যন্ত্রমানব বলতে যা দৃশ্যমান হয়, তা হলো খুদে আকৃতির রোবট। দরজা খোলা বা ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে পরিবেশন– এমন কাজের প্রয়োজন মেটাবে মানবিক রোবট।
অনেকেই উন্নত দেশের এমন রোবটের সঙ্গে পরিচিত। অভিজ্ঞরা অবশ্য সিলিকন ভ্যালির কথা বলতে পারেন। যেখানে দরজা খুলে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে রোবট। অতিথিকে ঘরে স্বাগত জানাল। কথা বলছে চোখের দৃষ্টিতে। যেন কী মানবিক। কারণ সম্পূর্ণ মানুষের অবয়ব, কিন্তু আদতে মানুষ নয়। এমনকি হাত এগিয়ে অভ্যর্থনা জানাবে, এমন অভিজ্ঞতা অবাক করবে না!
বিশ্বে প্রতিদিন রোবট নিয়ে চলছে হৈ-হুল্লোড় আর উন্মাদনা। সব ক্ষেত্রে রোবটের দৃশ্যায়ন যেন বেড়ে চলেছে। শিল্প ক্ষেত্রে নয়, বাড়ির প্রতিদিন কাজের বড় অংশে রোবট এখন দাপুটে সহযোগী।
এআই এখন গাড়ি চালাচ্ছে, গল্প লিখছে, মুহূর্তেই তৈরি করছে কম্পিউটার কোড। বলতে গেলে, কিনা করছে তারা। কৃত্রিম বুদ্ধির সমন্বয় কীভাবে রোবটে যুক্ত হয়, তা নিয়ে চলছে গবেষণা। বিশ্বের শতাধিক এআই স্টার্টআপ এমন রোবট তৈরি, গবেষণা ও উন্নয়নে কাজ করছে। ইতোমধ্যে এ খাতে বিনিয়োগ ৭২০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট উন্নয়ন এতটাই আকর্ষণীয় হয়েছে যে, ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলা এমন রোবট তৈরিতে গবেষণা করছে। টেসলা উদ্ভাবিত মানবিক রোবটের নাম অপটিমাস, যা টেসলা বট নামে পরিচিত। এআই পরিচালিত এমন রোবট তৈরি করা হয়েছে, যা মানুষের অসাধ্য সব কাজ করে দেবে নিমেষেই।
মানবিক রোবট ব্যবহারের বড় ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে। ঘরের যে কোনো কাজ, যেমন পরিষ্কার করা বা নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ, মানুষের বিকল্প হতে চলেছে এমন সব রোবট নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। ঘরের কাজ কেন, শিল্পকারখানায় দিন-রাত শ্রমিকের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে এমন রোবটকে। বহু কঠিন কাজ করানো যায় রোবট দিয়ে।
অদেখা অন্য দিকও কিন্তু রয়েছে। রোবট যখন পুরোদস্তুর মানুষের কাজ করে দেবে, মানুষ তখন দ্রুত কর্মহীন হবে! মানবিক কর্মক্ষম রোবট নির্মাতারা বলছে, মানুষের কাজের ওপর এমন রোবট আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে না। যদিও এমন কথা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
২০২৬ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় পৌঁছাবে টেসলা উদ্ভাবিত প্রি-অর্ডারের রোবট; যার সম্ভাব্য দাম ২০ হাজার ডলার। বৈশিষ্ট্যভেদে দাম বাড়বে। এমন রোবট করে দেবে ঘরের যাবতীয় কাজ। অন্যদিকে, সুনির্দিষ্ট কিছু পেশাদারি কাজ দক্ষতার সঙ্গে সামলে নেবে। সে জন্য প্রয়োজন হবে বিস্তর ডেটা প্রসেস, যা ছাড়া রোবট কিন্তু অচল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি যেভাবে রোবট শিল্পে জুড়ে যাচ্ছে, তাতে সবখানে পারদর্শী হবে এমন প্রযুক্তি।
ফাঁকা বাসার নিরাপত্তায় থেকে দরজা খুলে স্বাগত জানিয়ে তালিকা অনুযায়ী আতিথেয়তা আর খাবার পরিবেশন করবে রোবট, এমনটা হতে খুব বেশি দেরি নেই আর বলে মন্তব্য করেছেন এআই প্রযুক্তির গবেষকরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার চট্টগ্রাম সফর ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফরে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী বুধবার (১৪ মে) সকালে তিনি নিজ জন্মস্থান চট্টগ্রামে পৌঁছাবেন।
চট্টগ্রাম সফরে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম নগরীতে যেসব সড়ক দিয়ে চলাচল করবেন, সেগুলো সংস্কার, সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি ফুটপাত থেকে অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচির মধ্যে রয়েছে, সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে এক সভায় যোগ দেবেন। সেখানে বন্দর ও জাহাজ চলাচল খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাণিজ্য সংস্থার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা
এলডিসি উত্তরণে জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
বন্দরের কর্মসূচি শেষে মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আসবেন। সেখানে তিনি কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন। এছাড়া এখানে তিনি চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে সার্কিট হাউস ত্যাগ করবেন। দুপুর ২টা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীণ জানান, প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এ ব্যাপারে রেলওয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার জানান, বুধবার দুপুর ২টায় প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে যোগ দিবেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। ৫ম সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টাকে ডি লিট ডিগ্রি দেয়া হবে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন ও শান্তিপ্রতিষ্ঠার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এ ডিগ্রি দেয়া হবে।
সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর চৌধুরী রফিকুল আবরার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম, ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর এস. এম. এ. ফায়েজ।
প্রধান উপদেষ্টার চট্টগ্রাম সফর ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। চট্টগ্রাম নগরীতে প্রধান উপদেষ্টা যেসব সড়ক দিয়ে চলাচল করবেন সেগুলো সংস্কার, সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি ফুটপাত থেকে অবৈধ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল