সুন্দরবনে ফেলে যাওয়া সবার শরীরে আঘাতের চিহ্ন
Published: 11th, May 2025 GMT
সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া জঙ্গলে ফেলে যাওয়া ৭৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে কোস্টগার্ড। তারা সবাই বাংলাদেশি। সবার শরীরে কমবেশি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তাদের জাহাজ ও স্পিডবোটে ৯ মে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের চরে ফেলে যায় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) ও ভারতীয় কোস্টগার্ড। পরে তারা হেঁটে মান্দারবাড়িয়া টহল ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির জানান, তারা সবাই খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও যশোরের বাসিন্দা। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে, কেউ কয়েক বছর বা মাস ধরে ভারতে বাস করছেন। এর মধ্যে ৭০ জন আহমেদাবাদ থেকে এবং আটজন সুরাট থেকে আটক হন। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাধবপাশা গ্রামের মো.
ওসি আরও জানান, তাদের জন্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবনে পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাত ১০টার দিকে তাদের এখানে পৌঁছার কথা।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন জানান, হঠাৎ করে ৭৮ জনকে বঙ্গপোসাগর তীরবর্তী নির্জন এলাকায় ফেলে যাওয়ার ঘটনা সবাইকে বিস্মিত করেছে। পরে বন বিভাগ ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সহায়তায় তাদের মান্দারবাড়িয়া টহল ফাঁড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়। এ সময় তাদের নাম, পরিচয় ও ঠিকানা শনাক্ত করা হয়। তাদের সুস্থ রাখার জন্য শুকনা খাবারসহ চাল, ডাল, পানিসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হয়।
কোস্টগার্ড সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে সমুদ্রপথে মোংলায় নেওয়া হয়। সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমান জানান, সবার শরীরে কমবেশি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্তে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করে বিজিবি। রোববার ভোরে জীবননগর সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। এর মধ্যে দুই শিশু, তিন নারী ও ৯ পুরুষ রয়েছেন।
বিজিবি জানায়, অভিযুক্তরা স্বীকার করেন, ছয় মাস আগে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তারা ভারতে গিয়েছিলেন। জীবননগর থানার ওসি মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, বিজিবি সদস্যরা রোববার দুপুরে ১৪ জনকে থানায় সোপর্দ করেছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন ডিজাইনের ১০০ টাকার নোট বাজারে আসছে মঙ্গলবার
বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বাজারে ছাড়বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নোটটি প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।
রবিবার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০x৬২ বর্গ মিলিমিটার। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি ও মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি এবং নোটের পেছন ভাগে সুন্দরবন, বাংলাদেশের ছবি মুদ্রিত আছে। নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ, এর নিচে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রো টাইপ জলছাপে ‘100’ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে। নোটটিতে নীল রঙের আধিক্য রয়েছে।
আরো পড়ুন:
ব্যাংকের বেনামী ঋণ বন্ধ হয়েছে, আমানতকারীদের আস্থা ফিরছে
‘টাকা পে’ এর নামে ভুয়া ওয়েবসাইট, সতর্ক করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
১০০ টাকা মূল্যমান নোটটিতে মোট ১০ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটের সম্মুখভাগে ডানদিকে কোনায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০’ রঙ পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি দ্বারা মুদ্রিত। নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রঙ সোনালি থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়।
নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া লাল রঙ এবং উজ্জ্বল রূপালি বারের সমন্বয়ে পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়াকরণে নিরাপত্তা সুতার রঙ লাল হতে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়, যাতে ‘১০০ টাকা’ খচিত রয়েছে এবং উজ্জ্বল রংধনুর রঙের বারে রূপান্তরিত হয়ে উপর থেকে নীচে চলতে দেখা যাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের সম্মুখভাগে ডানে নীচের দিকে তিনটি ছোট বৃত্ত রয়েছে, যা হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভূত হয়।
নোটটিতে ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলো হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভব করা যাবে। ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলোর মধ্যে রয়েছে- নোটের সম্মুখভাগের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রতিশ্রুত বাক্য, বাংলা ও ইংরেজিতে মূল্যমান নোটের ডানদিকে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত ছয়টি লাইন এবং নোটের পেছন ভাগে সুন্দরবন, বাংলাদেশের ছবি, সব মূল্যমান (অংকে ও কথায়), বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম, BANGLADESH BANK ইত্যাদি।
নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতা সংলগ্ন নকশাগুলো আই অ্যাবজরবেন্ট কালি দ্বারা মুদ্রিত, যা আইআর সনাক্ত যন্ত্র দ্বারা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতার বামপাশে ও ‘BANGLADESH BANK’ লেখাটির নিচে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK 100 Taka’ পুনরায় মুদ্রিত রয়েছে।
এছাড়া, নোটের পেছন ভাগে বামপাশে নীচে ও ডানপাশে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ এবং বামপাশে উপরে ‘100 Taka’ মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে পুনরায় মুদ্রিত রয়েছে, যা শুধু ম্যাগনিফাই গ্লাস দ্বারা দেখা যাবে।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See-Through image হিসেবে ‘১০০’ মুদ্রিত রয়েছে যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘১০০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নীচের দিকের বর্ডারের মাঝখানে নীল ডিজাইন অংশে গুপ্তভাবে ‘100’ লেখা আছে, যা নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যাবে। নোটের কাগজে লাল, নীল ও সবুজ রংয়ের অসংখ্য আঁশ রয়েছে, যা আল্ট্রা ভায়োলেট সনাক্ত যন্ত্র দ্বারা দৃশ্যমান হয়।
নোটটির উভয় পৃষ্ঠে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে নোটটি চকচকে অনুভূত হবে, নোটের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পাবে।
নতুন ডিজাইনের ১০০ টাকা মূল্যমানের নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে, যা মিরপুরের টাকা জাদুঘর থেকে নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
ঢাকা/নাজমুল/মেহেদী