চট্টগ্রামে ২৭ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইনজীবীর মামলা
Published: 14th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামে ককটেল ছুড়ে হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে ২৭ সাংবাদিকসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি মামলা করেছেন এক আইনজীবী। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি করেন আইনজীবী রেজাউল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার প্রমুখ।
মামলায় বলা হয়েছে, ১ মে সকালে তিনি বাসা থেকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কাজীর দেউড়ি কার্যালয়ে মে দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে কিছু মানুষ এক যুবককে মারধর করছে দেখে তিনি এগিয়ে যান। তখন আসামিরা তাঁকে বৈষম্যবিরোধী মামলা দায়ের কেন করেছিস, তুই রাজাকার ইত্যাদি বলে মারধর করেন। এক পর্যায়ে ককটেল ছুড়লে তাঁর দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় তাঁর পকেট থেকে ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন আসামিরা।
এদিকে সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করে এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, ওই আইনজীবী গত ৩০ এপ্রিল নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের অনুষ্ঠান প্রতিহত করার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত ১ মে আনোয়ারা পারকি সৈকতে ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল। ঘোষণার পরদিন ১ মে সকালে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ গেটের সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিন সাংবাদিক আহত হয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন রেজাউল ইসলাম ও তাঁর সঙ্গে থাকা কোরবান আলীকে আটক করে পুলিশে দেন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে বানোয়াট মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি, শুনানি ২৫ আগস্ট
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার মামলায় বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। আজ রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ আংশিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমান গত ১ জুলাই সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে চট্টগ্রাম আদালতে অভিযোগপত্রটি জমা দেন। এর আগে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মে আদালত চিন্ময় দাসকে আইনজীবী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখান।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আইনজীবী হত্যা মামলায় চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, এক আসামির জবানবন্দিতে সুকান্ত নামের এক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা উঠে এলেও সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ার কারণে তাঁকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্রসহ আটটি মামলা রয়েছে। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে মৌখিকভাবে রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি জানানোর পর আদালত ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
এদিকে আজ চিন্ময়কে আদালতে হাজির করা হয়নি। তবে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, চিন্ময়ের উসকানি ও নির্দেশে আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।