দেশে হৃদরোগে আশঙ্কাজনকভাবে মৃত্যু বাড়ছে বলে জানিয়েছেন দেশসেরা কার্ডিওলজিস্টরা। এজন্য দায়ী অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অতিরিক্ত স্ট্রেস।

বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির আয়োজনে গতকাল রোববার বিকেলে নগরের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত হৃদরোগ বিষয়ক সায়েন্টিফিক সেমিনারে এ কথা জানান তারা। দিনব্যাপী এই আয়োজনে চট্টগ্রামসহ দেশসেরা শতাধিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এ রোগের চিকিৎসা ও গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.

মো. নুরুদ্দিন তারেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির আহ্বায়ক ও বিএমইউর হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শফিউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন, কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুর রব, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. এএফ খবির উদ্দিন আহমেদ এবং ট্রেজারার ডা. এ কে এম মহিউদ্দিন ভূঁইয়া মাসুম। প্যানেল এক্সপার্ট হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরী, ডা. একেএম মনজুর মোরশেদ, ডা. প্রবীর কুমার দাশ, ডা. মো. হাসানুজ্জামান, ডা. এম এ সাত্তার, ডা. এম এ রউফ, ডা. আশিষ দে, ডা. ফাইজুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডা. কাজী শামীম আল মামুন।

সেমিনারে আলোচকরা বলেন, দেশে হৃদরোগজনিত মৃত্যু প্রতিনিয়ত আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং এদের মধ্যে অনেকেই যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারান। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং স্ট্রেস এই রোগ বৃদ্ধির মূল কারণ।

চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রোগীর তুলনায় সমহারে বাড়ছে না চিকিৎসা পাওয়ার সহজলভ্যতা। বিশেষ করে, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করায় মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। 
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, শুধু চিকিৎসা নয়, সাধারণ মানুষের মাঝে হৃদরোগ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন পরিহার করা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ ধরনের সায়েন্টিফিক সেমিনার হৃদরোগ চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আপডেট রাখতে এবং আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই সায়েন্টিফিক সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে হৃদরোগ চিকিৎসা ও গবেষণায় চট্টগ্রাম নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো বলে মত দেন আয়োজকরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ দর গ ব

এছাড়াও পড়ুন:

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন ১৬০ বাংলাদেশি

আগামী ২০ আগস্ট লিবিয়ার গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৬০ বাংলাদেশি অভিবাসী দেশে ফিরছেন। 

দীর্ঘদিন ধরে চলমান নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অনেকে কাজের সুযোগ না পাওয়ায়  লিবিয়া ছেড়ে নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে আগ্রহী হয়েছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের সমন্বয়ে পরিচালিত মানবিক প্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় তাদের সুষ্ঠু ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা হচ্ছে।

ত্রিপোলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে।

গত ৭ আগস্ট লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার আইওএম'র ভারপ্রাপ্ত চিফ অব মিশনের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন, সুরক্ষা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

রাষ্ট্রদূত আইওএম'র কাছে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশি অভিবাসীদের দ্রুত নিবন্ধন এবং পর্যায়ক্রমে তাদের প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে ত্রিপোলী, মিসরাতা, বেনগাজীসহ লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।

আইওএম'র কর্মকর্তারা জানান, তারা বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসন কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। যদিও বর্তমানে ফ্লাইটের সংখ্যা সীমিত, তবে ভবিষ্যতে তা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় আগামী ২০ আগস্ট বেনগাজী থেকে একটি প্রত্যাবাসন ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ফ্লাইটে গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৬০ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

বৈঠকে উভয় পক্ষ স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের নিবন্ধন কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে একমত হয় এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেয়।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ