বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচলে নিহত ৬৩, নিখোঁজ অনেকে, সতর্কতা জারি
Published: 4th, July 2025 GMT
টানা ভারী বৃষ্টিতে আরও পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের। রাজ্যজুড়ে ধসে পড়েছে একাধিক পাহাড়ি গ্রাম, তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ জনে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে হিমাচলের মন্ডীসহ পার্বত্য এলাকাগুলোতে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর আইএমডি।
হিমাচলের বেশিরভাগ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি। সেখানে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ অন্তত ৪০ জন। মান্ডি ছাড়াও কাংড়ায় ১৩ জন, চম্বায় ৬ জন এবং শিমলায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। আরও মৃত্যু হয়েছে বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নর, কুল্লু, লাহৌল-স্পিতি, সিরমোর, সোলান ও উনা জেলাতেও।
জানা গেছে, রাজ্যজুড়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন। ধসে গেছে শতাধিক বাড়ি। পানির তোড়ে ভেসে গেছে অন্তত ১৪টি সেতু। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ। কারণ, ৫০০-এর বেশি রাস্তা বন্ধ। এখনই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। রাজ্যের সর্বত্র জারি হয়েছে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা। আগামী সোমবার, ৭ জুলাই পর্যন্ত হিমাচলের সব জেলাতেই প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানিয়েছেন, একাধিক রাজ্য ভারী বৃষ্টির ফলে বিপর্যস্ত। গুজরাট, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে এনডিআরএফ দলও মোতায়েন করা হয়েছে।
হিমাচল সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর দাবি করেছে, এখন পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। তবে বাস্তবে এই ক্ষয়ক্ষতি আরও অনেক বেশি হতে পারে। তবে আপাতত সব নজর উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠনের দিকে। প্রশাসনের তরফে জোর কদমে চলছে উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল, রাজ্য পুলিশ এবং সেনার যৌথ টিম বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে কাজ করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের অনুষ্ঠানে ‘সৎ-যোগ্য’ লোককে ভোট দিতে বললেন পুলিশ কর্মকর্তা
জামায়াতে ইসলামীর অনুষ্ঠানে গিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তার ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আজিমপুর এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর অনুষ্ঠানে ওই বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের সহকারী কমিশনার (পেট্রোল) শাহ আলম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা-৭ আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাজী এনায়েত উল্লাহর উদ্যোগে ওই আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় খাবার বিতরণ করেন আয়োজকরা। এর আগে ঢাকা-৭ আসনে জামায়াতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল। অনুষ্ঠানে সহকারী কমিশনার শাহ আলমকে পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় বক্তব্য দিতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, ‘আগের ফ্যাসিস্ট সরকার পুরো দেশ বিক্রি করে দিয়েছে– এটা আপনারা সবাই জানেন, পত্রিকাতেও পড়েছেন। এখন একটা সুযোগ এসেছে দেশের জন্য কাজ করার। আপনারা এলাকায় কাজ করবেন, কর্মীর সংখ্যা বাড়াবেন। আমরা পুলিশ, আমাদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। দেশপ্রেমিক জনগণের সঙ্গে আমরা কাজ করব।... এখন আমাদের একটা সুযোগ আসছে ভোট বিপ্লবের। ভোটের মাধ্যমে যেন আমরা সৎ ও যোগ্য লোককে নির্বাচিত করতে পারি, আমরা সেটা চাই।’
তার এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা চলছে, সবাই নানারকম মন্তব্য করছেন। তারা বলছেন, সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মচারী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে বা বক্তব্য দিতে পারেন না।
এ প্রসঙ্গে শাহ আলম সমকালকে বলেন, ‘আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। হঠাৎ আমাকে বক্তব্য দিতে অনুরোধ করা হয়। তখন আমি এতিমদের উদ্দেশে কথা বলি। এর ধারাবাহিকতায় সৎ ও যোগ্য মানুষকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছি। এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। কিন্তু বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, তাতে এটাকে রাজনৈতিক বলে মনে হচ্ছে। আমি সারাজীবন মানুষের ভালোর জন্য কাজ করেছি। সেখানেও আমার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’
পুলিশ কর্মকর্তার ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ দেওয়ার বিষয়ে জানতে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে বারবার কল করে ও মেসেজ পাঠিয়ে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে বিষয়টি ‘খতিয়ে দেখা হচ্ছে’ বলে তিনি একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।