যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির খবরে আজ সোমবার সকালে ওয়াল স্ট্রিট স্টকের ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হয়েছে। বিশ্বের প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলার ইনডেক্সের মান বেড়েছে।  

আজ সোমবার সকালে ওয়াল স্ট্রিটের সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। নাসডাক ফিউচার্স বেড়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া ইউরোস্টক ৫০ ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ ও এফটিএসই ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ও ডিএএক্স ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।

অন্যদিকে এশিয়ার বেশ কয়েকটি বাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে। দিনের শুরুতে জাপানের নিক্কেই এশিয়া সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ; দক্ষিণ কোরিয়ার কেএস ১১ সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।

সোমবার সকালে ইয়েনের বিপরীতে মার্কিন ডলারের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি ডলারের বিপরীতে এখন পাওয়া যাচ্ছে ১৪৫ দশমিক ৯০ ইয়েন। ডলারের বিপরীতে ইউরোর দরপতন হয়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি ইউরোতে পাওয়া যাচ্ছে ১ দশমিক ১২ ডলার। সামগ্রিকভাবে ডলার ইনডেক্সের মান বেড়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ; উঠেছে ১০০ দশমিক ৬০ পয়েন্টে। তবে অফশোর বাজারে ইউয়ানের বিপরীতে ডলারের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

বিষয়টি হলো, স্টক ফিউচার্স এক ধরনের চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে ক্রেতা একটি নির্দিষ্ট তারিখে পূর্বনির্ধারিত দামে নির্দিষ্ট সংখ্যক শেয়ার কিনতে বাধ্য থাকেন, এবং বিক্রেতাও সেই শেয়ারগুলো বিক্রি করতে বাধ্য। এই স্টক ফিউচার্স দেখে বোঝা যায়, মূল লেনদেনে সূচক বাড়বে না কমবে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির কারণে বিশ্ববাজারে আশাবাদ তৈরি হয়েছে যে মন্দা হয়তো এড়ানো যাবে। আজ বাজারে তারই প্রতিফলন ঘটেছে, যদিও দুই দেশের বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।  

বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, হোয়াইট হাউস শিগিগরই চীনের পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক থেকে পিছিয়ে আসবে। এমনকি ট্রাম্প যে প্রথমে ৬০ শতাংশ শুল্কের কথা বলেছিলেন, সেই হারে শুল্ক আরোপ করা হবে, সেই আশাও করছেন তাঁরা।

পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, ট্রাম্প চীনের পণ্যে উচ্চ শুল্ক রাখার পক্ষপাতী। সেটা হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বে এবং জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি হলে বড় ক্ষতি এড়ানো যাবে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা হচ্ছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, এই আলোচনায় প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। চীনও বলেছে, দুই পক্ষের মধ্যে ‘গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য’ হয়েছে। সেই সঙ্গে উভয় পক্ষ নতুন এক অর্থনৈতিক সংলাপ ফোরাম গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

শেষমেশ শুল্কের হার কী হবে, সে বিষয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কিছু না বললেও জানিয়েছে, সোমবার উভয় দেশ বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দেবে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিপারস্টোনের জ্যেষ্ঠ গবেষণা কৌশলবিদ মাইকেল ব্রাউন বলেছেন, পরিস্থিতি দেখেশুনে মনে হচ্ছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বৃহৎ কাঠামো তৈরি করেছে; যে কাঠামোর আওতায় দুই দেশের মধ্যে আরও আলোচনা হওয়ার সুযোগ আছে। তিনি আরও বলেন, চলমান আলোচনা থেকে খারাপ কিছু আসবে না; আবারও এটাও ঠিক, সুনির্দিষ্ট চুক্তির বাস্তবতা এখনো তৈরি হয়নি। কথা হচ্ছে, এই আলোচনা থেকে কি শুল্ক স্থগিত, হ্রাস বা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেই উত্তর এখনো কেউ জানে না।  

অন্যদিকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। সেই সঙ্গে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ বিরতির সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার তুরস্কে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তিনি প্রস্তুত। ভূরাজনীতিতে এসব সুখবরের প্রভাবও বাজারে পড়েছে বলে সংবাদে বলা হয়েছে।  

সোনা ও তেল

এদিকে ডলার ও শেয়ারবাজারে চাঙাভাব থাকায় বিশ্ববাজারে সোনার দর আজ কিছুটা কমেছে। সোনার দাম আজ ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। দাম নেমে এসেছে আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ২৬৮ ডলারের। এপ্রিল মাসে সোনার সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছিল। তখন সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ ডলারে উঠে যায়।

এদিকে বাণিজ্য আলোচনায় অগগ্রতির প্রভাব তেলের বাজারেও আশাবাদ তৈরি হয়েছে। আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৩ সেন্ট বেড়ে ৬৪ দশমিক ১৪ ডলারে উঠেছে। ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৫ সেন্ট বেড়ে ৬১ দশমিক ২৭ ডলারে উঠেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন য দশম ক র ব পর ত ১ দশম ক স মব র

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

তবে, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক পতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমেছে।

আরো পড়ুন:

প্রথম প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল ও ইফাদ অটোসের মুনাফায় বড় উত্থান

ডিএসইতে সূচকের উত্থান, সিএসইতে পতন

আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকালে ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে, লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর থেকে সূচকের উত্থান দেখা যায়। লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। 

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪২.৮০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১০০০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩২২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮.৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১.৬৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৫.১১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৬.৮৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০০টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১১টির।

সিএসইতে ১৪ কোটি৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ