ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলা অংশে অবাধে বিচরণ করছে অটোরিকশা, হ্যান্ডট্রলি ও ট্রাক্টর। এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে মহাসড়কের শৃঙ্খলা। হাইওয়ে পুলিশ সক্রিয় থাকলেও শুধু আইন দিয়ে বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য। যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করছেন চালকরা। রাস্তা পারাপারেও নিয়মনীতি মানছেন না পথচারীরা। এতে ব্যাহত হচ্ছে মহাসড়কের শৃঙ্খলা। ফলে তৈরি হচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। বাড়ছে যানজট। মহাসড়কে বেড়েছে অটোরিকশা, হ্যান্ডট্রলি ও ট্রাক্টরের আধিপত্য। অথচ মহাসড়কে চলাচলের অনুমোদন নেই এসব যানবাহনের।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন চালক জানান, মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলে হাইওয়ে পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে। ফলে অনেক সময় সড়কেই বিকল হয়ে পড়ে ফিটনেসবিহীন যান। তৈরি হয় যানজট। যানজট ছড়িয়ে পড়ে ৩০-৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তি পোহাতে হয় মহাসড়কে।
স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য যাত্রীদের নির্ভর করতে হয় লেগুনা অথবা ভাঙাচোরা মাইক্রোবাসের ওপর। ফলে মৃত্যুকে সঙ্গী করেই তাদের চলাফেরা করতে হয়। নির্দিষ্ট স্থান থাকলেও দেখা যায় যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করায়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না তারা। পণ্যবাহী যানবাহনও মহাসড়কের যত্রতত্র ফেলে রাখতে দেখা যায়।
মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলা অংশে রয়েছে ৪টি ফুট ওভারব্রিজ। এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের সুবিধার্থে। যাতে নিরাপদে রাস্তা পার হওয়া যায়। তবে এসব ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করে রাস্তা পারাপারে খুব একটা আগ্রহ নেই পথচারীদের। সরেজমিন দেখা গেল, যত্রতত্র ইচ্ছেমতো মহাসড়ক পারাপার হচ্ছেন অনেক পথচারী।
সম্প্রতি দাউদকান্দির গৌরীপুর অংশে ফুট ওভারব্রিজের নিচে সড়ক বিভাজনে তৈরি করা হয়েছে বেষ্টনী। ফলে সেখানে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন পথচারীরা। অন্যগুলোর নিচেও সড়ক বিভাজনে বেষ্টনী নির্মাণ করা জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন লোকজন।
নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি উপজেলা শাখার সভাপতি লিটন সরকার বাদলের ভাষ্য, মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও সক্রিয় হতে হবে। এর আগে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি হওয়া জরুরি। তিনি স্বীকার করেন, শুধু আইন দিয়ে অনিয়ম প্রতিরোধ সম্ভব নয়। প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা।
পরিবেশবিদ অধ্যাপক মতিন সৈকত বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই চলাফেরা করি। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, ছোট গাড়ির মহাসড়ক দখল, ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করায় আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি।’ 
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী জানান, গত ২৯ এপ্রিল এখানে যোগদান করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে অটোরিকশা, হ্যান্ডট্রলি, টাক্টরসহ ফিটনেসবিহীন প্রায় ১৫০টির মতো যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ উদক ন দ পথচ র

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ