চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে কড়া রোদ উপেক্ষা করে তারুণ্যের সমাবেশ চলছে। এতে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় তামিম ইকবাল।

শনিবার বিকেল ৩টার দিকে সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে সমাবেশ শুরু হয়। এর আয়োজন করেছে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

সমাবেশ শুরুর পর তামিম ইকবাল মঞ্চে এসে উপস্থিত হন। এসময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। তখন যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না মাইকে বলেন, তামিম ইকবাল প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতি না করলেও পরোক্ষভাবে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।

শনিবার পলোগ্রাউন্ড মাঠে দেখা যায়, দুপুর ১২টার দিক থেকেই চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগের ১৩ সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীরা মাঠে আসতে শুরু করেন। আনুষ্ঠানিক সমাবেশ শুরুর আগেই মাঠ কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। হাতে ব্যানার, মাথায় ক্যাপ আর মুখে শ্লোগান দেন তারা। নেতাকর্মীদের স্লোগানে-স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে আশপাশের সড়ক।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছেন, সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির।

এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা.

শাহাদাৎ হোসেন।

সমাবেশে আরও উপস্থিত আছেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিম প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ণ য র সম ব শ ত ম ম ইকব ল ব এনপ ত ম ম ইকব ল ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাম্যকে নিজ গ্রামে দাফন করা হবে

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নিজ গ্রামের কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হবে।

বুধবার (১৪ মে) মধ্য রাতে উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য উপজেলার সড়াতৈল গ্রামের বিসিসিআই’র অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফখরুল আলম ফরহাদের ছেলে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের হল শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার অভিযোগে মামলা, শিক্ষক কারাগারে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাম্য হত্যা: তথ্য চেয়ে অনুরোধ তদন্ত কমিটির 

মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষাজীবনের শুরুতে সাম্য উল্লাপাড়া মোমোনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে এসএসসি পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কয়েক বছর আগে তার মা মারা গেছেন। সাম্যের বাবা ফকরুল আলম ঢাকার মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ১৮ নম্বর সড়কে বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় নিজস্ব ফ্লাটে থাকেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সাম্য সবার ছোট। তার বড় ভাই আমিরুল ইসলাম সাগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সাম্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাম্য হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

রাত ১০ টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, শাহরিয়ার আলম সাম্যসহ ফখরুল আলম ফরহাদ ২০১২ সাল থেকে পরিবার ঢাকায় বসবাস করেন। ফরহাদের চার ছেলের মধ্যে সাম্য সবার ছোট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা শেষে সন্ধ্যার পরে সাম্যের মরদেহ সড়াতৈল গ্রামে আনা হয়েছে। সড়াতৈল জান্নাতুল বাকী কবরস্থান ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে সেখানে দাফন করা হবে।

সাম্যর চাচা কায়সার উল আলম বলেন, ‘‘যখন টেলিভিশনে ভাতিজা সাম্যর হত্যার সংবাদ পেয়ে গ্রামবাসী ও স্বজনদের ফোন আসতে থাকে। তারা বাড়িতে ভিড় করে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এমন সম্ভাবনাময় টগবগে তরুণকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হবে আমরা ভাবতে পারিনি। ভাবতেই পারছি না, আমার ভাতিজার সঙ্গে আর কখনো কথা হবে না। বাড়ি আসল ঠিক কিন্তু লাশ হয়ে।’’

সাম্যর বন্ধু হিমেল বলেন, ‘‘সাম্য প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসত। গ্রামের মুরুব্বিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতো। এমন বিনয়ী নম্র-ভদ্র একটা ছেলেকে এভাবে খুন করা হবে এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। সাম্য আর বাড়িতে আসবে না, এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।’’

সাম্যর চাচি তানিয়া খাতুন বলেন, ‘‘প্রতি বছর দুই-তিনবার সাম্য গ্রামের বাড়িতে আসত। তার সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। আজ বাড়িতে এসেছে কিন্তু আর কথা বলছে না সাম্য।’’ স্বজন ও প্রতিবেশীরা সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ বলেন, ‘‘দেশের যে কোনো আন্দোলনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে। অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার আমরাই বেশি হয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছি।’’
 

ঢাকা/রাসেল/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ