ববির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ
Published: 13th, May 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনকে অপসারণ করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশে তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকেও অপসারণ করা হয়েছে।
আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ড.
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের পর আমরণ অনশন ভেঙেছেন ১২ শিক্ষার্থী। তিন শীর্ষ পদধারীকে অপসারণের খবরে রাতে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন তারা।
সোমবার রাতে ঢাকায় অবস্থানরত অপসারিত উপাচার্য ফেসবুক লাইভে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। বিশেষ করে ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সম্মান শেষ বর্ষের ছাত্রী জেবুন্নেছা জিমি আবেদন করার পরও অর্থ সাহায্য না পাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই ছাত্রী কিছুদিন আগে মারা গেছেন। পরে উপাচার্যের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাত ১২টার দিকে আন্দোলনকারী ১২ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন।
এদিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস-সংলগ্ন ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই মহাসড়ক। অবরোধের ফলে দুই প্রান্তে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলাম। দাবি মেনে নিতে সোমবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেই। কিন্তু ভিসি বহাল থাকার জন্য বিভিন্ন অপতৎপরতা চালান। তা রুখে দিতে সোমবার মধ্যরাতে আমাদের ভাইয়েরা আমরণ অনশন শুরু করেন।’
গত ২৩ সেপ্টেম্বর উপাচার্য পদে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন। উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে এ পদে আট মাসও টিকতে পারলেন না তিনি।
গত ২২ এপ্রিল চার দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সেসব দাবি পূরণ না হওয়ায় ৪ মে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে নামেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বব উপ চ র য উপ উপ চ র য অপস র
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুদের মাছ খাওয়া কেন জরুরি
মাছের পুষ্টিগুণ
সাদা মাছে প্রোটিন বেশি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম। বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। তৈলাক্ত মাছে আছে ইপিএ ও ডিএইচএ। এই দুটি ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। এ ছাড়া থাকে ভিটামিন ডি, যা হাড়, পেশি ও দাঁতে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
মাছ মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। মাছের ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যামন, ইলিশ, পাঙাশের মতো সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি আছে। ভিটামিন ডি শিশুদের শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়াতে সাহায্য করে। শক্তিশালী হাড়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম।
এ ছাড়া মাছ সেলেনিয়াম ও আয়োডিনসমৃদ্ধ, যা শিশুর থাইরয়েড গ্রন্থির বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুকে মাছ খাওয়াবেন কীভাবেঅনেক শিশু মাছ খেতে চায় না। এ জন্য অনেক সময় অভিভাবকেরা দায়ী। বেশির ভাগ অভিভাবক ‘আমার বাচ্চা মাছ খায় না’ বলে মাংসকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। যেকোনো নতুন খাবার অভ্যস্ত করার সময় দেখতে হবে শিশুটি ভালোভাবে গ্রহণ করছে কি না, অ্যালার্জির কোনো প্রতিক্রিয়া কিংবা বদহজম হচ্ছে কি না। একসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মাছ না খাইয়ে একেকটি করে খাওয়াবেন ও অভ্যস্ত করবেন। বলা হয় যে একটি নতুন খাবার গ্রহণ করতে শিশুদের কমপক্ষে ১৫ বার পর্যন্ত চেষ্টা করতে হয়। বাবা–মাকে ধৈর্যসহকারে অবিচল থাকতে হবে।
● তেলাপিয়া, ডোরি, স্যামন–জাতীয় মাছ ফিশ স্টিক, ফিশ টাকো, ফিশ ফিঙার বা সস দিয়ে বেকড ফিশ করে খাওয়াতে পারেন।
● রঙিন শাকসবজি দিয়ে মাছ পরিবেশন করুন।
● রান্নার পদ্ধতি পরিবর্তন করে খাওয়াতে পারেন। যেমন ভাপে রান্না করে ভর্তা করে, ভাজা বা গ্রিলের ওপর ভাজা। মাছের মুচমুচে ফ্রাই বা গ্রিল।
● মাছে কাঁটা থাকে বলে শিশুরা খেতে চায় না। কাঁটা বেছে চপ বা কাবাব, কোফতা, নাগেট করে দিন।
● কোন মাছের কী পুষ্টিগুণ, কোন মাছ শক্তিশালী, কোন মাছ খেলে বুদ্ধি বাড়ে, হাড্ডি শক্ত হয় এগুলো ছবির বই দিয়ে বুঝিয়ে বলুন। তাহলে মাছ গ্রহণ করতে উৎসাহী হবে।
● পাস্তা, নুডলস, স্যান্ডউইচ বা সালাদে টুনা বা চিংড়ি মাছ দিতে পারেন।
সতর্কতা● মাছ রান্না করার আগে ভালো করে পরিষ্কার করে নেবেন।
● উচ্চ পারদের পরিমাণ আছে, এমন মাছ খাওয়াবেন না। এমন মাছ শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। কিডনি ও ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
● শেলফিশে মিথাইল মার্কারি এবং অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
● বাচ্চাকে টিনজাত মাছ খাওয়ানো উচিত নয়। কারণ, এতে উচ্চ পরিমাণে প্রিজারভেটিভ থাকে। চিংড়ি বা সামুদ্রিক মাছে অ্যালার্জি
হতে পারে।
গবেষকেরা সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার সামুদ্রিক মাছ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সপ্তাহে একবার পরিবেশন করলে এতে ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম ওমেগা–থ্রির চাহিদা পূরণ হয়।
লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর