পাঁচ বছর আগে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর আগামীকাল শনিবার কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। তবে সম্মেলন বাতিল করার দাবিতে দলের একটি অংশ আন্দোলনে যাওয়ায় তা আর হচ্ছে না। বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বাজিতপুর উপজেলা কমিটির নেতাদের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।

এতে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব গঠনের বিষয়টি ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ বিভক্তিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনের ব্যাপারে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দলে মতবিরোধ আছে। এ অবস্থায় জোর করে নেতৃত্ব ঘোষণা করা দলের জন্য ভালো হবে না। এ কারণেই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার সঙ্গে আলোচনা করে নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।

নেতা-কর্মীরা জানান, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান (মঞ্জু) বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৮ মে মারা যান। তখন দলটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মনিরুজ্জামান। পরে শেখ মজিবুর রহমান (ইকবাল) সভাপতি হন এবং মনিরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক রাখা হয়। এরপর পেরিয়ে যায় ১০ বছর। পাঁচ বছর আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে গঠিত হয় আহ্বায়ক কমিটি। তখন বলা হয়েছিল, যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে, কিন্তু তা আর হয়নি।

পাঁচ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয়। শনিবার বাজিতপুরের নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া মাঠে সম্মেলন উদ্বোধনের কথা ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) শরিফুল আলমের। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খানের। তবে সম্মেলন ঘিরে শুরু হয় বিরোধ। পৌর বিএনপির সভাপতি এহসান কুফিয়ার নেতৃত্বে একাংশ সম্মেলনের বিরোধিতা করেন। তাঁদের মধ্যে আছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কাইয়ুম খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর জলিল, জেলা যুবদলের সহসভাপতি শাহ আলম, সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, হালিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাজল ভূঁইয়াসহ উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেকে।

পক্ষটির ভাষ্য, মজিবুর ও মনিরুজ্জামান নতুন করে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে গিয়ে দলের বড় অংশকে বাদ দিয়ে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের মূল দাবি ছিল, সবাইকে নিয়ে সম্মেলন আয়োজনের। এ দাবিতে গত মঙ্গলবার বাঁশমহলে সমাবেশ ও বিক্ষোভ হয়। সমাবেশ থেকে জোরালোভাবে সম্মেলন বাতিলের দাবি তোলা হয়। এরপর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়ে।

এহসান কুফিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ভালোর জন্য সম্মেলন স্থগিত চেয়েছি। সম্মেলন স্থগিত হওয়ায় দল রক্ষা পাবে। আমাদের একটাই চাওয়া, কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।’

ফোন বন্ধ থাকায় আহ্বায়ক শেখ মজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মনিরুজ্জামান ফোন ধরেননি। তবে তাঁদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক বলেন, প্রতিপক্ষের দাবিগুলো হালকা ও ব্যক্তিস্বার্থপরায়ণ। এক পক্ষের না চাওয়ার কারণে একেবারে শেষমুহূর্তে সম্মেলন বাতিল হওয়ায় দলের বড় অংশের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিভক্তি আরও বাড়বে। ভালোর চেয়ে মন্দ হবে বেশি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন র জ জ ম ন জ ব র রহম ন ব এনপ র স

এছাড়াও পড়ুন:

এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন পেছাল

দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের (২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭) সময় আরও ৪৫ দিন বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই সময়সীমা অনুসারে শিগগিরই নির্বাচন আয়োজনের পুনঃতপশিল ঘোষণা করবে এফবিসিসিআই নির্বাচন বোর্ড। 

গতকাল বুধবার এফবিসিসিআইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ১৮ জুন এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে এফবিসিসিআই নির্বাচন বোর্ড। তখন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ সেপ্টেম্বর।

এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন হবে ২০২৫ সালের নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, তাতে পরিচালনা পর্ষদের আকার ৮০ থেকে কমে ৪৬ জনে আসবে। এই ৪৬ সদস্যের মধ্যে থাকবেন একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহসভাপতি ও দু’জন সহসভাপতি, যারা পরে নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমও পদত্যাগ করেন। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা ও নির্বাচনের আগে পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশাসক বসায় সরকার। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চের বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
  • এফবিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন পেছাল
  • ভালো সাংবাদিকতা করলে ছাপা পত্রিকারও সম্ভাবনা আছে