চালের দাম আরও কমেছে ডিম-সবজির বাজার চড়া
Published: 10th, May 2025 GMT
বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দুই সপ্তাহ ধরে দাম বাড়তি। এর প্রভাব পড়েছে ডিমে। গত এক সপ্তাহে খামারের ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। তবে চালের বাজার আরও কমেছে। বিশেষ করে সরু বা মিনিকেট চালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে কমেছে ২-৩ টাকা। শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী, রামপুরা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
রমজান মাস শুরুর পর থেকে প্রায় দুই মাস ডিমের দাম ছিল কম। এ সময় খামারের ডিমের ডজন সর্বনিম্ন ১১৫ থেকে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে গত এক সপ্তাহে দুই দফায় ডজনে দর বেড়েছে ১০ টাকার মতো। ফলে প্রতি ডজন ডিম কিনতে ক্রেতার খরচ হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। তবে মহল্লার দোকানি কেউ কেউ ডজনে আরও ৫ টাকা বেশি রেখে ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে ডিমের। সে জন্য দামও বাড়তে শুরু করেছে। কেউ কেউ বলছেন, এতদিন খামারিরা লোকসান দিয়েছেন। এখন তারা কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। সে জন্য দাম বাড়ছে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এত দিন ডিমের দাম একেবারে কম ছিল। ১১০ টাকায়ও বিক্রি করতে হয়েছে মাঝেমধ্যে। খামারিরা ওই সময় কম দরে ডিম দিয়েছেন। এখন সেটা পুষিয়ে নেবেন।
ডিমের সঙ্গে মুরগির দামও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দর বেড়ে এখন ব্রয়লারের কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে সোনালি জাতের মুরগির দাম।
সবজির দর আগের মতোই চড়া। বেশির ভাগ সবজির দাম ৬০ টাকার আশপাশে। প্রতি কেজি পটোল ৪০ থেকে ৬০, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৮০, টমেটো মানভেদে ৩০ থেকে ৪০, শসা ৬০ থেকে ৭০, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৭০, ঢ্যাঁড়শ ৪০ থেকে ৫০, ঝিঙে ৬০ থেকে ৭০, করলা ৬০ থেকে ৮০, লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০ ও মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাউ প্রতিটা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। কিন্তু অস্বাভাবিক দর দেখা গেছে পেঁপের। প্রতি কেজি পেঁপে কিনতে খরচ পড়ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে থাকে পেঁপের দাম। নতুন সবজি হিসেবে বাজারে দেখা মিলছে কচুমুখির; কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আলুর দাম এখন বেশ তলানিতে। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ১৭ থেকে ২০ টাকায়। এখনও বেশ নাগালে রয়েছে কাঁচামরিচ। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকায়।
সবজি ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, শীত মৌসুমের সবজি শেষ। এখন গ্রীষ্মের সবজি আসছে। কিন্তু সেগুলোর সরবরাহ তুলনামূলক কম। অন্যদিকে উৎপাদন খরচও বেশি। সে জন্য তাদের বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
টানা কয়েক মাস উত্তাপ ছিল চালের বাজারে। এখন বোরো মৌসুমের ধান কাটা চলছে। ইতোমধ্যে বাজারে এ জাতের ধানের চাল আসতে শুরু করছে। বাজারে মিনিকেট বলে যে চাল বিক্রি হয়, তা এই বোরো ধানের চাল পলিশ করেই তৈরি করা হয়। এসব চালের সরবরাহ বাড়তে থাকায় দাম কিছুটা কমতির দিকে। গত দুই সপ্তাহের তুলনায় এ জাতের চাল কেজিতে কমেছে ১০ টাকার মতো। বাজারে এখন নতুন সরু বা মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৮২ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে এ মানের চালের কেজি কিনতে খরচ হতো ৮০ টাকার ওপরে। তবে এ মানের পুরোনো চালের কেজি এখনও ৮৫ টাকার ওপরে। মাঝারি (বিআর-২৮) চাল কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে। এ মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬৫ টাকায়। মোটা চালের দরও দুই টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়।
বোরো ধান পুরোপুরি উঠলে সরু চালের দাম আরও কমে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তেজকুনিপাড়ার মায়ের দোয়া স্টোরের মালিক মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ রদর ব যবস য় ৬০ থ ক সবজ র
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।