ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের দায়ে বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শনিবার (১০ মে) রাতে আসা এ সিদ্ধান্তে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা আনন্দিত। তবে দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ করার পক্ষেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে না প্রতিক্রিয়া। এ ব্যাপারে রাইজিংবিডি ডটকমের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকাই উচিত নয়

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে গবেষণা পদ্ধতিবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবি

আওয়ামী লীগের সব অপরাধের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা খুবই ভালো কথা। কিন্তু এর মধ্যেও কিন্তু রয়েছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা মানে দলকে নিষিদ্ধ করা না। আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার জন্য এই দলের কোনো অস্তিত্ব থাকাই উচিত নয়। নির্বাহী আদেশে সম্ভব না হলেও বিচারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
(লেখক: এইচ এম খালিদ হাসান, শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ)

আওয়ামী লীগের তিন গণহত্যার বিচার হয়নি

আওয়ামী লীগ যে তিন তিনটা গণহত্যা (শাপলা, পিলখানা, জুলাই অভ্যুত্থানে) চালিয়েছে, তার দৃশ্যমান কোনো বিচার কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে এগুলোর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে আমি মনে করি।
(মাহির কাইয়ুম, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ)

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়নি

আমাদের যে মূল দাবি, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে; সেটি হয়নি। সরকার অতি দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। সে পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি। সরকার নিঃসন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী রূপ দেখেছে। এ সিদ্ধান্ত না হলে বিপ্লবী রূপ আরো বিপ্লবী হয়ে উঠবে।
(আরিফ জাওয়াদ, শিক্ষার্থী, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ)

আওয়ামী লীগ আগাগোড়া সন্ত্রাসী দল

আওয়ামী লীগ কোনো সাধারণ রাজনৈতিক দল না। এটা একটা আগাগোড়া সন্ত্রাসী দল। তাদের নিষিদ্ধ আরো আগেই হওয়া উচিত ছিল। অবশেষে আমরা জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে সেটার বাস্তবায়ন দেখতে পেলাম। আলহামদুলিল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর।
(এ বি জুবায়ের, শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ)

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ শ ক ষ বর ষ ন ষ দ ধ কর গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার ২০ শতাংশের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে: ইউএনআরডব্লিউএ

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার ২০ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ ও অবরোধের ফলে পানিশূন্যতা বেড়ে চলেছে। খবর প্রেস টিভির।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ইউএনআরডব্লিউএ এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, গাজায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে। সীমিত পানি সরবরাহের কারণে পানিশূন্যতা বেড়ে চলেছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ মিড-আপার আর্ম সার্কামফারেন্স (এমইউএসি)-ভিত্তিক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গাজা সিটিতে শিশুদের অপুষ্টির হার ২১.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ বর্তমানে প্রায় প্রতি পাঁচজন ছোট শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।

আরো পড়ুন:

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ১,৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত: জাতিসংঘ

ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি

তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন এমন শিশুদের শনাক্ত করার জন্য এমইউএসি একটি বহুল ব্যবহৃত নৃতাত্ত্বিক পরিমাপ।

সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানায়, ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মীরা ‘অত্যন্ত ক্লান্ত, মানসিকভাবে চাপে আছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হচ্ছেন।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে কমপক্ষে একজন শিশু অনাহারে মারা গেছে, যার ফলে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর মোট সংখ্যা ২৪০ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১০৭ জন শিশু রয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজা উপত্যকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো গুরুতর অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার ব্যাপক ক্ষতি, নিরাপদ চলাচলে বাধা এবং চিকিৎসা সরবরাহ ও জ্বালানি প্রবেশের উপর ইসরায়েলি বিধিনিষেধ।

জাতিসংঘের সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরবরাহের অভাব স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে সংকটের মধ্যে ফেলেছে, যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ও সংক্রামক রোগে ভুগছেন এমন রোগীরা প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে করে ব্যাপকভাবে জনস্বাস্থ্য সংকটের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। 

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কয়েক দশক ধরে আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা (হামাস) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম পরিচালনা করে। এর জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬১ হাজার ৮২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তার আগে গত ২ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় সব ধরনের মানবিক ত্রাণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে  গাজায় মানবিক সংকটকে আরো ভয়াবহ হয়ে পড়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার ২০ শতাংশের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে: ইউএনআরডব্লিউএ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল