ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি হলেন শমীক ভট্টাচার্য। বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে রাজ্য বিজেপির সভাপতির আসনে বসিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার সায়েন্সসিটির ময়দানে আয়োজিত এক কর্মিসভায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ উপস্থিত থেকে শমীক ভট্টাচার্যের হাতে তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি নিয়োগের সনদ।

এই সনদ পেয়ে এবং আসন্ন রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কিছুটা হলেও বদলে যান শমীক ভট্টাচার্য। এতদিন যে বিজেপি হিন্দুত্ব নিয়ে মাঠ গরম রেখেছেন, সেই বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুর কিছুটা বদলে বললেন, ‘আমরা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নই। মুসলিমদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ নয়। আমাদের যুদ্ধ তাদের যে ছেলেটা পাথর ছুড়ছে, সেই পাথরটা সরিয়ে বই ধরিয়ে দেওয়ার। আমাদের যুদ্ধ, যে ছেলেটা তলোয়ার হাতে তুলে নিয়ে অশান্তি বাধায়, তার হাত থেকে তলোয়ার সরিয়ে কলম ধরানোর। আমরা চাই দুর্গাপুজোর বিসর্জন এবং মহররমের তাজিয়া মিছিল একসঙ্গে বেরোবে।’

শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন বিজেপিকে ভোট দেবেন না, দিতে হবে না। কিন্তু গত তিন বছরে যত রাজনৈতিক খুন হয়েছে, তার ৯০ শতাংশ মুসলিম। তৃণমূল এই রাজ্যে যে সমাজ তৈরি করেছে, তাতে মারা যাচ্ছে মুসলিম, মারছেও মুসলিম।’

বিজেপি হিন্দুত্বের তাস নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে নামার ফলে মুসলিমরা যে আরও এককাট্টা হয়ে গেছে, সেটা হয়তো বিজেপি অনুধাবন করে সুর কিছুটা হলেও বদলে দিয়েছে। তাই হিন্দুত্বের পথে এবার ভারসাম্য রাখতে অনেকটা সুর বদলে দিয়েছেন নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।

শমীক অবশ্য এ কথাও বলেছেন, ‘হিন্দুত্ব একটা বহমানতা। হিন্দু শব্দের মধ্যেই রয়েছে বহুত্ববাদী আদর্শ।’

শমীক ভট্টাচার্য এই রাজ্য থেকে তৃণমূলকে হারাতে দলীয় পতাকা ছাড়া সবাইকে একজোট হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান। তিনি বাম-কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তৃণমূলকে হারাতে চাইলে আসুন। কয়েক দিন নিজেদের পতাকা আলমারির ওপর তুলে রাখুন। আগে তৃণমূলকে হারান, তারপর যে যার মতো পথ বেছে নিন।’

শমীকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হতে চায়। তবে হিন্দু মুসলিম ভাগ করে তৃণমূলকে সাহায্য করছে বিজেপি।

অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেছেন, আজ হঠাৎ করে শমীক ভট্টাচার্যের বহুত্ববাদের কথা মনে পড়ে গেল? তবে কি হিন্দু ভোট নিয়ে বিজেপির ভরসায় চিড় ধরল?

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ