এক কলসি পানির জন্য যেতে হয় দেড় কিলোমিটার
Published: 16th, May 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে বনঘেঁষা খলচন্দা গ্রামে ৫০টি কোচ পরিবারের পাঁচ শতাধিক সদস্যের বসবাস। শুকনো মৌসুমে এখানে পানির সংকট পুরোনো। এবার সেই সংকট আরও বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি ঘরে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার চলছে। পাহাড়ি টিলার ওপর একটি মাত্র গভীর নলকূপের পানিই তাদের ভরসা।
গ্রামের শেষ মাথায় পানি সংগ্রহে এসেছেন এ গ্রামের চিত্রা রানী কোচ। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘সারা গেরামে একটা টিউবয়েল। তাও বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। হেঁটে যেতে হয়। বৃদ্ধ বয়সে এ কষ্ট সহ্য হয় না।’
এ সময় চিত্রা রানীর সঙ্গে ছিলেন গ্রামের আরও কয়েকজন নারী। তারাও এসেছেন পানি নিতে। তারা জানান, পাহাড়ে প্রায় প্রতিটি ঘরে এখন বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির জন্য হাহাকার চলছে। গোসল, কাপড় ধোয়া, ও গৃহস্থালি কাজে বাড়ির পাশে চেল্লাখালী নদীর পানি ব্যাবহার করেন। বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ে নদীতে পানি থাকে না বললেই চলে। বৃষ্টির সময় আবার সেই পানি ঘোলাটে হয়ে যায়। গোসলই করা যায় না। খাওয়া দূরের কথা। পানির জন্য অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়।
শুধু চিত্রা রানি কোচ নয়, আদিবাসী অধ্যুষিত এ উপজেলার কালাপনি ও বুরুঙ্গা গ্রামের গারো, কোচ ও বানাই সম্প্রদায়ের সবার মুখে শুধুই পানি সংকটের কথা। পাহাড়ি উঁচুনিচু পথ বেয়ে পরিবারের সদস্যরা একবারে এক কলসি করে পানি আনতে পারেন। সেই পানি মেপে মেপে খরচ করতে হয় তাদের।
আদিবাসী অধ্যুষিত এ এলাকার কালাপনি ও বুরুঙ্গা গ্রামে ৪০ পরিবারের ৩০০ সদস্যের বসবাস। পানির জন্য চারটি মাটির কূপ তাদের ভরসা। কালাপনি গ্রামের সবিতা নকরেক বলেন, স্বামী, দুই ছেলে ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার। কূপের পানিতে গৃহস্থালির কাজ সারেন। খাওয়ার জন্য সকাল ও বিকেল টিলা খাল পাড়ি দিয়ে আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে গভীর নলকূপের পানি আনতে হয়। বর্ষাকালে বাধ্য হয়ে কূপের ঘোলা পানিই খেতে হয়।
উত্তর আন্ধারুপাড়া গ্রামের গৃহিণী জোসনা বেগম বলেন, ‘কল (অগভীর নলকূপ) আছে; কিন্তু কলে পানি নেই। ঘরের কাজে সবাই নদীর ময়লা পানি ব্যবহার করে। খাওয়ার জন্য এক কিলোমিটার দূর থাইকা পানি লইয়া আসি।’
এ গ্রামের কয়েকজন বলছেন, পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় মাটির নিচে পাথর; তাই নলকূপ স্থাপন করা যায় না। তবে সাবমার্সিবল বসানো সম্ভব। কিন্তু ত বসানোর সামর্থ্য তাদের নেই। এতে কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়। তাই শুষ্ক মৌসুমে গ্রামবাসীকে কূপের ময়লা পানির ওপরই নির্ভর করতে হয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূপুর আক্তার বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই সমস্যা প্রকট হচ্ছে। সংকট এলাকার চেয়ারম্যান আবেদন করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ন র জন য সদস য নলক প
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা (শুধু এমসিকিউ) আজ শনিবার (১৭ মে) অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টা থেকে ৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে পরীক্ষা। এ জন্য প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে সকল শিক্ষার্থী ১৭/০৫/২০২৫ তারিখের ‘ব্যবসায় শিক্ষা’ ইউনিটের ‘পুনঃ পরীক্ষার প্রবেশপত্র’ ডাউনলোড করেননি তাদের প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নতুন ডাউনলোডকৃত প্রবেশপত্র ছাড়া কোনোভাবেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে না।
আগামী ১৭ মে (শনিবার) বেলা ৩টা হতে ৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের বাণিজ্য শাখার পুনঃপরীক্ষা (শুধু এমসিকিউ অংশ) অনুষ্ঠিত হবে। শুধু গত ৮ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষায় উপস্থিত বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীরা লগইন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। পরীক্ষা পূর্ব নির্ধারিত অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুনকানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের আশ্রয় আবেদনে রেকর্ড, আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা২২ ঘণ্টা আগেগত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে (ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট, যা ‘গ’ ইউনিট নামে পরিচিত) চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২৪-২৫) প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তিতে এমসিকিউ পরীক্ষা হয় ৬০ নম্বরের আর লিখিত পরীক্ষা হয় ৪০ নম্বরে। তবে এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে একাধিক ভুলের অভিযোগ তুলে সুষ্ঠু ফলাফল প্রকাশে পুনরায় পরীক্ষার নেওয়ার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবরে আবেদন দেন ভর্তি-ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থী। এতে ফল না পেয়ে তিনি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ মার্চ হাইকোর্ট কয়েকটি বিষয়ে রুল দেন। রুলে এমসিকিউ পরীক্ষা পুনরায় নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ভর্তি কমিটির এক বিশেষ সভা গত ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে শুধু এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আদালতে আবেদন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর পুনরায় পরীক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে আদালতে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা: মডেল টেস্ট১৫ মে ২০২৫