যুদ্ধবিরতির পর আজ চাঙা ভারত ও পাকিস্তানের শেয়ারবাজার
Published: 12th, May 2025 GMT
আজ সপ্তাহের প্রথম দিন ভারতের শেয়ারবাজারে চাঙাভাব দেখা যাচ্ছে। সেনসেক্স ও নিফটি—উভয় সূচকেরই উত্থান হয়েছে। সূচকের উত্থান হয়েছে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও।
মূলত পাকিস্তান–ভারত যুদ্ধবিরতি ও যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতির খবরে আজ শেয়ার সূচকের উত্থান হচ্ছে বলে সংবাদে বলা হয়েছে।
আজ ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশটির শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্সের উত্থান হয়েছে ২ হাজার ৩৭৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সূচকে আবার ৮০ হাজারের ঘর পেরিয়ে উঠেছে ৮১ হাজার ৮৩০ পয়েন্টে। অন্যদিকে আরেক সূচক নিফটির উত্থান হয়েছে ৭০৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। সূচকটি উঠেছে ২৪ হাজার ৭১৩ পয়েন্টে। সেই সঙ্গে আজ বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন ১১ দশমিক ১ লাখ কোটি রুপি বেড়ে ৪২৭ দশমিক ৪৯ লাখ কোটি রুপিতে উঠেছে।
এর আগে পাকিস্তানে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আবহে গত সপ্তাহের শেষ দুই দিনে ভারতের শেয়ার সূচকের পতন হয়। দেশটির ব্রোকারেজ হাউসগুলো মনে করছে, নতুন করে ভারত-পাক সংঘাত সৃষ্টি না হলে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের যাবতীয় লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
গত সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিন শুক্রবার সেনসেক্স ও নিফটি—উভয় সূচকই কমেছে প্রায় ১ শতাংশ। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিন শেয়ার সূচকের পতন হয়। যদিও পাকিস্তানে প্রথম আক্রমণের পর গত বুধবার উল্টো ভারতের শেয়ার সূচকের উত্থান হয়েছিল।
কিন্তু গত বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবার বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে পারেনি বাজার। ফলে এ দুই দিনে ভারতের বাজার মূলধন কমেছে প্রায় সাত লাখ কোটি রুপি।
এর আগেও দেখা গেছে, ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতের সময় শেয়ার সূচকের পতন হয়েছে। ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের সময় ৩ মে থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সেনসেক্স ও নিফটির পতন হয়েছিল শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভারতের সংসদ ভবনে হামলার সময় সেনসেক্সের পতন হয় শূন্য দশমিক ৭ আর নিফটির পতন হয় শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার দুই দিন সেনসেক্স ও নিফটির উল্টো উত্থান হয়েছে যথাক্রমে ৪০০ ও ১০০ পয়েন্ট।
এদিকে আজ সকালে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক কেএসই ১০০ সূচকের উত্থান হয়েছে ৯ শতাংশের বেশি। সূচক পৌঁছে গেছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০৪ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের উত্তেজনায় দেশটির প্রধান শেয়ার সূচক কেএসই-১০০ ইনডেক্সের পতন হয়েছে ৬ হাজার ৯৩৯ পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ১ শতাংশ। সূচকটি নেমে গিয়েছিল ১ লাখ ৭ হাজার পয়েন্টে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ য় রব জ র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
সৌদির কালোতালিকায় চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলস, ১০১৮ হজযাত্রীর ভোগান্তির শঙ্কা
সৌদি আরবের মক্কায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়া না করা এবং এক বাড়ি দেখিয়ে অন্য বাড়িতে হাজি রাখার অভিযোগে চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। এটি ১৬টি হজ এজেন্সির সমন্বয়ে গঠিত একটি লিড এজেন্সি। এর অধীন ১৬টি হজ এজেন্সির ১ হাজার ১৮ জন হজযাত্রী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যে মক্কায় পৌঁছে গেছেন।
গতকাল রোববার রাতে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভার্চ্যুয়াল সভায় দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাসান আল মনোয়ার এ তথ্য জানান। সৌদি সরকারের এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের লাইসেন্সের অনুকূলে মোনাজ্জেম বা প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট জব্দ, ভিসা বাতিল এবং সৌদি আরবে তার চলাচল সীমিত করে দিয়েছে। এর ফলে ১৬টি হজ এজেন্সির ১ হাজার ১৮ জন হজযাত্রী দুর্ভোগে পড়তে পারেন।
ভার্চ্যুয়াল সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভায় সৌদি উপমন্ত্রী বাংলাদেশি হজযাত্রীদের বাড়িভাড়ায় কয়েকটি এজেন্সির অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, প্রায় ১৫ হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়ার কাগজপত্রের সঙ্গে প্রকৃত বাড়ির কোনো মিল নেই। অনেক হজযাত্রীর বেলায় কাগজপত্রে বাড়িভাড়া দেখানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে বাড়িভাড়া হয়নি বা এক বাড়ি দেখিয়ে অন্য বাড়িতে হজযাত্রী রাখা হচ্ছে। এ কারণে ১৫ হাজার হজযাত্রীর মিনার কার্ড তাঁরা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসের মালিক হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারোয়ার। তিনি দাবি করেন, চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়নি, কালোতালিকাভুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সৌদি উপমন্ত্রী। গোলাম সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো অনিয়মের জন্য চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করার কথা বলা হয়নি। সৌদি সরকারের আইন অনুযায়ী, লিড এজেন্সি হিসেবে অন্যের অনিয়ম বা অপরাধের দায় আমাদের ওপর পড়েছে। “ইউসূফ এয়ার” নামের আমাদের সহযোগী একটি হজ এজেন্সির নিবন্ধিত ৩৫ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়াসংক্রান্ত অনিয়মের কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা এবং ১৫ হাজার হজযাত্রীর বাড়িভাড়ার কাগজপত্রে অসংগতির তথ্য জানার পর এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ মিশনকে দায়িত্ব দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মঞ্জুরুল হক (হজ অধিশাখা) প্রথম আলোকে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জার ট্রাভেলসকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা এই লিড এজেন্সির সহযোগী ১৬টি হজ এজেন্সির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। একই সঙ্গে যে কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়ে প্রকৃত তথ্য-উপাত্তসহ কিছু বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই এর সমাধান হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, এ বছর ৭৫৩টি হজ এজেন্সির অধীন নিবন্ধিত ৮১ হাজার ৯০০ জন ব্যক্তি ৭০টি ‘লিড এজেন্সির’ মাধ্যমে হজে যাচ্ছেন। এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে ৮১ হাজার ৯০০ জন এবং সরকারিভাবে ৫ হাজার ২০০ জন হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। গত ২৯ এপ্রিল থেকে হজযাত্রা শুরু হয়েছে।