চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি-লিট দেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবর্তনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে কর্তৃপক্ষ। এতে সমাবর্তন আয়োজন কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটোওয়ারি, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফরুল্লাহ তালুকদার, তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক সহযোগী অধ্যাপক মো.

শহীদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ৫৬০ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ অনুষ্ঠানে প্রায় ১৪ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। অংশগ্রহণকারীরা সোমবার থেকে শুরু করে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিজ বিভাগ থেকে গাউন ও টুপি নিতে পারবেন। তবে সমাবর্তনের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর গাউন আবার বিভাগে জমা দিতে হবে। অন্যথায় সার্টিফিকেট ও উপহার পাবেন না অংশগ্রহণকারীরা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে বিভাগ থেকে খাবার নিতে হবে। এরপর বেলা একটার মধ্যে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের প্যান্ডেলে ঢুকতে হবে। এরপর আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্যান্ডেলের ভেতরে আমন্ত্রণপত্র ও মুঠোফোন বাদে অন্য কোনো কিছু বহন করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে আসা অতিথিদের কেউ প্যান্ডেলের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। তাঁদের জন্য বিভাগগুলোর কিছু কক্ষ বরাদ্দ রাখা হবে। অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রায় ১০০টি বাস চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। সমাবর্তনের দিন ক্যাম্পাসের ভেতরে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত গাড়ি প্রবেশ করবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ১ নম্বর গেট এলাকা পর্যন্ত আসতে পারবে। সেখান থেকে শাটল বাসে করে অংশগ্রহণকারীদের ক্যাম্পাসে আসতে হবে।

সমাবর্তনের অনুষ্ঠানের অতিথিদের আসন গ্রহণ শুরু হবে বেলা দেড়টায়। ওই দিন বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে সমাবর্তন শোভাযাত্রা হবে। তবে এতে কোনো গ্র্যাজুয়েট অংশ নিতে পারবেন না। পরে বেলা দুইটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, ডি-লিট গ্রহণ, শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য, উপাচার্যের বক্তব্য, দুই সহ-উপাচার্যের বক্তব্য মিলিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হবে বিকেল চারটায়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব’

প্রকাশ্যে গুলি করে চট্টগ্রামে একের পর এক খুনের ঘটনায় উঠে আসছে তাঁর নাম। হত্যা মামলায় তাঁকে আসামিও করেছে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার। পুলিশ তাঁকে হন্য হয়ে খুঁজলেও থেমে নেই তাঁর অপরাধ। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘সন্ত্রাসী’ মোহাম্মদ রায়হানের বিরুদ্ধে। ওই ব্যবসায়ীকে রায়হান বলেন, ‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব।’

হুমকি পাওয়া ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. একরাম। তিনি পাথরের ব্যবসা করেন। আজ সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁকে ফোন করেন সন্ত্রাসী রায়হান। পরে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো খুদে বার্তায় তাঁকে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারার হুমকি দেন।

কেন হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চাইলে ব্যবসায়ী একরাম বলেন, গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মলে ঘুরতে দেখে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি। এরপর সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না এবং বিদেশে পলাতক সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ তাঁকে হুমকি দেন। ওই হুমকির ঘটনায় তিনি পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছিলেন। এরপর মামলা তুলে নিতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে হুমকির বিষয়ে থানায় মামলা কিংবা জিডি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ী একরাম।

নগর ও জেলার বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। —আমিনুর রশিদ, সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম), চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।

একরামের স্ত্রী রুমা আক্তার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হুমকির পর রাতে বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে বলার সঙ্গে সঙ্গে সোয়াত টিমসহ পুলিশের দল বাসার সামনে পাহারায় রয়েছে। ভয়ে আমার স্বামী এখন বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। বের হলে সঙ্গে পুলিশ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনরাউজানে যুবদলকর্মী আলম খুনেও আলোচনায় ‘সন্ত্রাসী’ রায়হানের নাম২৬ অক্টোবর ২০২৫

বেপরোয়া ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। ছোট সাজ্জাদ ১৫ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর বাহিনীর দেখভাল করছেন রায়হান।

পুলিশ জানায়, হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় কারাগারে গিয়ে চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে পরিচয় হয় রায়হানের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দুজন কারাগার থেকে জামিনে বের হন। এরপর ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রায়হান। সাজ্জাদ সম্প্রতি আবারও কারাগারে গেলে রায়হান তাঁর অস্ত্রভান্ডারের দেখভাল করছেন।

জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর আগেও হুমকির বিষয়ে মামলা করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী।’

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ বলেন, নগর ও জেলার বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় সন্ত্রাসী রায়হানের নাম উঠে এসেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।

আরও পড়ুন‘আমি রায়হান, মাথার খুলি উড়ায় ফেলব’০৮ আগস্ট ২০২৫একের পর এক খুনে রায়হানের নাম

চট্টগ্রামে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী জনসংযোগে অংশ নেওয়া ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে (৪৩) গুলি করে হত্যা করা হয় ৫ নভেম্বর। এর তিন দিন আগে সরোয়ারকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রায়হানের বিরুদ্ধে। নিহত সরোয়ারের বাবা জানান, রায়হান সরোয়ারকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে।’

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতলে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে। এই হত্যা মামলায় রায়হানকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, রাজনৈতিক এই হত্যাকাণ্ডে রায়হান ভাড়াটে হিসেবে কাজ করেছেন। জীবিত অবস্থায় মুঠোফোনে আলমগীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আলমগীরকেও রায়হানের নাম উল্লেখ করে শঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—তিন দিন আগে হুমকি পেয়েছিলেন সরোয়ার০৬ নভেম্বর ২০২৫

পুলিশ জানায়, হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় কারাগারে গিয়ে চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে পরিচয় হয় রায়হানের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দুজন কারাগার থেকে জামিনে বের হন। এরপর ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রায়হান। সাজ্জাদ সম্প্রতি আবারও কারাগারে গেলে রায়হান তাঁর অস্ত্রভান্ডারের দেখভাল করছেন।

গত ২৫ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট এলাকার এক ওষুধের দোকানিকেও মুঠোফোনে হুমকি দেন রায়হান। তিনি ওই দোকানিকে বলেন, ‘আমি ঢাকাইয়া আকবর খুনের মামলার ২ নম্বর আসামি রায়হান, মাথার খুলি উড়ায় ফেলব। ...আকবর সি বিচে কীভাবে পড়ে ছিল তুই দেখছস? তুইও পড়ে থাকবি।’

চাঁদা না পেয়ে গত ১ আগস্ট চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকার এক ব্যবসায়ীকেও গুলি করার অভিযোগ ওঠে রায়হানের বিরুদ্ধে। মো. ইউনুস নামের ওই ব্যবসায়ী নদী থেকে বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত খননযন্ত্রের ব্যবসা করেন। পুলিশ জানায়, রায়হানের নামে গত বছরের ৫ আগস্টের পর চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় জোড়া খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হত্যা মামলা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাস ধুয়েমুছে চালকের সহকারী ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন, ফিরে দেখেন আগুন জ্বলছে
  • ‘বাসটির সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে, এরপর আর কিছু মনে নেই’
  • রেলের ৭ লাখ টাকার যন্ত্র ২৭ হাজারে বানালেন তিনি
  • রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
  • জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণাই তাঁর নেশা 
  • ইডেনে স্পিন বিষ, ১৫ উইকেটের দিনে উড়ছে ভারত
  • বিচারকের ছেলে হত্যা মামলার আসামি লিমন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
  • বিচারকের ছেলে হত্যা: লিমন ৫ দিনের রিমান্ডে
  • ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট কোর্স পরীক্ষা: প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা পাবেন অতিরিক্ত ৩০ মিনিট
  • ‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব’