দেশে হৃদরোগে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে মৃত্যু
Published: 12th, May 2025 GMT
দেশে হৃদরোগে আশঙ্কাজনকভাবে মৃত্যু বাড়ছে বলে জানিয়েছেন দেশসেরা কার্ডিওলজিস্টরা। এজন্য দায়ী অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অতিরিক্ত স্ট্রেস।
বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির আয়োজনে গতকাল রোববার বিকেলে নগরের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত হৃদরোগ বিষয়ক সায়েন্টিফিক সেমিনারে এ কথা জানান তারা। দিনব্যাপী এই আয়োজনে চট্টগ্রামসহ দেশসেরা শতাধিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এ রোগের চিকিৎসা ও গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.
সেমিনারে আলোচকরা বলেন, দেশে হৃদরোগজনিত মৃত্যু প্রতিনিয়ত আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং এদের মধ্যে অনেকেই যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারান। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং স্ট্রেস এই রোগ বৃদ্ধির মূল কারণ।
চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রোগীর তুলনায় সমহারে বাড়ছে না চিকিৎসা পাওয়ার সহজলভ্যতা। বিশেষ করে, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করায় মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, শুধু চিকিৎসা নয়, সাধারণ মানুষের মাঝে হৃদরোগ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন পরিহার করা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ ধরনের সায়েন্টিফিক সেমিনার হৃদরোগ চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আপডেট রাখতে এবং আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই সায়েন্টিফিক সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে হৃদরোগ চিকিৎসা ও গবেষণায় চট্টগ্রাম নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো বলে মত দেন আয়োজকরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ দর গ ব
এছাড়াও পড়ুন:
শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ
নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।
আরো পড়ুন:
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক
কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।