চট্টগ্রামে ককটেল ছুড়ে হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে ২৭ সাংবাদিকসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি মামলা করেছেন এক আইনজীবী। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি করেন আইনজীবী রেজাউল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার প্রমুখ।
 
মামলায় বলা হয়েছে, ১ মে সকালে তিনি বাসা থেকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কাজীর দেউড়ি কার্যালয়ে মে দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে কিছু মানুষ এক যুবককে মারধর করছে দেখে তিনি এগিয়ে যান। তখন আসামিরা তাঁকে বৈষম্যবিরোধী মামলা দায়ের কেন করেছিস, তুই রাজাকার ইত্যাদি বলে মারধর করেন। এক পর্যায়ে ককটেল ছুড়লে তাঁর দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় তাঁর পকেট থেকে ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন আসামিরা।  

এদিকে সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করে এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, ওই আইনজীবী গত ৩০ এপ্রিল নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের অনুষ্ঠান প্রতিহত করার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত ১ মে আনোয়ারা পারকি সৈকতে ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল। ঘোষণার পরদিন ১ মে সকালে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ গেটের সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিন সাংবাদিক আহত হয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন রেজাউল ইসলাম ও তাঁর সঙ্গে থাকা কোরবান আলীকে আটক করে পুলিশে দেন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে বানোয়াট মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা। 

মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ