শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনকে অপসারণ করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশে তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকেও অপসারণ করা হয়েছে।

আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ড.

শুচিতা শারমিনকে তাঁর আগের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া উপ-উপাচার্যকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোষাধ্যক্ষকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের আগের কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে। 

এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের পর আমরণ অনশন ভেঙেছেন ১২ শিক্ষার্থী। তিন শীর্ষ পদধারীকে অপসারণের খবরে রাতে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন তারা।

সোমবার রাতে ঢাকায় অবস্থানরত অপসারিত উপাচার্য ফেসবুক লাইভে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। বিশেষ করে ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সম্মান শেষ বর্ষের ছাত্রী জেবুন্নেছা জিমি আবেদন করার পরও অর্থ সাহায্য না পাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই ছাত্রী কিছুদিন আগে মারা গেছেন। পরে উপাচার্যের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাত ১২টার দিকে আন্দোলনকারী ১২ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। 

এদিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস-সংলগ্ন ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই মহাসড়ক। অবরোধের ফলে দুই প্রান্তে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলাম। দাবি মেনে নিতে সোমবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেই। কিন্তু ভিসি বহাল থাকার জন্য বিভিন্ন অপতৎপরতা চালান। তা রুখে দিতে সোমবার মধ্যরাতে আমাদের ভাইয়েরা আমরণ অনশন শুরু করেন।’ 

গত ২৩ সেপ্টেম্বর উপাচার্য পদে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন। উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে এ পদে আট মাসও টিকতে পারলেন না তিনি।
গত ২২ এপ্রিল চার দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সেসব দাবি পূরণ না হওয়ায় ৪ মে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে নামেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বব উপ চ র য উপ উপ চ র য অপস র

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সংবাদ সম্মেলনে তারা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১–এর নিচে তারা আমরণ অনশন শুরু করে।

এর আগে গতকাল বেলা দুইটায় উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করা না হলে দক্ষিণবঙ্গকে অচল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিংকার্স’– এ রাত ১০টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ঘোষণা দেন উপাচার্য শুচিতা শরমিন। তাঁর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে গত রাতে আকস্মিক সংবাদ সম্মেলন করে আমরণ অনশন শুরুর ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করার সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে। টানা ২৮ দিন আন্দোলন চালিয়েও যাঁকে পাওয়া যায়নি, তাঁর সঙ্গে আর কোনো আলোচনার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনবরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম১৮ ঘণ্টা আগে

শিক্ষার্থীদের পক্ষে আন্দোলনরত নেতা সুজয় শুভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘যতক্ষণ না আমাদের প্রাণের দাবি উপাচার্য শুচিতা শরমিনের পদত্যাগ পূরণ হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আমরণ অনশনে বসে থাকবে। প্রয়োজনে প্রাণের বিনিময়েও আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করব।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষকে এই ন্যায্য আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

আরও পড়ুনউপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবার একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা, একাংশের শিক্ষকদের সংহতি০৮ মে ২০২৫

অনশনরত শিক্ষার্থী ইমন হাওলাদার বলেন, ‘উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিকে কেন্দ্র করে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। এরপরও যদি উপাচার্য গদিতে বসতে চান, তবে আমাদের রক্তের ওপর দিয়েই বসতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের এক দফা বাস্তবায়িত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন চলমান থাকবে।’

উপাচার্যের পদত্যাগে দেওয়া ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা আজ মঙ্গলবার দুইটায় শেষ হবে। এরপর পরবর্তী ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন