এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হুমকি থেকে নিজেদের সৃষ্টিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কপিরাইট আইন হালনাগাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ তারকারা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সংগীতশিল্পী ডুয়া লিপা, এলটন জন, অভিনেতা ইয়ান ম্যাকেলেন ও ফ্লোরেন্স ওয়েলচ।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের উদ্দেশে লেখা এক খোলাচিঠিতে চার শতাধিক সংগীতশিল্পী, লেখক ও শিল্পী স্বাক্ষর করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, উপযুক্ত সুরক্ষা না দিলে তাঁদের সৃষ্টিকর্ম প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কাছে ‘উপহার’ দিয়ে দেওয়ার মতো হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এ উদাসীনতার কারণে হুমকির মুখে পড়তে পারে যুক্তরাজ্যের ‘সৃজনশীল সাম্রাজ্য’।

প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠিতে একটি প্রস্তাবিত সংশোধনীকে সমর্থনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেটি হলো ডেটা (ইউজ অ্যান্ড অ্যাকসেস) বিলের একটি ধারা, যার মাধ্যমে এআই উন্নয়নকারীদের বাধ্য করা হবে, তাঁরা যেন যেকোনো কনটেন্ট এআই মডেল প্রশিক্ষণে ব্যবহারের আগে সংশ্লিষ্ট কপিরাইট মালিকদের জানান।

এলটন জন। রয়টার্স.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হানিফ মোহাম্মদের সঙ্গে সেই সন্ধ্যার স্মৃতি

দেখতে ছোটখাটো ছিলেন বলে ভালোবেসে সবাই ডাকত ‘লিটল মাস্টার’, কিন্তু ক্রিকেটীয় কীর্তিতে সেই ছোটখাটো লোকটাই কী বিশাল! হানিফ মোহাম্মদ শুধু নিজের সময়ের না, পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট ৮১ বছর বয়সে পরপারে চলে যাওয়া কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের বাড়িতে বসে তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রর। কিংবদন্তির মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে উৎপল শুভ্রর সেই স্মৃতিচারণা

‘লিটল মাস্টার’কে এতটা ‘লিটল' দেখাবে, এটা ভাবিনি। এর আগে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে দেখেছি, দেখেছি ১৯৯৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের দিন পাকিস্তান দলের নেট প্র্যাকটিসের সময়ও। তখনো দেখে একটু বিস্ময়ই জেগেছে—এই ছোটখাটো লোকটিই ট্রুম্যান-স্ট্যাথাম-গিলক্রিস্টদের ছোড়া আগুনে গোলার সামনে অমন বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন, লড়েছেন অমন বীরত্বের সঙ্গে! ১৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট ব্যাট করে হেরে যাওয়া টেস্ট ম্যাচ ড্র করেছেন, পাকিস্তানের পক্ষে টেস্টে প্রথম জোড়া সেঞ্চুরিও, ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তাঁর ৪৯৯ রেকর্ড হয়ে ছিল ৩৫ বছর। ২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁর করাচির ইউনিভার্সিটি রোডের বাড়িতে হানিফ মোহাম্মদকে দেখে সেই বিস্ময়ও ম্লান। হানিফ মোহাম্মদ যেন আরও ছোট হয়ে গেছেন!

পরনে একটা হাওয়াই শার্ট আর প্যান্ট, চোখে সেই পরিচিত চশমা—মিনিট দশেক অপেক্ষার পর যে ভদ্রলোক সামান্য খোঁড়াতে খোঁড়াতে সামনের সোফায় এসে বসলেন, ড্রেসিংরুমে ঢুকতেই হাসিমুখ যে বিশাল ছবিটি স্বাগত জানিয়েছিল, সেটির সঙ্গে তাঁকে মেলানোই মুশকিল। সেই ছবিটি যৌবনের হানিফ মোহাম্মদের। বলেও ফেললাম কথাটা। হানিফ মোহাম্মদ হাসলেন, ‘আই অ্যাম অ্যান ওল্ড ম্যান নাউ।’

যখন এ কথা বলছেন, এর তিন মাস পরই ৬৭তম জন্মদিন, সে হিসাবে তো ‘ওল্ড ম্যানই’। নাতি-নাতনির সঙ্গই তখন তাঁর আনন্দের প্রধান উৎস। ছেলে শোয়েব মোহাম্মদের দুই সন্তান শেহজার আর শেহজিনের সঙ্গেই কাটে দিনের বেশির ভাগ সময়। ইন্টারভিউর মাঝখানে ১১ বছর বয়সী শেহজার দুবার এসে বসলও দাদার পাশে। কারণটা শুধুই ছেলেমানুষি কৌতূহল নয়। একদিন যে তাকেও এমন ইন্টারভিউ দিতে হবে, এ নিয়ে যে কোনোই সন্দেহ নেই ওই পুঁচকে ছেলেটির মনে! হেসে উড়িয়ে দেবেন না কথাটা। হানিফ মোহাম্মদের কথাটা শুনে নিন আগে, ‘শেষ পর্যন্ত কী হবে, কে জানে! তবে এখন পর্যন্ত ও যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে বিশ্ব ক্রিকেটের মোহাম্মদ পরিবার থেকে আরেকজন উপহার পাওয়ারই কথা। প্রতিভার ব্যাপারটা পুরোপুরি বোঝা যাবে চার-পাঁচ বছর পর, তবে এটুকু বলতে পারি, আমাদের কেউই ওর মতো এতটা ক্রিকেটের পাগল ছিলাম না।’

হানিফ মোহাম্মদের করাচির বাড়িতে হানিফ মোহাম্মদের সঙ্গে উৎপল শুভ্র। ৫ সেপ্টেম্বর ২০০১

সম্পর্কিত নিবন্ধ