কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশ দলের জন্য সিরিজে ফেরার লড়াই। জিতলে সিরিজে সমতা করবে মেহেদী মিরাজের দল। হারলে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ হারতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ ওই ম্যাচের আগের দিন দলের অনুশীলনে আসননি ডানহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন দাস। কলম্বোয় দলের অনুশীলন চললেও সেখানে নেই লিটন। জানা গেছে, আজকে (শুক্রবার) ঐচ্ছিক অনুশীলন করছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
যে কারণে সকলের অনুশলীলনে আসার বাধ্যবাধকতা নেই। লিটন তাই অনুশীলনে না এসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা না পাওয়া লিটন শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে আবার ওয়ানডে দলে ফিরেছেন। তবে এবার তার ভূমিকা ভিন্ন। আগে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করলেও লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে চারে ব্যাটিং করেছেন তিনি। তাকে মিডল অর্ডারে সেট করার কথা ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
শনিবার বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামবে। ওই ম্যাচে থাকবেন না দলের হেড কোচ ফিল সিমন্স। চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে দু’দিনের ছুটি নিয়ে ইংল্যান্ড যাচ্ছেন তিনি। সব ঠিক থাকলে ৮ জুলাই তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের আগে দলে যোগ দেবেন এই ক্যারিবীয় কোচ।
এর আগে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোয় সিরিজের প্রথম ওয়ানড ম্যাচে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে। ২৪৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ভালো শুরু করলেও ১০০ রান থেকে ১০৫ রানে যেতে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। যার শুরুটা হয় নাজমুল শান্তর রান আউট ও লিটন দাসের শূন্য রানে লেগ বিফোর হওয়ার মধ্য দিয়ে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।