বিশ্বখ্যাত আইসক্রিম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেন অ্যান্ড জেরির সহপ্রতিষ্ঠাতা বেন কোহেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মার্কিন সিনেটের শুনানিতে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে তিনি গ্রেপ্তার হন। একই অভিযোগে কোহেনের পাশাপাশি আরও ছয় বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেটে ফেডারেল স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর পুনর্গঠন নিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।

কোহেনকে পুলিশ যখন নিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি বলেন, ‘বোমা কেনার মধ্য দিয়ে গাজার নিরীহ শিশুদের হত্যা করছে কংগ্রেস। আর এর খরচ মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি স্বাস্থ্যবীমা কর্মসূচির আওতা থেকে শিশুদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।’

বেন কোহেন ও বেন অ্যান্ড জেরির আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা জেরি গ্রিনফিল্ড তাঁদের প্রগতিশীল আন্দোলনের জন্য সুপরিচিত। তাঁরা গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই সাতজনের বিরুদ্ধে জটলা করা, প্রতিবন্ধকতা বা বিঘ্নতা তৈরি এবং এক পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা এবং গ্রেপ্তার এড়ানোর চেষ্টা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, বেন কোহেনের বিরুদ্ধে শুধু ‘জটলা করা, প্রতিবন্ধকতা বা বিঘ্নতা সৃষ্টির’ অভিযোগ করা হয়েছে। এগুলো লঘু অপরাধ। এই অভিযোগে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জেল বা ৫০০ ডলার জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হতে পারে।

বেন কোহেন ও বেন অ্যান্ড জেরির আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা জেরি গ্রিনফিল্ড তাঁদের প্রগতিশীল আন্দোলনের জন্য সুপরিচিত। তাঁরা গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার।

কোহেনকে পুলিশ যখন নিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি বলেন, ‘বোমা কেনার মধ্য দিয়ে গাজার নিরীহ শিশুদের হত্যা করছে কংগ্রেস। আর এর খরচ মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচির আওতা থেকে শিশুদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।’

চলতি মাসের শুরুতে ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক টাকার কার্লসনকে সাক্ষাৎকার দেন কোহেন। মার্কিন এ ইহুদি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এমন এক ‘অদ্ভুত সম্পর্ক’ আছে, যার খাতিরে জাতি হত্যা চালাতে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে ওয়াশিংটন।’

কোহেন বলেন, ‘এ মুহূর্তে, মার্কিন হওয়ার মানে হলো আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র রপ্তানিকারক। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনী আছে। আমরা গাজায় মানুষের হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করি। যে কেউ গাজায় মানুষের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, আমরা তাদের গ্রেপ্তার করি। আমাদের দেশ তাহলে কিসের জন্য আছে?’

২০২১ সালে বেন অ্যান্ড জেরি ঘোষণা দেয়, তারা তাদের ইসরায়েলি লাইসেন্সধারীকে পশ্চিম তীর এবং গাজায় আর আইসক্রিম বিক্রি করতে দেবে না। কারণ, সেটি তাদের মূল্যবোধের সঙ্গে ‘সংগতিপূর্ণ নয়’।

আরও পড়ুনইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা০৪ মে ২০২৪আরও পড়ুনভিয়েতনাম যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ ২৯ এপ্রিল ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র র হত য র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ