ইয়ামাল: সুন্দরের প্রতিশ্রুতিতে যার জন্ম
Published: 16th, May 2025 GMT
লামিন ইয়ামালের বাবা মৌনির নাসরাউইর করুণ দিন কেটেছে। হাত বাড়িয়ে নেওয়া সাহায্যের প্রতিদানে ‘আল্লাহ আপনার ভালো করুন’ বলা ভিন্ন উপায় ছিল না। ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন। সংসারে অভাব। শোধ করতে পারেন না দায়, দেনা। স্ত্রীও সন্তানসম্ভবা। দুই ব্যক্তি সেই দুর্দিনে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। বিনিময়ে সুন্দর এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মৌনির, ‘আল্লাহ আমার সন্তান দিলে আপনাদের নামে নাম রাখব।’ সেই লামিন আর ইয়ামালের নাম মিলিয়ে ফুটবল বিশ্বের আজকের বিস্ময় লামিন ইয়ামালের জন্ম। আরবিতে লামিনের অর্থ সৎ আর ইয়ামাল মানে সুন্দর।
নাম কিংবা নামের অর্থের মতো ফুটবল পায়ে ১৭ বছরেই শোভা ছড়াতে শুরু করেছেন ইয়ামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এস্পানিওয়েলের বিপক্ষে বার্সার ২-০ গোলের জয়ে চোখধাঁধানো এক গোল করেছেন তিনি। যোগ করা সময়ে গোলে সহায়তা দিয়েছেন। দুই ম্যাচ হাতে থাকতে বার্সাকে জিতিয়েছেন লা লিগা। চলতি মৌসুমে জিতেছেন তিনটি শিরোপা। ভক্তদের দিয়েছেন আরও কত শত আশা, ‘প্রিয় ভক্তরা, আমি আপনাদের একটা কথাই বলতে চাই, এটা সবে আমাদের শুরু। জিততে জিততে ক্লান্ত হয়ে পড়া অসম্ভব। এই বার্তা নিজের মধ্যে গেঁথে নিয়েছি।’
তরুণ এই ইয়ামালে এরই মধ্যে বেশ কিছু বার্সা কিংবদন্তির ছাপ মিলেছে। তাঁর পায়ে নাকি রোনালদিনহোর মতো বল নাচে। তিনি ড্রিবলিং আর টেকনিকে নাকি নেইমার জুনিয়রের ছাঁচে গড়া। বাঁ-পায়ের ছন্দে এক নতুন মেসি। তবে ১৮ বছরে পা রাখতে চলা ইয়ামাল এবার ছায়া ছেড়ে বৃক্ষ হতে চান। ১৭-এর গণ্ডিতেই জাতীয় দলের হয়ে ইউরো জিতেছেন তিনি। ক্লাবের হয়ে দুটি লা লিগা শিরোপার মালিক, সঙ্গে আছে সুপার কাপ ও কোপা দেল রে’র শিরোপা। ম্যাচ ও গোল সংখ্যায়, শিরোপার তালিকায় বয়সের হিসাবে মেসি ও রোনালদোর রেকর্ড ভেঙেছেন ইয়ামাল। নিজ নামেই যে তাঁর কলম ধরার সময়, ‘রোনালদিনহো, নেইমার, লিও মেসি… ! উদ্দেশ্য নিজের লক্ষ্য অর্জন করা। আমি আমার মতো হতে চাই। আমি আমার ইতিহাস লিখতে চাই।’
নামের মতো সৎ থেকে ইতিহাস লিখতে চান ইয়ামাল। হানসি ফ্লিকের অধীনে ১৭ বছরে এক মৌসুমে ১৭ গোলের সঙ্গে ১৬ গোল করিয়ে ব্যালন ডি’অরের অন্যতম দাবিদার বনে গেছেন তিনি। ১৫ বছর বয়সে জাভি হার্নান্দেজের অধীনে অভিষেক তাঁর। ২০২২-২৩ মৌসুমের লা লিগা চ্যাম্পিয়ন তিনি। জাভির অধীনে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে ব্যালন ডি’অরের তালিকায় নাম ওঠার কথাও ভুলতে চান না ইয়ামাল, ‘আমি জাভির কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁর সুনজর ছাড়া এসবের কিছুই ঘটত না।’
আগামী মৌসুমে ইয়ামালের ‘পুরুষ’ হওয়ার চ্যালেঞ্জ। পাঁচ শিরোপা জিতলেও বয়সের বেড়িতে সতীর্থদের সঙ্গে শ্যাম্পেইন হাতে উদযাপনের অনুমতি মেলেনি তাঁর। ঘরের বাইরে রাতভর উদযাপনের লাইসেন্স পাননি এখনও। বন্ধুর আবদারে নাইট ক্লাবে ঢুকতেও মানা। এমনকি সতীর্থ লেভানডভস্কি পর্যন্ত মাঠে গোল উদযাপনে দিয়েছেন শর্ত, ‘বয়স ১৮ বছর হতে হবে।’ ১৮ হলে অনেক কিছুর লাইসেন্স মিলবে ইয়ামালের। প্রতিপক্ষও পাবে নির্মম ট্যাকল, রুক্ষ দৃষ্টি আর কর্কশ ভাষা ব্যবহারের সুযোগ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো
কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।
এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।
ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।
এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।
এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস