিক।

‘দ্রোহের রক্ত কদম’ নাটকে উঠে এসেছে সমাজের গভীর অসংগতি, অসাম্য, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং একে অপরকে টেনে নিচে নামানোর প্রবণতা। নির্মাতা জানিয়েছেন, ‘আধুনিক সমাজে যে আত্মকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতা ও সম্পর্কের বিচ্ছিন্নতা দানা বেঁধেছে, তা প্রতীকী ভাষায় প্রকাশ পেয়েছে এই নাটকে।’ ‘দ্রোহের রক্ত কদম’ প্রসঙ্গে নির্দেশক ইরা আহমেদ বলেন, ‘এটি কেবল একটি নাটক নয়–এটি এক সামাজিক অভ্যুত্থান। এখানে সংলাপ মুখ্য নয়; বরং শরীরই হয়ে উঠেছে ভাষা। প্রতিটি নৈঃশব্দ্য, প্রতিটি ভঙ্গিমা যেন এক একক প্রতিবাদের ছাপ।’

নাটকটির মূল উপজীব্য সেই নিঃশব্দ ক্ষোভ, যা দমিত মানুষের অন্তরে জন্ম নেয়, যখন রাষ্ট্রব্যবস্থা মানুষের স্বপ্ন, বাকস্বাধীনতা ও অস্তিত্বকে গলা টিপে ধরে। সেই ক্ষোভই রক্তের মতো ছড়িয়ে পড়ে চরিত্রের প্রতিটি চিত্রায়ণে। ‘দ্রোহের রক্ত কদম’ যেন সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক বিকল্প ভবিষ্যতের আহ্বান জানায়।

নাটকের মঞ্চ ও সংগীত পরিকল্পনায় রয়েছেন ইন্দ্রজিৎ শীল এবং আলোক পরিকল্পনায় আসলাম উদ্দিন। প্রযোজনাটিতে অভিনয় করেছেন একঝাঁক তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী। তারা হলেন– রাসিফ বিন ফাহিম, জেরিন আকতার নোশ্নি, সুমাইয়া তাবাসসুম, মাহামুদুল ইসলাম বাঁধন, মেহেদী হাসান মুন্না, পার্থ সেন, শাহ্‌রিয়া শাকিল, ফাইরুয সাদেক, তানজীলা আক্তার এবং মেহেদী হাসান সাদী।

নিরীক্ষাধর্মী এই নাট্যপ্রযোজনায় দর্শকেরা শুধু বিনোদন নয়; বরং এক নতুন মঞ্চানুভূতির মুখোমুখি হবেন; যেখানে প্রতিবাদ উচ্চারিত হয় নীরবতার ভাষায়, আর দ্রোহ ফুল ফোটায় রক্তরাঙা কদমের রূপকে।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডাকাতি, বিদেশি মুদ্রাসহ গ্রেপ্তার ১৩

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের সামনে ডাকাতির ঘটনায় প্রায় ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রা লুটের ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ।

শুক্রবার (৪ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুলাই বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মুখোশধারী ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ১০-১২ জনের একটি দল এমএম আয়াত ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের একটি প্রাইভেটকার গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে প্রায় ৪ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ সৌদি রিয়াল, ৪০০ ওমানি রিয়াল, ৩০ কুয়েতি দিনার ও ১২ হাজার ৩৫০ দিরহাম লুট করে নেয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটিরই এক কর্মচারী মো. তুহিনকে (২৮) আটক করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। 

পুলিশ জানায়, প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী তুহিন ও অন্যান্য সহযোগীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই ডাকাতির ছক আঁকেন। ঘটনার দিন উবার রাইড শেয়ারে উত্তরা যাওয়ার সময় তুহিন তার লাইভ লোকেশন হোয়াটসঅ্যাপে দলীয় সহযোগীদের পাঠান। এরপর ঠিক নির্ধারিত স্থানে এসে দলটি গাড়ির গতিরোধ করে মুদ্রাভর্তি লাগেজ নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে তুহিনের দেওয়া তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ এবং ডিবির যৌথ অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয় তালহা নূর (৩৫), শারমিন (২৫), মো. শাহিন শিকদার (৩৭), ইয়াসিন আরাফাত (৩৬), মো. রফিকুল ইসলাম (৩৬), মো. শুভ হাওলাদারসহ (২৫) মোট ১৩ জনকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২ লাখ ৬৯ হাজার ২৪০ সৌদি রিয়াল, যার মূল্য প্রায় ৮৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় এ ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার এবং অবশিষ্ট লুণ্ঠিত অর্থ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ