‎‎শুধু ঋতুপর্ণা চাকমা কেন, অনেকেরই কল্পনাতে ছিল না! কিন্ত যা কল্পনা করেনি বেশির ভাগ মানুষ, সেটাই করে দেখাল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মেয়েরা।

‎বুধবার মিয়ানমারকে হারানোর পর বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ ড্র হওয়ায় ইতিহাসের অংশ হতে অপেক্ষা করতে হয়নি পিটার বাটলারের দলকে৷ সেদিন রাতেই সুখবর পাওয়ার পর দলের অনেক ফুটবলারই আনন্দে আত্মহারা হয়েছিলেন।

আরও পড়ুনসাহেব আলীতে শুরু, বাটলারে স্বপ্নপূরণ২ ঘণ্টা আগে

‎মিয়ানমার ম্যাচে জোড়া গোল করা ঋতুপর্ণার কাছে এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ইয়াঙ্গুন থেকে বাফুফের পাঠানো ভিডিও বার্তায় তেমনটাই বলেছেন এই তারকা ফরোয়ার্ড, ‘এই অনুভূতি আসলে বলে প্রকাশ করতে পারব না। আমরা যখন জানতে পারি যে আমরা কোয়ালিফাই করেছি, এটা আসলে কল্পনার বাইরে ছিল। আমরা বহু বছর পর এত কষ্ট করে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছি। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।’

মিয়ানমারের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন ঋতুপর্ণা। সতীর্থদের সঙ্গে তাঁর উদ্‌যাপন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রবাসীর টাকা, গ্রামবাসীর শ্রমে ৩ কিমি রাস্তা সংস্কার

হবিগঞ্জের বাহুবলে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন মিরপুর ইউনিয়নের পূর্ব লাকুড়িপাড়া গ্রামবাসী। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল রাস্তাটি মেরামতে জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। প্রতিকার না পেয়ে স্থানীয় প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতায় নিজেরাই সংস্কারের উদ্যোগ নেন।    
উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ভূগলি থেকে পূর্ব লাকুড়িপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ফদ্রখলা, রাউদাগাঁও, দত্তপাড়া, নোয়াগাঁও, লাকুড়িপাড়াসহ ৬-৭টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। রাস্তাটি কয়েক বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। কাদাপানিতে পথচারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, নারী ও বয়স্কদের চলাফেরায় বেশি ভোগান্তি হতো।
রাস্তাটি সংস্কারের বিষয় নিয়ে এলাকার প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন গ্রামবাসী। কয়েকজন প্রবাসী অর্থ সহায়তা পাঠালে এলাকার যুবকেরা স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেন। গতকাল শুক্রবার সকালে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। প্রথম দিনে রাস্তাটির চার ভাগের এক ভাগ সংস্কার করা হয়েছে। 
পূর্ব লাকুড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জুবাইদ মিয়া জানান, রাস্তাটি সংস্কারে তারা বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।  কোনো কাজ হয়নি। গ্রামের প্রবাসীদের সহায়তায় রাস্তাটির সংস্কার শুরু হয়েছে। রাস্তাটি এবার অন্তত চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশাবাদ জানান তিনি। 
স্থানীয় অটোরিকশাচালক আয়াত আলী জানান, ভাঙাচোরা সড়কে গাড়ির ক্ষতি হয়। ঝাঁকুনির পাশাপাশি সময়ও বেশি লাগে। এ কারণে যাত্রীরা বেশি টাকা দিতে চাইলেও এই সড়কে যেতে মন চায় না। তারা চান রাস্তাটি স্থায়ীভাবে পাকা করা হোক। 
রজবুন্নেছা নামে একজন বাসিন্দা বলেন, গ্রামের কোনো রোগী নিয়ে জরুরিভাবে হাসপাতালে যেতে চাইলে ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে সম্ভব হয় না। কোনো ধরনের যানবাহন মেলে না। চালকেরা কেউ রাজি হলেও অনেক বেশি ভাড়া দাবি করেন। 
মাহি নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, বৃষ্টি হলে রাস্তায় চলাচল করা যায় না, শার্ট-প্যান্ট ময়লায় নষ্ট হয়। 
প্রবাসীর অর্থায়ন ও গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শামীম মিয়া। তিনি বলেন, রাস্তাটির সংস্কারে দু’বার টেন্ডার প্রক্রিয়া হলেও কোনো কারণে তা বাতিল হয়েছে। ছোটখাটো কাজ হলে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে করা যেত। এটি তাদের সক্ষমতার বাইরে। রাস্তাটি সংস্কারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। 
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল জানান, রাস্তাটি সংস্কারে টেন্ডার হয়েছিল। ঠিকাদারের মৃত্যুর কারণে তা বাতিল হয়েছে। ফের টেন্ডারের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। 
বাহুবলের ইউএনও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রবাসীরা যেভাবে এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। রাস্তাটি শিগগিরই পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ