এনসিসি ব্যাংকের ৪০তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
Published: 4th, July 2025 GMT
ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক পিএলসির ৪০তম বার্ষিক সাধারণ সভায় সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৩% নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব মো. নূরুন নেওয়াজ সভাপতিত্বে করেন।
সভায় ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, পরিচালক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, পরিচালক সৈয়দ আসিফ নিজাম উদ্দীন, প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার, পরিচালক মো.
এ সময় ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা অনলাইনে যোগ দেন এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এছাড়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. খোরশেদ আলম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম, মো. জাকির আনাম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও মো. মনিরুল আলম (কোম্পানী সচিব) সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত হিসাব, পরিচালনা পর্ষদের প্রতিবেদন ও বহিঃ নিরীক্ষকদের প্রতিবেদন উত্থাপিত ও সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হয়।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজ সভাপতির ভাষণে ব্যাংকের ব্যবসায়িক অগ্রগতির মূল সূচকগুলো বর্ণনা দিয়ে বলেন, এনসিসি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারস্ ইকুইটি ও মোট সম্পদ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে আমাদের ক্রেডিট রেটিং ও ক্যামেলস রেটিং এ উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আগ্রাসী প্রবৃদ্ধি অর্জনের পরিবর্তে সম্পদের গুণগতমান বজায় রাখা, লো কষ্ট-নো কষ্ট তহবিল বৃদ্ধি, তহবিল খরচ হ্রাস, ফি কমিশন ভিত্তিক আয় বৃদ্ধিসহ আরো অন্যান্য বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছি। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে এনসিসি ব্যাংক ক্রমান্বয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. শামসুল আরেফিন অনলাইনে প্রদত্ত সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বলেন, এনসিসি ব্যাংক ৩২ বছরের পথ চলায় আজ বিভিন্ন আর্থিক মানদণ্ডে একটি ভালো ব্যাংক হিসেবে স্টেকহোল্ডারদের কাছে সমাদৃত হচ্ছে এবং গ্রাহকদের কাছে আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতেও গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ডিজিটাল সম্প্রসারণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং টেকসই ব্যাংকিং এর উপর আমরা গুরুত্বারোপ করবো। আমাদের মূল ফোকাস হচ্ছে এসএমই এবং রিটেইল ব্যবসার সম্প্রসারণ, শরীয়াহ-সম্মত ইসলামিক ব্যাংকিং, ফি ও কমিশনভিত্তিক আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি।
এছাড়া, এআই-চালিত সলুশোনের উন্নয়ন, নগদবিহীন লেনদেন সম্প্রসারণ, টেকসই অর্থায়ন তথা পরিবেশবান্ধব ও সবুজ প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি জোরদার করছি, যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে কেউ না থাকে। স্ট্র্যাটেজি, ইনোভেশন এবং কাস্টমার সেন্ট্রিক সেবার মাধ্যমে আমরা স্টেকহোল্ডারদের আস্থা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ য় রহ ল ড এনস স
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির পরও শান্তি ফিরছে না গাজায়
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির পর থেমেছে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ। তবে শান্তি ফেরেনি। একে তো ফিলিস্তিনিরা নিজ ঠিকানায় ফিরে ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছেন না, এরপর আবার চুক্তি অনুযায়ী এখনো গাজায় নির্ধারিত পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটিতে খাবারের সংকট কাটছে না।
বুধবার ছিল যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিন। আগের পাঁচ দিনে চুক্তি অনুযায়ী বন্দিবিনিময় করেছে হামাস ও ইসরায়েল। তবে হামাস মৃত জিম্মিদের ফেরত পাঠাতে দেরি করছে—এমন অজুহাত তুলে ইসরায়েল জানায়, গতকাল থেকে নির্ধারিত পরিমাণের অর্ধেক অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দেবে তারা। দক্ষিণ গাজার রাফা সীমান্ত ক্রসিংও আপাতত চালু না করার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে ক্রসিংটি খুলে দেওয়া হয়।
যদিও যুদ্ধবিরতির পর থেকেই দিনে নির্ধারিত ৬০০ ট্রাকের অনেক কম ত্রাণ গাজায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, এদিন তাদের মাধ্যমে মাত্র ১৩৭ ট্রাক ত্রাণ উপত্যকাটিতে সরবরাহ করা হয়েছে। এসব ট্রাকে ময়দা ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল। তবে পানির পরিমাণ ছিল কম। জ্বালানি তো ছিলই না।
যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত যেসব মানুষ গাজা নগরীতে ফিরেছেন, তাঁরা পানি নিয়ে সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের মুখে পড়ছেন। নগরীর বাসিন্দা গাদা আল কুর্দ বলেন, প্রায় সব এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। কোনো পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। আর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দা মাহমুদ এমাদ রোস্তম বলেন, কিছু ত্রাণ প্রবেশ করায় খাবারের সরবরাহ বেড়েছে। তবে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া।
এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজার ৫৩ শতাংশ এলাকা এখনো ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে নিজ ভিটেমাটিতে ফিরতে পারছেন না বাসিন্দারা। এসব এলাকায় ফিরতে যাওয়া ৬ জনসহ মোট ৯ ফিলিস্তিনিকে মঙ্গলবার হত্যা করেছেন ইসরায়েলি সেনারা। বুধবারও সুজাইয়া এলাকায় দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই বছরের বেশি সময়ে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৯৩৮।
নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে হামাস২০০৭ সালে ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে ছয় দিনের সংঘর্ষের পর থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছিল হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে সে নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। এখন কিছু এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার পর আবার নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে হামাস। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহর এলাকাগুলোর রাস্তাঘাটে হামাসের সশস্ত্র সদস্যদের উপস্থিতি বেড়েছে।
গাজার এসব এলাকায় এখন আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের হামলা না থাকলেও বিগত কয়েক দিনে হামাসের সঙ্গে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সবশেষ মঙ্গলবার সকালে হামাস নিরাপত্তা বাহিনীর এবং হিল্লেস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে।
এরই মধ্যে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, পিছমোড়া করে হাত বাঁধা সাতজনকে টেনেহিঁচড়ে গাজা নগরীর একটি চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁদের বসিয়ে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে হামাসের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ভিডিওটি গত সোমবার ধারণ করা। আর সাতজনকে হামাসের সদস্যরাই গুলি করে হত্যা করেন।
গাজায় প্রবেশ করছে ত্রাণের ট্রাক। বুধবার খান ইউনিসে