চার মাসে পল্লী বিদ্যুতের ৪০০০ কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
Published: 14th, May 2025 GMT
গত চার মাসে প্রায় চার হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতি, বদলিসহ নানান হয়রানিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পল্লী বিদ্যুৎ এসোসিয়েশন (বাপবিএ)। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করা হয়।
এতে বলা হয়, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) বিনা নোটিশে ২৯ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে। পাশাপাশি মামলা, রিমান্ড, গ্রেপ্তার, বরখাস্ত, দূরবর্তী স্থানে বদলির শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এরমধ্যে হয়রানিমূলক বদলির শিকার ৪ হাজার ১১৮ জন। তারা হলেন– লাইনক্রু প্রায় ৬৭৩ জন, জুনিয়র প্রকৌশলী ৫৮৯ জন, ইনফোর্সেমন্ট কর্ডিনেটর (ইসি) ২৯০ জন, পাওয়ার ইউজ কর্ডিনেটর পিউসি ১২১ জন, বিলিং সুপারভাইজার ৩০৮ জন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক ৫৮০ জন, উপমহাব্যবস্থাপক ১৭৯ জন, সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক ৩৬ জন ও অন্যান্য ৯০৭ জন। সর্বশেষ গতকাল রাতে ৪৩৫ লাইন টেকনিশিয়ানকে বদলি করা হয়।
ভুক্তভোগীদের দাবি, পল্লী বিদ্যুতে সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে আন্দোলনের অজুহাতে বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে শাস্তিমূলকভাবে এই বদলি করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা অভিযোগ করেন, আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং সকল অনিয়মিতদের নিয়মিত করার দাবিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তারা আন্দোলন করে আসছেন। দাবির প্রেক্ষিতে সরকারও বিভিন্ন সময় কমিটি গঠনসহ নানা পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু সরকারের নেওয়া সংস্কার পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে আরইইবি সবসময় নানা প্রহসনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে।
তারা বলেন, ঝড় বৃষ্টির মৌসুমে বিদ্যুৎ কর্মীদের এমন গণবদলি নজিরবিহীন এবং চরম অমানবিক। তারা আরও বলেন, সমিতিতে এমনিতেই ব্যাপক জনবলের ঘাটতি রয়েছে। স্বল্প জনবল দিয়ে যেখানে কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টিতে ও তীব্র তাপদাহে বিদ্যুৎ সেবা চালু রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেখানে এই ধরনের গণ-বদলির কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহক সেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়া শঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
নেতারা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের ও সংযুক্ত এবং সাময়িক বরখাস্তদের স্বপদে বহালসহ বিশেষজ্ঞ কমিটির পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবসর বদল ব যবস থ পদক ষ প
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞার খবরে হাঁকডাকে মুখর চাঁদপুরে ইলিশের বাজার
ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এই বিধি-নিষেধ। এ সময় মাছ আহরণ, বিপণন, মজুত ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে।
নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে চাঁদপুরের মাছের আড়তগুলো হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠেছে। মাছ ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের পদ্মার ইলিশ ৩৫০০ থেকে ৪০০০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেদের আগ্রাসন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) চাঁদপুর শহরের বড়ষ্টেশন মাছঘাটসহ আশপাশের বাজারগুলোতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ক্রেতারা জানান, আগামী ২২দিন মাছ আসবে না। বরফ কল সব বন্ধ থাকবে। এ কারণে দাম যাই হোক সাধ্যমতো ইলিশ কিনে রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের অভিযোগ, মাছের চেয়ে ক্রেতা বেশি হওয়ায় লাগামহীন দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা ।
রফিক নামে এক ইলিশ ক্রেতা বলেন, “আমি চরভৈরবী, আনন্দ বাজার, আখনের হাটসহ কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখেছি, পদ্মা-মেঘনার ইলিশ একেবারেই নেই। যা আছে তার দাম নাগালের বাইরে। এখন বড়ষ্টেশনে এসে হাতিয়া, রামগতির ছোট সাইজের ইলিশ দেখছি। এগুলোর দাম অনেক হওয়ায় নিতে পারছি না। শুধু ইলিশই নয়, বরং ইলিশের ডিমের দামও বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। তাই ইলিশ বা তার ডিম কেনা হচ্ছে না।”
হরিণা ঘাটের খুচরা ইলিশ বিক্রেতা আইয়ুব আলী বলেন, “গত কয়েকদিন ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে ছোট সাইজের ইলিশ প্রতিহালি (২০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ২ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ওজনের প্রতিকেজি পদ্মার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ হাজার টাকায়।”
হরিণা মাছ ঘাটের প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ছৈয়াল বলেন, “এবার মৌসুমে কম-বেশি ইলিশ পাওয়া গেছে। তাজা ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় দাম কমেনি। বড় সাইজের ইলিশের চাহিদা দেশজুড়ে। যারা অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করেন তাদের অনেকে এখান থেকে ইলিশ নিতে ভিড় জমিয়েছেন।”
চাঁদপুর সদরের জ্যৈষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, “চলতি বছরে জাটকা রক্ষায় প্রশাসন কঠোর ছিল। ফলে জেলেরা বড় সাইজের ইলিশ পাচ্ছেন। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার খবরে বাজারে ইলিশের দাম অনেক বেশি রাখার যে অভিযোগ উঠেছে তা তদারকি করা হবে।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ