হার্ভার্ডের রাশিয়ান বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে জীবজ সামগ্রী পাচারের অভিযোগ
Published: 15th, May 2025 GMT
রাশিয়ায় জন্ম নেওয়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কসেনিয়া পেত্রোভা’র বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে জীবজ সামগ্রী চোরাচালানের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা এই মামলায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার আটকাদেশ ঘিরে আইনি ও নাগরিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেছেন, ৩০ বছর বয়সী পেত্রোভা ১৬ ফেব্রুয়ারি প্যারিস থেকে বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় লাগেজে সংরক্ষিত ব্যাঙের ভ্রূণ ঘোষণা না দিয়ে শুল্ক আইন লঙ্ঘন করেছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে পণ্য চোরাচালানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই সপ্তাহে সিলমোহরযুক্তভাবে দাখিল এবং বুধবার প্রকাশিত একটি অপরাধমূলক অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনের (সিবিপি) একটি কুকুর পেত্রোভার ডাফেল ব্যাগে তল্লাশির জন্য সংকেত দেয়। পরে ব্যাগে ব্যাঙের ভ্রূণ, প্যারাফিন স্লাইড ও অন্যান্য নমুনা পাওয়া যায়।
প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদে পেত্রোভা ‘কোনো জীবজ সামগ্রী বহনের কথা অস্বীকার করেন’ বলে হলফনামায় উল্লেখ আছে। তবে তার ফোনে থাকা একটি বার্তা দেখানো হলে, যেখানে লেখা ছিল ‘বোস্টনের কাস্টমসে টিএসএ আমার ব্যাগ ঘাঁটাঘাঁটি করেছে, তাই নিশ্চিত হও যে অনুমতিপত্রটা নিও, আমি লিওনের গ্রুপ চ্যাটে ব্যাঙের ভ্রূণ নিয়ে একটা লিংক পাঠিয়েছিলাম’। তখন নমুনাগুলো থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, ‘নিশ্চিত ছিলেন না’ যে এসব ঘোষণা করা প্রয়োজন।
তবে পেত্রোভা ঘটনাটি ভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি লুইজিয়ানার ডিটেনশন সেন্টার থেকে এনবিসি নিউজকে বলেন, তারা জিজ্ঞেস করেছিল আমার লাগেজে কোনো জীবজ নমুনা আছে কিনা। আমি বলেছিলাম, হ্যাঁ আছে। শুল্ক প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে পড়ার কথা জানান তিনি। ‘কেউ জানত না আমার সঙ্গে কী হচ্ছে। আমি কোনোভাবেই কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি, না আমার আইনজীবীর সঙ্গে, না লিওনের সঙ্গে, না কারও সঙ্গে।’ বলেন তিনি। লিওন পেশকিন হচ্ছেন হার্ভার্ডের সিস্টেমস বায়োলজি বিভাগের প্রধান গবেষণা বিজ্ঞানী এবং পেত্রোভার গবেষণা পরিচালক। তিনি বলেন, ‘পরের দিন তারা কিছুই বলেনি আমার কী হবে। আমি শুধু সেলে বসে অপেক্ষা করছিলাম।’
আদালত দলিলে বলা হয়েছে, পেত্রোভা কাস্টমস কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন, তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন এবং সেখানে ফেরার ব্যাপারে ভীত। তিনি ফ্রান্সে যেতে চেয়েছিলেন, যেখানে তার বৈধ শেঞ্জেন ভিসা ছিল। কিন্তু তাকে সেখান না পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট হেফাজতে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি লুইজিয়ানার মনরোর রিচউড সংশোধনাগারে আটক রয়েছেন।
মঙ্গলবার ভারমন্টের ফেডারেল আদালতে একটি হ্যাবিয়াস শুনানিতে মার্কিন জেলা জজ ক্রিস্টিনা রেইস সরকারের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘একজন কাস্টমস কর্মকর্তা কীভাবে নিজ সিদ্ধান্তে ভিসা বাতিল করতে পারেন? এখানে তো কোনো কাস্টমস লঙ্ঘনের বিষয় দেখছি না।’
পেত্রোভার আইনজীবী গ্রেগরি রোমানোভস্কি যুক্তি দেন, সরকার তার ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কাজ করেছে। ‘এখানে কোনো অনুপ্রবেশ অযোগ্যতার ভিত্তি নেই। শুধু কাস্টমস লঙ্ঘনের কারণে কাউকে অনুপ্রবেশ অযোগ্য ঘোষণা করা যায় না’ তিনি বলেন। রোমানোভস্কি আরও বলেন, তিনি প্যারিস যেতে প্রস্তুত ছিলেন, কিন্তু সরকার তাকে যেতে দেয়নি। জজ রেইস ২৮ মে প্রাথমিক জামিন শুনানির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ক স টমস কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির করা মামলায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান আজ শনিবার এই আদেশ দেন।
বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হাতিরঝিল থানা থেকে হিরো আলমকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় তাঁকে সিএমএম আদালতের ৯তলার এজলাসে নেওয়া হয়।
হিরো আলমের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ২০০ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে হিরো আলমের মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন এই মামলার বাদী রিয়া মনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিরো আলমের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আমাকে যেমন বিনা কারণে জেল খাটিয়েছে, তারও জেলে থাকা উচিত।’
এর আগে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকা থেকে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত হিরো আলম ও তাঁর সহযোগী আহসান হাবিব সেলিমের বিরুদ্ধে ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুসারেই হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৩ জুন হাতিরঝিল থানায় রিয়া মনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হিরো আলম ও বাদী রিয়া মনির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এরপর হিরো আলম বাদীকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। গত ২১ জুন বাদীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসার কথা বলে হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় একটি বাসায় ডাকা হয়। ওই সময়ে হিরো আলমসহ ১০ থেকে ১২ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তাঁরা বাদীর বর্তমান বাসায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। এতে বাদীর শরীরে জখম হয়। এ সময় তাঁর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের হার চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুনরিয়া মনির মামলায় হিরো আলম গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগে