দেখতে চাইলে দেখো, না চাইলে চোখ ফিরিয়ে নাও: ফ্লোরেন্স পিউ
Published: 15th, May 2025 GMT
অনেক বছর আগের কথা। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড শহরে শিশিরভেজা জানালার পাশে বসে এক ছোট্ট মেয়ে গুনগুন করে গান গাইছিল। তার গলায় ছিল অদ্ভুত এক সুর। তখন কেউ কল্পনাও করেনি, মেয়েটি একদিন হলিউডের আলো ঝলমলে দুনিয়ায় এসে দাঁড়াবে এবং এমনভাবে দাঁড়াবে যেন সে কখনও নতুন ছিল না; বরং সবসময়ই এ জায়গার জন্যই তৈরি ছিল। মেয়েটি আর কেউ নন এ সময়ের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেত্রী ফ্লোরেন্স পিউ।
২০১৪ সালে তাঁকে প্রথম দেখা যায় ‘দ্য ফলিং’ সিনেমায়। সেই ফ্লোরেন্স অভিনয় করেছিলেন ছোট্ট এক চরিত্রে। তখন তাঁকে দেখে অনেকে বলেছিল, ‘এত পরিণত কীভাবে সম্ভব?’
ফ্লোরেন্সের ক্যারিয়ারে সত্যিকার আলো এসে পড়ে ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘লেডি ম্যাকবেথ’ সিনেমার মাধ্যমে। এ ছবির মাধ্যমে পুরো বিশ্বে নজর কাড়েন ফ্লোরেন্স। এক নিঃস্ব নারীর বিদ্রোহ, প্রেম আর অপরাধের মাঝে ডুবে থাকা এ গল্পে ফ্লোরেন্স যেন চরিত্রটিকে নিজের ভেতরে টেনে নিয়েছিলেন। ছবিটির জন্য ব্রিটিশ ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডও জেতেন। এরপর টেলিভিশন সিনেমা ‘কিং লিয়ার’ ও মিনি সিরিজ ‘দ্য লিটল ড্রামার গার্ল’ দিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে সমালোচকদের সমীহ আদায় করে নেন। পরেরটির জন্য বাফটায় সেরা নবাগত তারকার মনোনয়নও পান। ফ্লোরেন্সকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৯ সাল ছিল ফ্লোরেন্সের উজ্জ্বলতম বছর।
ফ্লোরেন্স পিউ। ছবি: ইন্সটাগ্রাম
২০১৯ সালে তিনি ‘ফাইটিং উইথ মাই ফ্যামিলি’ সিনেমার জন্য রেসলার হলেন, ‘মিডসোমার’-এ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত প্রেমিকা হলেন আর সাহসী ‘এমি মার্চ’ রূপে হাজির হলেন ‘লিটল ওম্যান’-এ। একই বছরে তিনটি আলাদা ঘরানার তিন চরিত্র এবং তিনবারই একেবারে নিখুঁত। ‘এমি’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি অস্কার মনোনয়ন পেলেন, আর ‘মিডসোমার’-এ তাঁর কান্না দর্শক হৃদয়ে কাঁপন ধরিয়ে দিল। তারপরে এল মার্ভেলের ‘ব্ল্যাক উইডো’।
এ সিনেমায় যখন ফ্লোরেন্স এলেন ‘ইলেনা’ হয়ে, তখনই বোঝা গেল ফ্লোরেন্স কেবল শিল্প ঘরানার অভিনেত্রী নন, বড় মঞ্চের পারফরমারও। তাঁর সংলাপে যেমন রসবোধ, তেমনি চোখে ছিল হারানোর ভয়। ‘সুপারহিরো’ চরিত্রকে তিনি মানবিক করে তুললেন। ফ্লোরেন্সের সবচেয়ে বড় শক্তি, তিনি নিজেকে কোনো ছাঁচে ফেলতে রাজি নন।
যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর শরীর নিয়ে কটাক্ষ হলো, তখন তিনি সোজাসুজি বললেন, ‘আমি যেমন আছি, তেমনটাই সুন্দর। তুমি দেখতে চাইলে দেখো, না চাইলে চোখ ফিরিয়ে নাও। আমি বদলাবো না।’ এমন নির্ভীক কণ্ঠস্বরের কারণে বলা যায় ফ্লোরেন্স পিউ কেবল একজন অভিনেত্রী নন; বরং নতুন প্রজন্মের সাহসী, সৃজনশীল ও আত্মবিশ্বাসী নারীর প্রতিচ্ছবি।
ফ্লোরেন্স পিউ। ছবি: এন্টারটেইনমেন্ট টু-নাইট
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এ অভিনেত্রীর ‘থান্ডারবোল্টস’। আগের ‘ব্ল্যাক উইডো’ সিনেমায় তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। এবার যেন তিনি আরও পরিণত হয়েছেন। তাঁর চরিত্রে যেমন আছে হাস্যরস, ঠিক তেমনি যন্ত্রণার ছাপ। এখন ফ্লোরেন্সের বয়স ২৯, সামনে আরও দীর্ঘ পথ। তবু মনে হয়, তিনি যেন বহু পথ পেরিয়ে এসেছেন। তাঁর প্রতিটি চরিত্রে থাকে অভিজ্ঞতার গন্ধ, থাকে আবেগের ছাপ। অভিনয় তাঁর কাছে পেশা নয়; বরং আত্মার অভিব্যক্তি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল