গিলের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারতের রান পাহাড়, শুরুতেই চাপে ইংল্যান্ড
Published: 4th, July 2025 GMT
বার্মিংহ্যামের আকাশে ভাসছিল সূর্যের আলো। কিন্তু ইংল্যান্ডের ওপর নেমে এসেছিল রানের মেঘলা পাহাড়। শুভমান গিলের ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে ভর করে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন ভারতের করা ৫৮৭ রানের জবাবে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৭ রান তুলে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। ভারতের চেয়ে এখনো তারা পিছিয়ে আছে ৫১০ রানে।
ইনিংসের শুরুতেই যেন ছন্দ হারায় ইংল্যান্ড। মাত্র তৃতীয় ওভারেই আকাশ দীপ তুলে নেন বেন ডাকেট ও ওলি পোপকে। দুজনই ফেরেন রানের খাতা না খুলেই। এরপর মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হন জ্যাক ক্রাউলি। যিনি করেন ১৯ রান।
এরপর মাঠে নামেন অভিজ্ঞ জো রুট ও উদীয়মান হ্যারি ব্রুক, যাদের ব্যাটেই টিকে আছে ইংল্যান্ডের আশার আলো। রুট ১৮ ও ব্রুক ৩০ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তারা আজ শুক্রবার বিকেলে তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবেন।
আরো পড়ুন:
ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে ভাস্বর গিল
গিলের সেঞ্চুরি, জয়সওয়ালের আক্ষেপ
তবে দিনের নায়ক একটিই নাম শুভমান গিল। ব্যাট হাতে একার হাতে রচনা করেছেন ইতিহাস। ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে তিনিই প্রথম যিনি করলেন টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি।
শুধু রেকর্ডই নয়, এই ইনিংস গড়ে দিয়েছে এক নান্দনিক মহাকাব্য। ৩৮৭ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকিয়েছেন ৩০টি চার ও ৩টি ছক্কা। থেমেছেন ২৬৯ রানে। অল্পের জন্য বঞ্চিত হয়েছেন ট্রিপল সেঞ্চুরি থেকে।
তার আগে সম্ভাবনা জাগিয়েও সেঞ্চুরি মিস করেছেন দুই সঙ্গী যশস্বী জয়সওয়াল (৮৭) ও রবীন্দ্র জাদেজা (৮৯)। তবু, দলগত প্রচেষ্টায় ১৫১ ওভার লম্বা ইনিংসে ভারত গড়ে তোলে ৫৮৭ রানের পাহাড়।
বল হাতে ইংল্যান্ডের শোয়াইব বশির ৩টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও জশ টাঙ।
এখন সব চোখ ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপে। রুট ও ব্রুকের কাঁধে ভর দিয়েই টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাবে ইংল্যান্ড। কিন্তু প্রশ্ন একটাই। ভারতের রান পাহাড় টপকে তারা কি লিড নিতে পারবে?
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড বল স ঞ চ র
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।