স্কাই স্পোর্টসের বর্ষসেরা একাদশে হামজা
Published: 10th, May 2025 GMT
মৌসুমের শুরুটা ভালো ছিল না হামজা চৌধুরীর জন্য। লেস্টার সিটির মূল একাদশ থেকেও জায়গা হারান। তবে শেষ পর্যন্ত পুরো মৌসুমটা যেন স্বীকৃতি ও অর্জনের গল্প। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কারস্বরূপ স্কাই স্পোর্টসের ব্রিটিশ-দক্ষিণ এশীয় বর্ষসেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী।
প্রিমিয়ার লিগ জয়ী লেস্টার সিটির খেলোয়াড় হলেও চলতি মৌসুমে ধারে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলেছেন হামজা। শেফিল্ডে যোগ দিয়েই যেন নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডারের অধীনে কখনো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ড, কখনো রাইটব্যাক, প্রতিটি পজিশনেই খেলেছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।
এমন পারফরম্যান্সেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো স্কাই স্পোর্টসের বর্ষসেরা ব্রিটিশ-দক্ষিণ এশীয় একাদশে জায়গা পেয়েছেন হামজা। এই একাদশ তৈরি করেছেন স্কাই স্পোর্টসের সাংবাদিক ডেভ ট্রিহান এবং দক্ষিণ এশীয় ফুটবলার স্কাউট জোহাইব রশিদ। ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ব্রিটিশ-দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে বাছাই করা হয় একাদশ।
৪-৩-৩ ফর্মেশনের এই দলে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে হামজা রয়েছেন মিডফিল্ডের কেন্দ্রীয় ভূমিকায়। তার সঙ্গে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডার মিলি চন্দ্রানা (নটিংহ্যাম ফরেস্ট নারী দল) এবং পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত জিদান ইকবাল (এফসি উট্রেখট)।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ই স প র টস র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বপ্ন এভাবেও পূরণ হয় জানতেন না সাকলাইন
টেপ টেনিসের মৌসুম শুরু হয়েছে মাসখানেক হলো। এর আগে দেশের টেপ টেনিস ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ‘টেপ বল বিপিএল’ হলো। যেখানে পাকিস্তান থেকে খেলোয়াড় এসেও খেলে গেছেন।
মৌসুমে টেপ টেনিস ক্রিকেটে যারা ‘খ্যাপ’ খেলে বেড়ান তারা দম ফেলার ফুরসত পান না। আব্দুল গাফফার সাকলাইন তেমনই একটি মৌসুম কাটানোর অপেক্ষায় ছিলেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ফোন আসছিল তার কাছে। চাওয়া হচ্ছিল ‘ডেট’। কিন্তু ৩০ নভেম্বরের বিকেলে তার পুরো পৃথিবী যেন পাল্টে গেল। স্বপ্ন যে সত্যি হয়, বাস্তবে রূপ নেয় সেদিন বুঝেছিলেন সাকলায়েন।
সম্প্রতি কাতারে অনুষ্ঠিত রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপে দারুণ পারফরম্যান্সে আলোচনায় আসেন ২৭ বছর বয়সী পেসার সাকলাইন। বাংলাদেশ ‘এ’ দলে প্রথমবার খেলে নজরে আসার মাধ্যমে বিপিএলের নিলামে তার নাম উঠে। ভিত্তিমূল্য ছিল ১৪ লাখ। ক্যাটাগরি ছিল ডি। সেখান থেকে প্রায় ‘এ’ ক্যাটাগরির কাছাকাছি ভিত্তিমূল্যে গিয়ে ৪৪ লাখে বিক্রি হন। কিনে নেয় রাজশাহী ওয়ারিয়র্স।
দুই মাস আগেই যিনি টেপ টেনিসে একটা ভালো মৌসুম কাটানোর চিন্তা করতেন এখন তাকে দেখা যাবে স্বীকৃত ক্রিকেটে। স্বপ্নের ঘোর কাটে না সাকলায়নের। রাইজিংবিডিকে সেই কথাই শোনালেন তিনি, ‘‘নিলামে নাম উঠার পর থেকে মনের মধ্যে আনন্দ লাগা শুরু করেছিল। কাতারে আমার পারফরম্যান্স সবার ভালো লেগেছিল। মনে হচ্ছিল এবার হয়তো কেউ সুযোগ দিলে দিতে পারে। স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু এভাবেও যে পূরণ হয় তা কল্পনাও করতে পারিনি।’’
নিলামের আগে টিভির সামনে বসে ছিলেন সাকলায়েন। ডি ক্যাটাগরিতে থাকায় নিলামে পরে উঠবে তার নাম বোঝা যাচ্ছিল। অপেক্ষায় ছিলেন নাম উঠার। যখনই নাম উঠল। তখন হৃদস্পন্দন বাড়তে শুরু করে তার, ‘‘নাম ওঠার পর আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। প্রথমবার এমন কিছু হচ্ছে। বিপিএল খেলবো, যেটা আমি গত ১০ বছর টিভিতে দেখেছি, মাঠে বসে দেখেছি সেখানে খেলবো…আমার নাম উঠার পর যখন আগ্রহ দেখাল তখন থেকেই আমার আনন্দ শুরু হয়ে যায়। টাকা কতো উঠবে, কোথায় গিয়ে শেষ হবে সেটা আমার চিন্তাতেও ছিল না। আমি শুধু ভাবছিলাম একটা সুযোগ আমাকে হয়তো দেবে।’’
টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে উঠে আসলেও ক্লাব ক্রিকেটে তার পথ চলা লম্বা সময়ের। দুটোই পাশাপাশি চলে তার। ওরিয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাব দিয়ে ঢাকা লিগে খেলা শুরু তার। এরপর গাজী টায়ার, কাকরাইল বয়েজ। এরপর প্রিমিয়ার লিগে গাজী গ্রুপে দুই বছর খেলেন। জাতীয় লিগে খেলেন রংপুরের হয়ে। এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে রাখেন বড় ভূমিকা।
টেপ টেনিস ক্রিকেট ও ক্রিকেট বলের ক্রিকেটের পার্থক্য খুব একটা পান না সাকলাইন। দুটোতেই ‘জান’ দিয়ে খেলতে হয়। তবে তার মানসিকতা, ভাবনায় আমূল পরিবর্তন আসে যখন এইচপির ক্যাম্পে সুযোগ পান।
‘‘ক্রিকেটে এতো খুঁটিনাটি বিষয় আছে আমার কাগে জানা ছিল না। কিছু কাজ আছে যেগুলো করলে কাজটা সহজ হয়ে যায়…আমি চেয়েছিলাম বিসিবির রাডারে আসতে। যেখানে আমার স্কিলের আরও উন্নতি হবে। এইচপিতে সেটাই হয়েছে। ফিটনেস, মানসিকতা, শক্তি, শৃঙ্খলা গড়ে উঠেছে। কিভাবে ক্রিকেটাররা নিজেদেরকে তৈরি করেন, একসঙ্গে থাকলে কিভাবে মানসিকতা বৃদ্ধি পায় সেগুলো বুঝতে পেরেছি। আমার খুব কাজে দিয়েছে।’’
কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে, তিলে তিলে নিজেকে গড়ে সাকলাইন এতোদূর এসেছেন। বিপিএলে স্বপ্নের ডানা মেলে উড়তে চান। আরো শানিত হতে চান। নিজের ভুল শুধতে নিতে চান। হতে চান আরো নিখুঁত। নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য স্থির না করে খোলামনে বিপিএল খেলার কথা বললেন, ‘‘আমি যেভাবে উঠে এসেছি, যেভাবে খেলেছি এতোদিন বিপিএল আমার জন্য বিরাট মঞ্চ। এখানে পারফর্ম করলে অনেক দূর যাওয়া যাবে। তবে আমি এতোটা দূর ভাবছি না। ধীর স্থির ভাবে এগিয়ে যেতে চাই। আমাকে শিখতে হবে। নিজেকে উন্নতি করতে হবে। যদি পারফর্ম করতে পারি তাহলে আমার পরবর্তী ধাপগুলোতেও সুযোগ আসবে।’’
ঢাকা/ইয়াসিন